ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

উপন্যাস

নীল উড়াল: ষষ্ঠ পর্ব

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭১৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০১৭
নীল উড়াল: ষষ্ঠ পর্ব নীল উড়াল

নায়ক ম্যাকগিল ভার্সিটির অধ্যাপক-লেখক-অভিবাসী বাংলাদেশি। ফরাসি সুন্দরী মার্গারেট সিমোনের প্রণোদনায় দেশে মাদকচক্র নিয়ে গবেষণাকালে ঘটনা মোড় নেয় রোমাঞ্চকর বাঁকে। আসে ধুরন্ধর বন্ধু-অস‍ৎ ব্যবসায়ী এনামুল, সুন্দরী স্টাফ রোকসানা, মধুচক্রের জেনিফার-মলি-পরী, ক্লিনিকের অন্তরালের মিসেস খোন্দকার, রমনার শফি মামা ও ফুলি, ‘উড়াল যাত্রা’র সাইফুল, বিড়ালের কুতকুতে চোখের তরুণ সাংবাদিক ফরমানউল্লাহ এবং ছোটখালার রহস্যময় মেয়ে অন্তরা। প্রেম ও বেঁচে থাকার যুগল উড়ালে কাহিনী আবর্তিত হতে থাকে।

৬.
সান্ধ্য-ঘুম ভাঙল ডোর বেলের শব্দে ‘...তুমি কি এখন দেখিছ স্বপন, আমারে আমারে আমারে...’। বাহ! এখানেও গান।

এনামুল এসেছে।

-চল ব্যাটা আজ বাসায় চল। ঘর-টর কাল থেকে শুরু করবি। তোর ভাবী রান্না করে রেখেছে। আমি বলে দিয়েছি, তুই প্রতিদিন আসতে পারবি না। তোর কাজ আছে। ব্যস্ত। সপ্তাহে-দশ দিনে একবার আসবি। আজ চল। নইলে কাজ করতে পারবি না মিতুর দাওয়াতের চাপে।

নীল উড়াল: পঞ্চম পর্ব

এনামুলের বিয়ের সময় আমি দেশে ছিলাম। মিতু ভাবীকে কত দিন চিনি! বড়ই মায়াবী মেয়ে। কয়েকবার কানাডা গিয়েও বেড়িয়ে এসেছে। আজ যাই। তারপর অনেক দিন না গেলেও চলবে। আজ না গেলে প্রতিদিনই দাওয়াত আসতে থাকবে। এনামুলকে বলি:

-বস। ফ্রেস হয়ে নিই।

এনামুল বসার পাত্র না। ঘুরে ঘুরে বাসা দেখতে লাগল, সব ঠিক-ঠাক মতো ব্যবস্থা করা হয়েছে কি না। রোকসানাকে ফোন করে এটা-ওটা নির্দেশ দিল। তারপর আমাকে নিয়ে ফ্ল্যাট থেকে বের হয়ে সরাসরি বাসায় গেল না। সে বললো:

-এই ভর-সন্ধ্যায় বাসায় গিয়ে কি হবে? চল ক্লাব হয়ে যাই।

গাড়ি গুলশান ক্লাবে ঢুকলো। স্টাফরা মনে হলো সবাই এনামুলের হাতের লোক। স্যারের কি লাগবে জানতে উন্মুখ। লনে চেয়ার টেনে বসতেই স্ন্যাক্স চলে এলো। সঙ্গে দামি বিদেশি মদ। এখানেও ব্যস্তবাগীস সে। আমাকে বসিয়ে রেখে নানা টেবিলে ঘুরে হাই-হ্যালো করছে। মাঝে মাঝে এসে আমার খোঁজ নিচ্ছে। পটু ম্যানেজার। সব কিছু নিজের কব্জায় ম্যানেজ করে রাখছে। ও বিজনেসে সাইন করবে না তো কে করবে!

