১৯ শতকে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন সভ্যতা আবিষ্কারে খনন শুরু করেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা। তাদের লক্ষ্য ছিল, মেসোপটেমিয় সভ্যতা এবং তার প্রয়াত আসিরিয়ান ও ব্যাবিলনীয় সাম্রাজ্য, যার বর্ণনা ছিল মূলত বাইবেলের পুরনো গ্রন্থ এবং শাস্ত্রীয় ও পৌরাণিক কাহিনীতে।
এসব গল্পগাথাই প্রাগৈতিহাসিক সভ্যতার ‘পুনঃআবিষ্কার’- এ প্রত্নতাত্ত্বিকদের অনুপ্রাণিত করে বলে জানিয়েছেন ফ্রান্সের ল্যুভর মিউজিয়ামের মধ্যপ্রাচ্যের পুরাকীর্তি বিভাগের কিউরেটর অ্যারিয়ান থমাস।
পৃথিবী বিখ্যাত ল্যুভরে সংরক্ষিত আছে মেসোপটেমিয়া ও তার উত্তসুরী সভ্যতাগুলোর ৫ হাজারেরও বেশি পুরাকীর্তি ও প্রত্নতত্ত্বের নির্দশন।
বর্তমান ইরাকের টাইগ্রিস বা দজলা ও ইউফ্রেটিস বা ফোরাত নদী দু’টির মধ্যবর্তী আধুনিক ইরাক, ইরানের খুযেস্তান প্রদেশ এবং সিরিয়া ও তুরস্কের উত্তরাঞ্চলে গড়ে উঠেছিল মেসোপটেমিয় সভ্যতা। ৬০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকেই গঠিত হতে থাকা অতি উন্নত এ সভ্যতার উম্মেষ ঘটে খ্রিস্টপূর্ব ৩৫০০ থেকে খ্রিস্টপূর্ব ৩০০০ অব্দের মধ্যে।
পরবর্তীতে এখান থেকেই ব্রোঞ্জ যুগে আক্কাদীয়, ব্যবিলনীয় ও আসিরীয় এবং লৌহ যুগে নব্য আসিরীয় ও নব্য ব্যাবিলনীয় সভ্যতা গড়ে ওঠে। কয়েকশ’ বছর পার্সিয়ান ও রোমানদের নিয়ন্ত্রণে থাকার পর সপ্তম শতাব্দীতে মুসলিম খিলাফত শাসন শুরুর মধ্য দিয়ে বিলুপ্তি ঘটে এ সভ্যতার।
গত মাসে প্রকাশিত ‘প্রাচীন ইরান এবং মেসোপটেমিয়া: পর্বতমালা এবং নিচুভূমিসমূহের ব্যাখ্যা’ নামক নতুন বইয়ে অক্সফোর্ডের অ্যাসমোলিয়ান যাদুঘরের পল কলিন্স লিখেছেন, ‘অবশ্যই এসব সভ্যতা সম্পর্কে বিশ্বকে জানিয়েছে বাইবেল।
সভ্যতার কারিগররা বহিরাগত ছিলেন বলে একটি ধারণা ছিল। কিন্তু স্থানীয় সাম্রাজ্য, শহর ও রাজারাই এর মৌলিক বৈশিষ্ট্য’।
ল্যুভরের প্রথম গ্যালারিতে অন্য নিদর্শনগুলোর সঙ্গে রয়েছে জিগ্গুরাটস্ দেবী ও কাদা-ইঁটে তৈরি তার মন্দিরের ধ্বংশাবশেষ এবং ল্যাপিস দেবীর মূর্তি। আরও আছে সুমেরিয় সভ্যতা থেকে পাওয়া উপবিষ্ট প্রার্থনারত এবিহ ইল মূর্তি।
সুমেরিয় মানুষ যে পদ্ধতিতে প্রার্থনা করতেন, সেটিই তৈলস্ফটিক ভাস্কর্যে বলা হয়েছে। এগুলোর বর্ণনাও ছিল বাইবেল ও অন্য পৌরাণিক গ্রন্থে- এমনটাই দাবি পল কলিন্সের।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৭, ২০১৬
এএসআর/