নিউইয়র্ক (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র): ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪০তম শাহাদাৎ বার্ষিকী এবং জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন দিনব্যাপী কর্মসূচি পালন করেছে।
দিনটি উপলক্ষে শনিবার সকালে স্থায়ী মিশনে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানসূচি শুরু হয়।
এ সময় মিশনের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ. কে. আব্দুল মোমেনের নেতৃত্বে স্থায়ী মিশনে কর্মরত সব সদস্য অংশ নেন। জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়।
এরপর বিকেলে মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতির পিতা ও সেই কালরাত্রিতে স্বাধীনতাবিরোধী গোষ্ঠীর হাতে নৃশংসভাবে নিহত তার পরিবারের সদস্যদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে এক মিনিট নীরবতা পালন ও মোনাজাত করা হয়।
অনুষ্ঠানে দিনটি উপলক্ষে দেওয়া রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনানো হয়।
অনুষ্ঠানে নিউইয়র্কে সফররত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য নূহ-উল-আলম লেনিন মূল বক্তব্য দেন।
নূহ-উল-আলম লেনিন বলেন, জাতির পিতা একটি বাঙালি জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দীর্ঘ সংগ্রামের মাধ্যমে বাঙালি জাতিকে প্রস্তুত করেন। দৃঢ়সংকল্প বাঙালি জনগোষ্ঠী জাতির পিতার নির্দেশে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে। পরাজিত শত্রুদের জন্য এটা ছিল রাজনৈতিক, সামরিক ও নৈতিক পরাজয়; যা বিশ্ব ইতিহাসে অম্লান হয়ে আছে।
তিনি বলেন, এই পরাজিত শত্রুরা জাতির পিতাকে নৃশংসভাবে হত্যার মাধ্যমে বাঙালি জাতিরাষ্ট্রের চারটি মূল স্তম্ভকে বদলে ফেলতে চেয়েছিল। পাকিস্তানি ধ্যান-ধারণায় ফিরে যেতে চেয়েছিল। তাই, তারা মার্শাল ল’ জারি করে অবৈধ পন্থায় সংবিধান সংশোধন করে, যা ছিল বেআইনি ও সংবিধান পরিপন্থী।
তিনি বলেন, সেই আওয়ামী লীগ বিশাল বিজয়ের মাধ্যমে ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে সংবিধানে থাকা এসব অবৈধ পরিবর্তন বাতিল করে। জাতির পিতার নেতৃত্বে ১৯৭২ সালের সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালনার চার মূলনীতি পুনঃপ্রবর্তন করে।
এর মাধ্যমে বাঙালি জাতি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ফিরে এসেছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, এর মধ্য দিয়ে সেই অপশক্তি আবার পরাজিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ পুনঃপ্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাঙালি জাতি সেই অপশক্তির অপকর্মের প্রতিশোধ নিয়েছে। বাঙালি জাতি তার মূল চেতনায় ফিরে এসেছে। ফলে, দেশ এখন অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে দ্রুত উন্নতি লাভ করছে।
বেলাল বেগ বলেন, জাতির পিতা বাঙালি জাতিকে ঘুম থেকে জাগিয়ে ঐক্যবদ্ধ করে দুর্বার আন্দোলনের চেতনায় উজ্জীবিত করেন। ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের মধ্য দিয়ে তিনি জাতিকে স্বাধীনতার লক্ষ্যে শত্রুর বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশ দেন। শত্রুকে পরাজিত করার এটাই ছিল বাঙালি জাতির প্রেরণা ও শক্তি।
অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘে দেওয়া ভাষণের ভিডিও দেখানো হয়। তার একান্ত প্রচেষ্টাতেই বাংলাদেশ ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘের সদস্য পদ লাভ করে।
জাতির পিতার এই ভাষণের বিভিন্ন দিক বিশ্লেষণ করে ড. মোমেন বলেন, বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণ গোটা বিশ্বের জন্য আজও কার্যকর। ভাষণে উপস্থাপিত ইস্যুগুলো এখনও জাতিসংঘে আলোচিত হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে জাতির জনকের ওপর রচিত কবিতা ও প্রবন্ধ পাঠ করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০১৫
বিজ্ঞপ্তি/এবি