ঢাকার ক্লাবগুলোতে অনেক দিন আসা হয় না। দেশে এলে আত্মীয়-বৃত্তের মধ্যে কাটিয়েই ফিরে গিয়েছি। এবার ক্লাব দেখার সুযোগ হলো। আমাদের সময় শুধু ঢাকা ক্লাব ছিল। এখন গুলশান ক্লাব, বনানী ক্লাব, বারিধারা ক্লাব, উত্তরা ক্লাব, ডিওএইচএস ক্লাব-এমন কত ক্লাব গজিয়ে উঠেছে। তাতেও নাকি হচ্ছে না। আরও ক্লাব চাই। ক্লাবের চেয়ে মেম্বার হওয়ার লোকের সংখ্যা বেশি। দশ-বারো লাখ টাকা দিয়ে মাঝে মাঝে মেম্বারশিপ দেওয়া হয়। সেটাও তদবির করতে না পারলে পাওয়া যায় না। দেশে মনে হচ্ছে নব্য ধনীদের মচ্ছব লেগেছে। এখন তারা টাকার বাহার দেখাচ্ছে নানা ক্লাবের মেম্বার হয়ে।

মদ্যপান আর জুয়া খেলা ক্লাবে প্রধান অঙ্গ। এখানে দেখা যাচ্ছে বেশ কিছু তরুণী ছিটিয়ে আছে নানা টেবিলে। অনেকেই বেশ অন্তরঙ্গ ভঙ্গিতে বসে আছে। আগে এক-দুইজন সোসাইটি লেডিকে কেন্দ্র করে ক্লাব মেম্বাররা আবর্তিত হতো। এখন আবর্তনের দরকার নেই। সমানাধিকার। যুগল-সন্ধ্যা। দূরে জটলার মতো আসরে লক্ষ্য করে দেখলাম, আমাদের ফ্লাটে উঠার সময় লিফটে দেখা তিন তরুণীর একজন। ঘাড় কাত করে রহস্যময় ভঙ্গিতে আমাকে একবার দেখল। চোখ টিপল বলেও মনে হলো। ভাব খানা এমন যে, “তুমিও এখানে এসেছো। আমাকে বলতে, সঙ্গে আসতে পারতাম!” ঘণ্টা দুয়েক কাটিয়ে এনামুল টেনে তুলল আমাকে। আমার পর্যবেক্ষণে ছেদ পড়ল।

-চল এবার উঠি।

ক্লাবের কাছেই এনামুলের বাসা। বারিধারায়। ঢাকার সবচেয়ে দামি ও অভিজাত এলাকায়। সদ্য ডুপ্লেক্স বাড়িটিতে উঠেছে। এখানে আমার আর আসা হয় নি। ওর ধানমন্ডির পুরনো বাড়িতে বহু বার গিয়েছি। নতুন বাড়ির দোর গোড়ায় মিতু ভাবী সহাস্যে অভ্যর্থনা জানালেন:

-ভাই এসব কি শুনছি? আপনি নাকি আলাদা ফ্ল্যাটে থাকবেন? আমরা কি অপরাধ করেছি?

আমি হাসতে হাসতে উত্তর দিই:

-ভুল বুঝবেন না ভাবী। আমি কাজের প্রয়োজনে একাকী থাকতে চাচ্ছি। যখন-তখন আপনার এখানে চলে আসবো। আপনি অভিযোগ করার সুযোগ পাবেন না।

মিতু ভাবী কপট গাম্ভীর্যে বললেন:

-কথাটা মনে থাকে যেন।

আমি সম্মতি জানিয়ে ভাবীর সঙ্গে ঘরের ভেতরে এসে পৌঁছাই। তিনি আমাকে এক প্রকারে টেনে নিয়ে দু’ তলার খাস ড্রয়িং রুমে বসালেন। মার্বেলের মেঝে। ইতালিয়ান সব ফিটিংস। ইউরোপ বা নর্থ আমেরিকার কোনও ধনকুবেরের বাড়ি বলে বিভ্রম হলো। বাড়ি এসে এনামুল এই প্রথম মুখ খুললো:

-কিরে আমার বাসা পছন্দ হয়েছে?

