নিউইয়র্ক: বাংলাদেশি অধ্যুষিত জ্যামাইকার হিলসাইড হাইস্কুল ক্যাম্পাসে দুই মুখোশধারীর অনুপ্রবেশের ঘটনায় বৃহস্পতিবার এক শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এ সময় বিপুল সংখ্যক পুলিশের উপস্থিতি এবং হেলিকপ্টার টহলে মুহূর্তেই হামলা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পুরো এলাকা জুড়ে।
পরে টানা প্রায় দুই ঘণ্টা পুলিশের সাঁড়াশি অভিযানের পর স্বস্তি ফিরে আসে এলাকাবাসীর মাঝে।
জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টার সংলগ্ন এই স্কুলের উন্মুক্ত মাঠেই প্রতিবছর ঈদের নামাজ আদায় করে থাকেন প্রবাসী বাঙালিরা।
এ ঘটনার পর বাংলানিউজ প্রতিবেদক সরেজমিন অনুসন্ধানে জানতে পারেন, পুরো ঘটনা ছিলো আসলে জ্যামাইকা স্কুলের ক’জন শিক্ষার্থীর লুকিয়ে স্কুলে প্রবেশের ঘটনার জের। ক্লাস ফাঁকি দেয়া ক’জন শিক্ষার্থী মুখ ঢেকে লুকিয়ে পেছনের দরজা দিয়ে প্রবেশ করছিলো। বিষয়টি সিসি ক্যামেরাতে স্কুলের প্রিন্সিপালের চোখে পড়ে। মুখোশ পরিহিত সন্ত্রাসী ভেবে যথারীতি পুলিশে খবর দেয়া হলে মুহূর্তেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পুরো এলাকায়। পুরো জ্যামাইকা এলাকা জুড়ে রেড এলার্ট জারি করে নিউইয়র্ক পুলিশ । মাথার উপরে চলে হেলিকপ্টার টহল। পুলিশি তৎপরতায় বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নেমে আসে। ধীরে ধীরে শিক্ষার্থীদের বের করে আনা হয়।
এ ঘটনার পর স্কুলের শিক্ষার্থীরা দলবদ্ধভাবে ক্যাম্পাস ও আশেপাশের এলাকায় চলা ফেরা করছে।
উল্লেখ্য, এই ক্যাম্পাসে মোট ৫টি বিষয় ভিত্তিক স্কুল রয়েছে। এখানে সন্ধ্যার পরও ক্লাস করেন শিক্ষার্থীরা। বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকায় হওয়ায় জ্যামাইকা হাইস্কুল ক্যাম্পাসে আমেরিকান-বাংলাদেশি অসংখ্য শিক্ষার্থী লেখাপড়া করে। এ দফায় তেমন কোনো দুর্ঘটনা না ঘটলেও পাকিস্তানের একটি স্কুলে জঙ্গি হামলার দৃষ্টান্ত থেকে স্কুলের এমন ঘটনায় চিন্তিত ও আতঙ্কগ্রস্ত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা। এছাড়া গত বছর এখানে গুলির ঘটনাও ঘটেছিল বলে জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
এই স্কুলের এক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানায়,ঘটনার সময় ক্লাসের মধ্যে প্রায় দুই ঘণ্টা আটকা পড়ে ছিলো সে। এ সময় তালাবদ্ধ করে দেয়া হয় স্কুলের প্রধান ফটক’সহ বিভিন্ন ক্লাসরুম।
কেবল ক্লাসরুমের দরজার লুকিং মিরর দিয়ে সে দেখে, ভারী অস্ত্রসস্ত্র সজ্জিত পুলিশের সরব উপস্থিতি। এ সময় ক্লাসে ক্লাসে সাঁড়াশি অনুসন্ধান চালায় পুলিশ। সাইফুল ইসলাম বাংলানিউজকে আরো জানায় , সিডনিসহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্থানে স্কুলে হামলার ঘটনার পর এখন স্কুলে আর পুরোপুরি নিরাপদ বোধ করছে না সে।
স্কুল সংলগ্ন জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের একজন খাদেম ডা. মাকসুদুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন ,এ ঘটনায় কোন নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারে। বরং পুলিশ যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে পুরো এলাকা জুড়ে।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৪