নিউইয়র্ক : গ্রান্ড জুরির রায়ের প্রতিবাদে নিউইয়র্কে লক্ষাধিক লোকের সমাবেশ থেকে এবার উচ্চারিত হলো ‘নো জাস্টিস নো পিস’ ‘ন্যায় বিচার ছাড়া শান্তি আসবে না‘।
শনিবার নিউইয়র্কে নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটি সংলগ্ন ওয়াশিংটন স্কয়ার পার্কে লক্ষাধিক লোকের বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এ দাবি উচ্চারিত হয়।
‘মিলিয়ন পিপলস মার্চ’ কর্মসূচির এ বিক্ষোভ সমাবেশ ও ৠালিতে পুলিশের বলপ্রয়োগ গ্রেফতারিতে নিহত এরিক গার্নারের শেষ উক্তি ‘আই ক্যান্ট ব্রিদ’ ‘নো গান , ডোন্ট শ্যুট’ ‘হ্যান্ডস আপ ডোন্ট শ্যুট’সহ ‘ব্লাক লাইফ ম্যাটারস’ ইত্যাদি স্লোগানে প্রকম্পিত হয়েছে নিউইয়র্ক।
ওই সমাবেশে অন্যান্য দেশের অভিবাসীদের পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি নারী পুরুষসহ ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে আবাল বৃদ্ধবণিতা যোগ দেন। শিশুরাও আসে তাদের নানী-দাদী ও বাবা-মায়ের সাথে।
বিক্ষোভ সমাবেশের নেতৃত্ব দেন পুলিশের হাতে নিহত এরিক গার্নারের কন্যা এরিকা গার্নার।
সমাবেশে ১২ বছর বয়সী কন্যাকে নিয়ে যোগ দেয়া বাংলাদেশি চিকিৎসক মিস খান বাংলানিউজকে বলেন, তিনি তার মেয়েকে নিয়ে সাথে নিয়ে এসেছেন, কারণ সেও এ সমাজেই বেড়ে উঠছে। তার মনেও আশংকা রয়েছে একজন সংখ্যালঘু হিসেবে তার মেয়েটিও এই পরিস্থিতির শিকার হতে পারে। তাই পুলিশের অন্যায় আচরণের বিরুদ্ধে তিনি সোচ্চার। এছাড়া বাংলাদেশি হিসেবে এ বিক্ষোভে যোগ দিতে পেরে তিনি নিজেকে গর্বিত মনে করেন বলেও জানান বাংলানিউজকে।
সমাবেশ থেকে বিক্ষোভ ৠালিতে যোগ দেয়া নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্বেতাঙ্গ নারী বাংলানিউজকে বলেন, দেশের আইন ব্যবস্থা প্রায় ভেঙে পড়েছে। বিচার বিভাগের প্রতি মানুষ আস্থা হারাতে বসেছে। এ অবস্থা আর চলতে দেয়া যায় না। সে কারণেই এ বিক্ষোভে যোগ দেয়া।
এদিকে ‘ফেডারেল নাগরিক অধিকার তদন্তে’ ৩ মাসের সময়ের প্রয়োজনকে কৌশলে কালক্ষেপণ বলেও অভিযোগ করা হয়েছে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে।
শনিবার হিমাংকের নিচের তাপমাত্রাকে উপেক্ষা করে বিক্ষোভকারীরা সমবেত হন ওয়াশিংটন স্কয়ার পার্কে। দুপুর ১টায় ১৪ স্ট্রিট দিয়ে ৬ এভিনিউ ধরে ৩৪ স্ট্রিট ঘুরে ব্রডওয়ে ধরে ডাউন টাউন ম্যানহাটনের ওয়ালস্ট্রিটের ফ্রিডম স্কয়ারে গিয়ে শেষ হয় এ প্রতিবাদ ৠালি। এ সময় ম্যানহাটনে সৃষ্টি হয় অচলাবস্থার।
টুইটার প্রচারণায় সফলতা লাভ করে এই বিক্ষোভ কর্মসূচি। নিউইয়র্ক পুলিশও স্বীকার করেছে যে বিক্ষোভ সমাবেশে লক্ষাধিক লোকের সমাগমের কথা।
বিক্ষোভে ফার্গুসনে মাইকেল ব্রাউনসহ বিভিন্ন সময়ে পুলিশের হাতে নিহতদের নাম লেখা প্ল্যাকার্ডসহ বিভিন্ন স্লোগান লেখা ফেস্টুন বহন করেন বিক্ষোভকারীরা। এ সময় অনেকের মুখে ছিলো মুখোশ।
উল্লেখ্য, গেল গ্রীষ্মে নিউইয়র্ক সিটির স্ট্যাটেন আইল্যান্ডে কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকান এরিক গার্নারকে গ্রেফতারের সময় তাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার অভিযোগে পুলিশ কর্মকর্তা ডেনিয়েল প্যন্টালিওকে বেকসুর খালাস দেয় মার্কিন আদালতের গ্রান্ড জুরি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৪