তৃপ্তির হাসি হাসতে হাসতে জানতে চাইল এনামুল।
আমিও প্রশংসা ভরা কণ্ঠে বলি:

-তোদের রুচি ও পছন্দের তারিফ করতেই হয়। শুধু বিত্ত থাকলেই চলে না; বিত্তের সঙ্গে চিত্ত থাকলেই এমন বাড়ির মালিক হওয়া যায়।

দুজনেই খুশিতেই ঝলমলিয়ে উঠল। এনামুল মুখে হাসি মাখিয়েই আছে। সে বললো;

-মিতু ওকে দেখো। আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি।
এনামুল চলে যেতেই মিতু ভাবীকে ভালো করে লক্ষ্য করলাম। ঠিক আগের মতোই আছে। আটপৌরে। পাশের বাড়ির মেয়েটির মতো আন্তরিক। আমি এই ফাঁকে জানতে চাই:

-অনেক কিছুই তো দেখছি বদলে গেছে ভাবী। বাড়ি, এনামুল, সব এখন অন্য রকম। আপনি কিন্তু অবিকল আগের মতোই রয়ে গেছেন!

একটি শুকনো হাসি দিয়ে ভাবী বললেন:

-সবাই বদলাতে পারে না ভাই। অপ্রয়োজনীয় বদলও আমার ভালো লাগে না। আমি আমাকে নিয়ে বেশ আছি।

আমিও তার সঙ্গে একমত। আমার সম্মতি জানাতে দেরি করি না:

-সেটাই ভালো। কিন্তু আমাদের বন্ধু এনামুল? ব্যবসা আর সোসাইটি রক্ষা করতে গিয়ে নিজেকে মনে হচ্ছে অনেক বদলে ফেলেছে।

মিতু ভাবী একটি দীর্ঘশ্বাস চেপে বললেন:

-একদিনেই এতো কিছু বুঝে ফেলেছেন কিভাবে? আরও কিছুদিন থাকুন, সব দেখতে পারবেন।

আমি জিজ্ঞাসু চোখে তার দিকে তাকাই। বলি:

-আপনি তো আগে থেকেই দেখছেন; কিছু বলছেন না কেন?
-কি বলবো ভাই? এখন এমন একটি বয়সে আছি, এডজাস্ট করা ছাড়া উপায় নেই। পারিবারিক-সামাজিক সম্মানের কথা ভেবে পুতুলের মতো চুপ করে আছি।

আমি তাকে সান্তনা দিই:

-শুধু আপনাদের বাড়িই বদলায় নি। মানুষগুলোও বদলে গেছে। আমাদের স্মৃতি ও শৈশবের ঢাকাও বদলে গেছে।
-খুবই সত্যি কথা বলেছেন।

আবার একটি গভীর দীর্ঘশ্বাস মনে হলো বেশ কষ্ট করে গোপন করলেন মিতু ভাবী। আঙুল দিয়ে নখ কুটলেন কিছুক্ষণ। তারপর আমার দিকে সরাসরি চেয়ে বললেন:

-কমফোর্ট জিনিসটা খুব খারাপ। একবার অভ্যাস হয়ে গেলে আর ছাড়া যায় না। এক সময় স্ট্র্যাগল করেছি। মনে হয় সে জীবনই আনন্দের ছিল; তৃপ্তির ছিল; পবিত্র ছিল। এখন কত সুবিধা পাচ্ছি, কিন্তু সুখ পাচ্ছি না।

খানিক থেমে মিতু ভাবী বললেন:

-জীবনের দৌড়ে প্রতিষ্ঠা পেতে মানুষ বেপরোয়া হয়ে গেছে। এনামুলকে তো তবু সামলানো যায়। আমাদের চেনা-জানা অনেক ভাবীরা তাদের বরদের মোটেও সামলাতে পারছেন না। চোখের সামনে আজকে একজন তো কালকে আরেকজন তরুণী নিয়ে ফুর্তি করছে। লুকানোরও প্রয়োজন বোধ করে না। কারও কারও বাসাতেই স্ত্রীর সামনে পার্টি বসছে। স্ত্রী বেচারা বেয়ারার মতো খাবার দাবার সার্ভ করছে মাত্র।

