নিউইয়র্ক: নিউইয়র্কে কবি কামাল চৌধুরীর সঙ্গে কবিতা-আড্ডায় অসাধারণ স্মৃতিময় সময় কাটিয়েছেন প্রবাসী কবি, লেখক, সাংবাদিকসহ সুধীসমাজ।
রোববার (২৩ অগাস্ট) সাউথ এশিয়ান রাইটার্স অ্যান্ড জার্নালিস্টস ফোরামের ব্যানারে এ বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে কবি কামাল চৌধুরী নিজের বেশ ক’টি কবিতা পড়ে শোনান। খ্যাতনামা আবৃত্তিকাররা পরিবেশন করেন তার বেশকিছু জনপ্রিয় কবিতা। প্রবাসে বসবাসরত কবিরা কামাল চৌধুরীসহ সমবেত সবাইকে তাদের স্বরচিত কবিতা পাঠ করে শোনান।
কবি কামাল চৌধুরীর নিউইয়র্কে আগমন উপলক্ষে কবি শামস আল মোমিনের লেখা একটি কবিতা পড়ে শুনিয়ে সবাইকে চমৎকৃত করেন। নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল শামীম আহসান অনুষ্ঠানে বসে তাৎক্ষণিক লেখা একটি রম্য কবিতা পড়ে শোনান।
জ্যাকসন হাইটসের জনপ্রিয় হাটবাজার মিলনায়তনের সুধী এবং সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের ভিড়ে মুখরিত ছিল অনুষ্ঠানস্থল।
অনুষ্ঠানটির উদ্যোক্ত্যা নিউইয়র্ক বাংলা ডটকম’র সম্পাদক আকবর হায়দার কিরন আড্ডার সঞ্চালনা করেন। অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে কনসাল জেনারেল শামীম আহসানকে মঞ্চে আসন গ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়। কবির বন্ধুদের মধ্যে শিল্পী রাগিব আহসান, লেখক মাহমুদ রেজা চৌধুরী ও ফখরুল ইসলাম রচি, প্রাক্তন খাদ্য সচিব ও বর্তমানে জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনের ইকনোমিক মিনিস্টার বরুন দেব মিত্র তাদের বিশ্ববিদ্যালয় এবং লেখালেখি জীবনের খণ্ড খণ্ড গল্প শোনান।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ও কবিতা পড়েন- কবি ফকির ইলিয়াস, কবি তমিজ উদ্দিন লোদী, কবি শামস আল মমিন, কবি কাজি জহিরুল কাইয়ুম, কবি দর্পণ কবির, কবি কাজি আতিক, কবি সোনিয়া কাদের, কবি মিলি সুলতানা এবং কবি মাকসুদা আহমেদ।
কবি কামাল চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেন, যন্ত্রণা ও ক্ষোভকে একজন কবি সংগীতের মতো প্রকাশ করবেন। কোনটি কবিতা, কোনটি কবিতা নয়, এ নিয়ে তর্ক করা বৃথা। সময় ঠিক ঠিক বলে দেবে। তবে একজন কবিকে কালের ধারায় টিকে থাকতে হলে নতুন ভাষা তৈরি করতে হবে।
তিনি বলেন, কবি সুধীন দত্তের ভাষ্যমতো এখন স্বাভাবিক কবির যুগ চলছে। আর স্বাভাবিক কবিরা নিরন্তর অনুশীলনের মাধ্যমে কাব্যচর্চা করেন।
কবি ফকির ইলিয়াস বলেন, ‘মিছিলের সমান বয়সী’ কামাল চৌধুরী সত্তর পরবর্তী সময়ের সাহস জাগানিয়া কবি। রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ, কামাল চৌধুরী, মোহন রায়হানরা যে প্রদীপ জ্বালিয়েছিলেন সেটাই কবিতায় মুক্তিযুদ্ধোত্তর প্রজন্মের চেতনা।
তিনি অভিবাসী কবিদের পক্ষ থেকে কামাল চৌধুরীকে শ্রদ্ধা এবং অভিনন্দন জানান। এরপর ফকির ইলিয়াস নিজের লেখা একটি কবিতা পড়ে শোনান।
কবি কাজী জহিরুল ইসলাম বলেন, সিনিয়র সচিব পদমর্যাদাটি তার সাফল্যের মুকুটে একটি বাড়তি পালকমাত্র। কামাল চৌধুরীর প্রকৃত পরিচয় তিনি একজন কবি। তিনি তার দেখা সত্যের নিগূঢ় রহস্যকে কবিতায় উপস্থাপন করেন অত্যন্ত শৈল্পিকভাবে। তাই তাকে আমি শুদ্ধতার কবি বলতে চাই।
কাজী জহিরুল ইসলাম কবির সাম্প্রতিক সময়ের কবিতা ‘বোকা পরবাস’ পাঠ করে বলেন, এ কবিতাটি ক্রিয়াপদ বর্জিত। ‘ক্রিয়াপদহীন বাংলা কবিতা’ তারই উদ্ভাবনা।
কবি কামাল চৌধুরীর বিভিন্ন কাব্যগ্রন্থ থেকে কবিতা পাঠ করেন প্রবাসী আবৃত্তিকার- জি এইচ আরজু, গোপন সাহা, সেমন্তী ওয়াহেদ ও শাহাদাত সবুজ। আবৃত্তির জন্যে বিশেষ ধন্যবাদ জানিয়ে কবি নিজের সইসহ আবৃত্তিকারদের তার কাব্যগ্রন্থ উপহার দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০১৫
আরএম/