নিউইয়র্ক: কৃষ্ণাঙ্গ তরুণ মাইকেল ব্রাউনের হত্যার সঙ্গে জড়িত পুলিশ কর্মকর্তার শাস্তির দাবিতে অবরোধ-বিক্ষোভে উত্তাল নিউইয়র্ক। দ্বিতীয় দিনেও (২৫ নভেম্বর) পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খায় পুলিশ।
বিক্ষোভকারীরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা ইস্ট রিভার আর হাডসন নদীতে চারদিক ঘেরা ছোট্ট ম্যানহাটনে প্রবেশের টানেল, ব্রিজ, ওয়েস্ট সাইড হাইওয়ে ও এফডিআর ড্রাইভ বন্ধ করে রেখেছে।
বিক্ষোভকারীদের কৌশলে নাস্তানাবুদ গোটা নিউইয়র্ক। দুটো কৌশলে চলছে বিক্ষোভ।
প্রথমত: ওয়ানওয়ে সড়কে যান চলাচলের বিপরীতমুখে মিছিল করছে বিক্ষোভকারীরা। এর দুটো অর্থ- এক. স্রোতের বিপরীতে দাঁড়ানো। দুই. যান চলাচল সহজেই রোধ করা।
দ্বিতীয় কৌশল হলো, বিক্ষোভকারীরা ঘন ঘন অবরোধের স্থান পরিবর্তন করছে। হঠাৎ করেই তারা শহরে প্রবেশের প্রধান প্রধান হাইওয়ে, টানেল ও ব্রিজে অবরোধ তৈরি করছে।
মঙ্গলবার লিংকন টানেল, মিডটাউন টানেল, কুইন্স বরো ব্রিজ, এফডিআর সড়কের বিভিন্ন স্থানে এই অবরোধ চলে। প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত অবধি এই অবরোধ চলছে।
ফিফথ এভিনিউ ও নাইনথ এভিনিউয়ে উল্টোপথে বিক্ষোভ মিছিল চলেছে।
এককথায় ফার্গুসনের আগুন বিক্ষোভ হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে সারা নিউইয়র্কে। লাগাতার অবরোধে বেকায়দায় পুরো নিউইয়র্ক সিটি ও জনজীবন।
উল্লেখ্য, গত সোমবারও ম্যানহাটনকে সিটির অন্য ৪টি বরো থেকে বিচ্ছিন্ন করতে রাতেই প্রথমে ট্রাই বরো ও ব্রুকলিন ব্রিজ বন্ধ করে দিতে শতশত বিক্ষুব্ধ জনতা ব্রিজগুলোতে ঢুকে পড়ে। এ সময় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
হাজারো বিক্ষোভকারী শহরের প্রধান সড়ক ৭ এভিনিউ ধরে মিছিল নিয়ে টাইম স্কয়ারে এসে অবস্থান নেয়। তাদের দাবি, ন্যায্যবিচার চাই।
মিজৌরির ফার্গুসনে নিরস্ত্র কৃষ্ণাঙ্গ তরুণ মাইকেল ব্রাউনকে সন্দেহবশত গুলি করে হত্যার অভিযোগে পুলিশ কর্মকর্তা ডেরেন উইলসনকে নির্দোষ রায় দিলেই সারা যুক্তরাষ্ট্র ক্ষোভে ফেটে পড়ে।
সংঘর্ষ, সহিংসতা, অগ্নিসংযোগসহ বহু হতাহতের ঘটনা ঘটে। নিউইয়র্কেও ছড়িয়ে পড়ে মিজৌরির সেই আগুনের তাপ।
গত সোমবার পুলিশ কমিশনারের গায়ে নকল রক্ত ঢেলে দেওয়ার অপরাধে এক তরুণ বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
রাত ৯টায় বিচারের রায় ঘোষণাকেও উদ্দেশ্যমূলক বলে অভিযোগ করে বিক্ষোভকারীরা।
এছাড়া গ্রান্ডজুরির ৯ সদস্যদের মধ্যে কৃষ্ণাঙ্গ ও শ্বেতাঙ্গ আমেরিকানদের সংখ্যার আনুপাতিক হার নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে বিক্ষোভকারীরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৪