ভাবীর কথায় আমি আঁতকে উঠি:

-বলেন কি? ওরা প্রোটেস্ট করে না কেন?
-ওই যে বললাম কমফোর্ট। ওটা ছাড়তে চায় না। কেউ কেউ স্বামীকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য যুবক বন্ধু জুটিয়ে বিকৃত জীবনাচারে লিপ্ত হচ্ছে। কিন্তু স্বামীকেও ছাড়ছে না। স্বামী-স্ত্রী’র শীতল লড়াই, প্রতিযোগিতা ও পরস্পরকে ঠকানোর খেলায় মাঝখান দিয়ে ছেলেমেয়েরা ভেসে যাচ্ছে; কেউ অ্যাডিক্ট হয়ে যাচ্ছে। ফিজিক্যালি ইনভলভড হয়ে যাচ্ছে। সেটা দেখার সময়ও তাদের নেই।

আমি আমার গবেষণার বিষয়ের সঙ্গে ভাবীর কথা মিল খুঁজে পাই। তাকে বলি:

-আপনার সঙ্গে পরে আরেক দিন সময় নিয়ে কথা বলবো। আসলে যে গবেষণার কাজে আমি এসেছি, এবং যেজন্য একা থাকছি, সেটা সমাজ ও তরুণ-তরুণীদের উপর মাদকের প্রভাব, কারণ ইত্যাদির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। আপনার কাছ থেকে এসব জানতে চেষ্টা করবো।

এনামুল এসে হাজির হয়েছে। ইন্দোনেশিয়ান বাটিকের একটি শার্টে ওকে মস্ত আমলা বা বিজনেস ম্যাগনেটের মতোই লাগছে। একদা আমরা আদর্শের জন্য স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে চিৎকার করে মিছিল করেছি, সে কথা কেউ বিশ্বাস করবে না। এনামুলেরও বোধ হয় সে সব স্মৃতি মনে নেই। এই প্রথম বার বেশ গম্ভীর মুখে সিরিয়াসলি আমার কাজ ও গবেষণার বিষয় নিয়ে জানতে চাইল।

-গবেষণা করা বা বই-উপন্যাস লেখা নিয়ে আমার কোনও আপত্তি নেই। আমি একটি ব্যাপারে তোকে সতর্ক ও সাবধান করে দিতে চাই।

আমি অবাক হলাম। এখানে সতর্কতা ও সাবধানতার কি আছে? আমার মনের অবস্থা এনামুলকে বুঝতে দেওয়া চলবে না। আমি নিরীহ ভাবে জিজ্ঞেস করি:

-কোন ব্যাপারে সতর্ক ও সাবধান করতে চাচ্ছিস?

এনামুল এবার গলা ঝেঁড়ে কাশে:

-আসলে মাদকের ব্যবসার সঙ্গে পাওয়ার, পলিটিক্স ও মাফিয়ারা জড়িত। ওদের ব্যবসা বা ইমেজের কোনও ক্ষতি হলে ওরা তোকে ছাড়বে না; জানে মেরে ফেলবে।

এনামুলকে আমি আমার অবস্থান স্পষ্ট করার জন্য বলি:

-আমি তো ব্যক্তির বিরুদ্ধে কিছু বলছি বা করছি না। আমি সিস্টেমের গলদ ধরার চেষ্টা করছি। পুরোনো উপনিবেশ যেভাবে আফিমের ব্যবসা করতো, নব্য-সাম্রাজ্যবাদী ও আঞ্চলিক আধিপত্যবাদীরা এখন কিভাবে মাদকের মাধ্যমে একই শোষণ ও দখলদারির কাজ করছে, সেটাই আমি উন্মোচিত করতে চাই। এখানে ব্যক্তিগত শত্রুতার কথা আসছে কেন?

