মন্দ ক্লাউনদের সম্পর্কে আতঙ্ক অব্যাহত আছে এখনও। গবেষক ফাইওনা ম্যাকডোনাল্ড খুঁজে বের করেন যে, আধুনিক সার্কাস ও বিনোদনের এ অন্ধকার দিকটি প্রাচীন রোমেও ছিল।
মন্দ ক্লাউন হচ্ছেন তারাই যারা সার্কাস বা পুতুল নাচে ভয়ংকর সাজে বা মুখোশ পরে মানুষকে বিনোদন দিতেন। অনেকে কৌতুক অভিনয় করে লোক হাসালেও তাদের ভয়ংকর সাজ-পোশাক ভয়ও ধরিয়ে দেয়। কখনও কখনও লোকালয়ে জাদু বা ভয়ংকর খেলা দেখিয়েও জীবিকা অর্জন করতেন তারা। মন্দ ক্লাউনরা ক্রীড়া প্রদর্শক ও অভিনেতা হলেও মানুষের অপমানের শিকার হতেন।
অ্যান্ড্রু ম্যাককনেল ১৯ শতকের ব্রিটিশ পুতুল নাচ তারকা জোসেফ গ্রিমাল্ডির জীবনী লিখেছিলেন। তিনি জানান, ‘পুরু ফাউন্ডেশনে মুখ, ঘাড় ও বুকের উন্মোচিত অংশে রক্তলাল ক্ষত, একটি চওড়া মালা, বিশাল পেটুক, গুহার মতো মুখ, ঠিকরে আসা চোখ, চওড়া স্বাস্থ্য নিয়ে বা মুখোশে আবৃত হয়ে হিন্দু পিশাচ তত্ত্বের চরিত্রে অভিনয় করতেন তিনি। এ সাজ জোয়ি নামেই সাধারণভাবে পরিচিত ছিল’।
গ্রিমাল্ডির চরিত্র সারা বিশ্বের মানুষকে ভীতসন্ত্রস্ত করে। সাউথ ক্যারোলাইনা অঙ্গরাজ্যে হ্যালোইন চাষার পোশাকে আবির্ভূত হয়ে খেলা দেখাতে পিপের মধ্যে শিশুদের ঢুকতে প্রলুব্ধ করেন। ফলে সামাজিক আতঙ্ক তৈরির দায়ে গ্রেফতারও হন তিনি।
উন্মত্ততা সৃষ্টিকারী পেশাদার ক্লাউনদের দাবি, এটি তাদের জীবিকা এবং ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেন তারা। ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে নিন্দিত হলেও তারা সব সময় শিশুদের চিত্ত বিনোদনকারী।
গ্রিমাল্ডির দাবি, নিজে জোয়ি রূপান্তরিত হয়ে হাজার-হাজার বছরের ঐতিহ্য বহন করতেন তিনি। কারণ, রোমের আর্কিমাডাস যুগে এবং ইউরোপের মধ্যযুগীয় রাজ দরবারেও ভাড় হিসাবে একইভাবে ক্লাউন সাজতেন অনেকে।
মন্দ ক্লাউনদের জীবন হতো অদ্ভুত। কারণ, তারা আনন্দদায়ক ও মজাদার হলেও মানুষের অনেক ধকল সহ্য করতে হতো। আর গ্রিমাল্ডির জীবন ছিল আরও করুণ। তার একজন মদ্যপ ছেলে ৩০ বছর বয়সে মারা গেলে তিনি বিষণ্ণতা রোগে আক্রান্ত হন। এর মাঝেও তিনি লোক হাসাতেন। চরকিতে গড়াগড়ির খেলা দেখাতে গিয়ে দুর্ঘটনায় পঙ্গু হয়ে যান এবং শেষ পর্যন্ত চরম দারিদ্র্যের শিকার হয়ে মারা যান।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৬, ২০১৬
এএসআর/টিআই