ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

মুক্তমত

পেট্রোল বোমার আন্দোলনে ঘটছে রাজনীতির গুণগত স্খলন!

ড. সামিমউল মওলা | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২১ ঘণ্টা, মার্চ ৭, ২০১৫
পেট্রোল বোমার আন্দোলনে ঘটছে রাজনীতির গুণগত স্খলন! ছবি: প্রতীকী

দেশে “বিশাল আন্দোলনের” নামে লুকিয়ে চুরিয়ে বিস্তর পেট্রোল বোমা মারা হচ্ছে সাধারণ মানুষের গায়ে, গাড়ীতে, বাসে, রেলওয়েতে, লঞ্চে, পুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে মানুষ ও সম্পদ! লুকিয়ে এসে এসব করা হচ্ছে! রেলের ফিসপ্লেট খোলার মতো নাশকতা চলছে বার বার!

আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপির নেতৃত্বের এই আন্দোলন জনগণকে সম্পৃক্ত করতে শোচনীয় ভাবে ব্যর্থ্য হয়েছে। আজ পর্যন্ত একটা সফল দশহাজারী মিছিল বের করতে তারা সমর্থ হয় নি! জনগণ কে সাথে নিয়ে সে রকম মিছিল বের করে গুলি খেয়ে বা গ্রেফতার হয়ে “দলীয় আদর্শের স্বপক্ষে সংগ্রাম করে নির্যাতিত হয়েছি”-বক্তব্য দিয়ে মাঠে দাঁড়াতে পারলে বোঝা যেতো ২০-দল মানে বিএনপি জনগণকে নিয়ে আন্দোলনে আছে।



কিন্তু খালেদা জিয়ার বা তার লন্ডন প্রবাসী পূত্রের শত “দাবড়ানি” সত্বেও বি এন পি সেই ধরনের কোন প্রকৃত আন্দোলনের ধারে কাছেও যেতে পারেনি স্রেফ সামর্থ্যের অভাবে। মূল কারণ বিএনপি এমন একটি দল যেটা ক্ষমতার ভেতরই খেলতে অভ্যস্ত্য!
 
মাঝখান থেকে বিএনপি নিজে ও তার “পরম মিত্র” জামাত-শিবির-ফ্রিডম পার্টি (যদিও নামে নেই) ইত্যাদি বর্তমানের আওয়ামী লীগ সরকারকে উচ্ছেদ করতে নাশকতার মাধ্যমে বেছে নিয়েছে “সফট টার্গেট” সাধারন মানুষকে।

এ যাবৎ তাদের চোরাগুপ্তা পেট্রোল বোমায় পুড়ে মারা গেছে শতাধিক মানুষ, বেঁচে আছে কিন্তু পুড়ে চিরজীবনের জন্যে বিকৃত হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার! তথাকথিত অবরোধ দিয়ে বিএনপি সহ ২০-দলের অন্যান্যরা সেফ-কাস্টডিতে পালিয়ে রয়েছেন এসি রুমে বিলাস-বহুল জীবনযাত্রায়।

(দ্রস্টব্যঃ এক কালীন অতি-উচ্চকিত ব্রিগেডিয়ার অবঃ হান্নান শাহ-র সি এম এইচে অবস্থান!)

এই সব এক অর্থে বোঝায় যে বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা আওয়ামী লীগের সাথে এক রকম সমঝোতা করে তাদের নিজেদের ও তাদের “কামান” প্রভূত ধন সম্পত্তি রক্ষার চেস্টা করছে!

অত্যন্ত দূঃখজনক হলেও বলতেই হচ্ছে এই “দুধ-ভাত” আন্দোলন বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার অনেক আগেই বন্ধ করতে পারতো, কিন্তু কি কারণে যেনো তা করতে বার বার বিলম্বিত করছে, মাঝখান থেকে গুরুতর ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারন মানুষ ও দেশের অর্থনীতি!

খবরের কাগজে দেখলাম বিদেশি কুটনীতিকরা নাকি তিন টি প্রস্তাব নিয়ে দৌড়-ঝাপ করছেন, তার ভেতর “মাননীয় রাষ্ট্রপতিকে কেন্দ্রে রেখে জাতীয় সরকার’ প্রস্তাবে নাকি খালেদা জিয়া সায় দিয়েছেন। আর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নাকি তা মানবেন বলেই সকলে আশা করছেন!

ব্যাপারটি কি হাস্যকর নয়? বিএনপি তাদের এই “দুধ-ভাত” মার্কা আন্দোলন দ্বারা কি কোন শক্ত “বার্গেনিং” পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে? নাকি সরকার তাতে ভয় পাচ্ছে?

সাধারন মানুষ নানা প্রশ্নের উত্তর খুজছে, তার মধ্যে প্রধান প্রশ্ন অগণতান্ত্রিক পেট্রোল বোমা হামলার শাস্তি হিসেবে কেনো এই সরকার মাস্টারমাইন্ড আসামিদের পাকড়াও করে তাদের বিচার শুরু করছে না? আমরা বিশ্বাস করি সরকারের গোয়েন্দাদের কাছে এদের সকলেরই নাম ধাম ও তথ্য রয়েছে!

এই পেট্রোল বোমা আন্দোলনের ফলে যদি বিএনপি কোন রাজনৈতিক সুফল পায় তা হলে তা দেশের ভবিষ্যতের জন্যে মারাত্মক হবে। এর পর থেকে সকলেই আন্দোলনের নামে পেট্রোল বোমায় মানুষ পুড়িয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লুটবে। সত্যিকারের “মগের মুল্লুকে” পরিণত হবে বাংলাদেশ!

বাংলাদেশ সময় ১০২৩ ঘণ্টা, মার্চ ০৭, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।