এনামুল ধীর, স্থির, শান্তভাবে আমাকে তার বক্তব্য ব্যাখ্যা করছে। এতো শান্ত ও সচেতন তাকে সাধারণত দেখা যায় না।

-অনেক সময় ব্যক্তি ও সিস্টেম একাকার হয়ে যায়। ব্যক্তিস্বার্থ সিস্টেম রক্ষা করে; সিস্টেমের স্বার্থ রক্ষা করে ব্যক্তি। তখন সিস্টেমের বেনিফিশিয়ারিরা নিজেকে ও সিস্টেমকে, দুটোই রক্ষা করতে চায়। তা ছাড়া একজন ব্যবসায়ী উপনিবেশবাদ, সাম্রাজ্যবাদ, বিশ্বায়ন বুঝে না। সে বুঝে লাভ; কাঁচা টাকা। তার লাভে হাত পড়লে সে ক্ষেপে পশুর মতো হয়ে যায়। তখন তার পক্ষে যা খুশি তা-ই করা সম্ভব। আমি তো এই ঝুঁকির বিষয়টিই বলতে চেষ্টা করছি।

আমি নিরাসক্ত কণ্ঠে বলি:

-ঠিক আছে। আমি সতর্ক থাকব। তুই নিশ্চয় জানিস, আমি ব্যক্তিগত শত্রুতা পছন্দ করি না। আমি প্রতিটি বিষয়কেই ফিলসফিক্যালি দেখি। আমার সঙ্গে কারও ব্যক্তিগত সমস্যা হবে না।
-আহা! আমি জানলেই তো হবে না। বহু রুই-কাতলা আছে, ওরা কে কিভাবে নিচ্ছে, সেটাই বড় কথা। যাক! তুই সমঝে চলবি।

মিতু ভাবী এসে খাবারের জন্য ডাক দেওয়ায় কথা আর এগুতে পারল না।

খাবার টেবিলের সাজানো আয়োজন দেখে ‘রাজকীয়’ শব্দটিই প্রথমে মনে পড়ল। উর্দি চাপানো বয়, খানসামা, বাবুর্চি টেবিলের চারপাশে দণ্ডায়মান। বুঝতে অসুবিধা হয় না, সবাই ট্রেইন্ড। প্রায়ই এ বাড়িতে বড় আকারের পার্টি হয়, সেটা না বলে দিলেও অনুভব করা যায়। দেশি-বিদেশি মাছ-মাংসের পর্যাপ্ত আয়োজন। বাংলাদেশে যে টাকা হলে বাঘের দুধও মিলে, এনামুলের টাকা সে প্রমাণবহ।

আদর-আপ্যায়নের বিন্দুমাত্র ক্রুটি করে নি এনামুল। কৌশলে তার বর্তমান আর্থিক সমৃদ্ধির চিত্রটিও যেন জানিয়ে দিলো। ‘দেখ ব্যাটা, তোর মতো এতো পড়াশোনা করি নি; তবু তোর চেয়ে কত ভালো আছি’- অস্ফুটে এমন একটি অভিব্যক্তিই যেন এনামুলের কথা, কাজে, আপ্যায়নে বের হচ্ছে। একে ঠিক হিংসা বা প্রদর্শনী বলা যায় না। বলতে হয় বিকৃত আত্মতৃপ্তি।

ফিরে আসার সময় রাত অনেক হয়ে গেল। বড় ফাঁকা লাগছে নিজেকে। জীবনটা অর্থশূন্য হয়ে গেল। এত বছর বেঁচে আছি নিজের মতো করে। অন্যদিকে সবাই বদলে গেলো চলতি হাওয়ার তালে তালে। পথে নেমে রাজধানীর মধ্যরাতের নির্জনে একাকী, নিঃসঙ্গ, ক্ষুব্ধ একটি ষাঁড়ের মতো মনে হলো নিজেকে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০১৭
জেডএম/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

উপন্যাস এর সর্বশেষ