আটলান্টা (জর্জিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র): সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটি একটি সভায় জর্জিয়া আওয়ামী লীগের নেতাদের কাছে জর্জিয়া যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদনের কপি হস্তান্তর করেছে, এ মর্মে একটি খবর প্রচার হয়।
এরপর আটলান্টায় পৃথকভাবে গঠিত দুটি কমিটি যার যার অবস্থানে থেকে বৈধতা দাবি করে সরাসরি স্নায়ুযুদ্ধে নেমে পড়ে বলে জানা গেছে।
জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ কর্তৃক জর্জিয়া আওয়ামী লীগের ওপর সহযোগী সংগঠন জর্জিয়া যুবলীগকে সংগঠিত করার নির্দেশ দিলে জর্জিয়া আওয়ামী লীগের মনোনীত মোশারফ-সুমন আহ্বায়ক কমিটিকে অনুমোদন দেয় যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী যুবলীগ আহ্বায়ক কমিটি।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী যুবলীগের মেজবাহ নেতৃত্বাধীন পুরনো কমিটির অনুমোদনে জর্জিয়ায় আরো একটি কমিটি গঠিত হয়। নুরুল ইসলাম নাহিদকে সভাপতি ও ইলিয়াস হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করে এ কমিটি গঠিত হওয়ার খবর পাওয়া যায় সংগঠনটির আত্মপ্রকাশের মধ্য দিয়ে। ফলে আটলান্টায় আওয়ামী পরিবারের তরুণদের এ সংগঠনটি দৃশ্যত এখন দ্বিখণ্ডিত।
জানা যায়, জর্জিয়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ রহমান সম্প্রতি নিউইয়র্ক থেকে আটলান্টায় পৌঁছানোর পর পরই তার ফেসবুকে ওয়ালে যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদনের কপিসহ খবরটির পোস্ট দিয়েছিলেন। এরপর কোনো কোনো অনলাইন নিউজ পোর্টালেও খবরটি প্রকাশিত হয়।
এ ব্যাপারে জর্জিয়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ রহমান বলেন, সম্প্রতি আমি নিউইয়র্কে গেলে জর্জিয়া আওয়ামী যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদিত কমিটির তালিকা আমার হাতে তুলে দেন যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগের আহ্বায়ক এ.কে.এম. তারিকুল হায়দার চৌধুরী, যুগ্ম আহ্বায়ক বাহার খন্দকার সবুজ ও টিটু রহমান।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ জর্জিয়া আওয়ামী লীগকে সব সহযোগী সংগঠন পুনর্গঠনের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। এর মধ্যে একটি মহল দলের মধ্যে বিভেদ ছড়ানোর লক্ষ্যে জর্জিয়া থেকে নিউইয়র্কের সাবেক নেতাদের বিভ্রান্ত করেন। কমিটি গঠনের নিয়মনীতির ধারে-কাছে না গিয়ে একটি মনগড়া কমিটিও প্রকাশ করেন, যা কেউ মেনে নিতে পারেননি।
তবে সম্প্রতি জর্জিয়া যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদনের মধ্য দিয়ে জর্জিয়া যুবলীগ নিয়ে সব দ্বিধাদ্বন্দ্বের অবসান ঘটলো।
অন্যদিকে, মেজবাহ’র নেতৃত্বাধীন জর্জিয়া যুবলীগের সভাপতি নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ২০১৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান যে মেজবাহ’র পুরনো কমিটিকেই কাজ চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি ও নির্দেশ দিয়েছেন, সেই কপি আমাদের কাছে আছে।
আমরা সেই মোতাবেকই মেজবাহ’র কমিটির কাছ থেকে অনুমোদন পেয়েছি এবং সেই মোতাবেক আমরাই বৈধ কমিটি।
এদিকে, ২০১৪ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর কাছে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান স্বাক্ষরিত এক আবেদনে মেজবাহ’র নেতৃত্বাধীন কমিটিকে নতুন কমিটি না হওয়া পর্যন্ত কাজ চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত ও অনুমতি যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ দিয়েছিল।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত মেজবাহ’র সেই কমিটিকে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী অনুমোদন দিয়েছেন কিনা তার কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
তবে সম্প্রতি রোজার মাসে আটলান্টায় অনুষ্ঠিত মেজবাহ’র কমিটির অনুমোদনপ্রাপ্ত জর্জিয়া যুবলীগের ইফতার পার্টিতে বাংলাদেশ সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়কে প্রধান অতিথি করা হলে এ কমিটি আসলেই বৈধ কমিটি কিনা তা বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ ঢাকার অফিসে যোগাযোগ করে মোশারফ হোসেনের নেতৃত্বাধীন অপর কমিটি। এতে বিষয়টি মন্ত্রী নিশ্চিত হন এবং সেই মোতাবেক নাহিদের কমিটির অনুষ্ঠানে যাওয়া থেকে তিনি বিরত থাকেন।
এছাড়া মন্ত্রী সে সময় জর্জিয়া আওয়ামী লীগের ইফতার অনুষ্ঠানে জর্জিয়া যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক মোশারফ হসেনও সাদমান সুমনকেও শুভেচ্ছা জানান।
গত ২২ জুলাই উপমন্ত্রী স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের প্রাক্কালে নিউইয়র্কে তারেকুল হায়দারের যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান করতে গেলে মেজবাহ’র নেতৃত্বাধীন কমিটি থেকেও একই দিনে উপমন্ত্রীকে প্রধান অতিথি করে তড়িঘড়ি সভা আহ্বান এবং সেই সভায় তাকে যোগদানের অনুরোধ জানানো হয়।
পরে তিনি তারেকুল হায়দারের যুবলীগ আহ্বায়ক কমিটির সভায় উপস্থিত হন বলে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৩ ঘণ্টা, আগস্ট ০৩, ২০১৫
এবি