ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

মুক্তমত

বাংলানিউজ ধর্মের সঙ্গে রাজনীতি মেলায় না

মুফতি এনায়েতুল্লাহ | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১০ ঘণ্টা, জুলাই ১, ২০১৫
বাংলানিউজ ধর্মের সঙ্গে রাজনীতি মেলায় না

আমি পেশাদার সংবাদকর্মী নই। পেশায় শিক্ষক।

শখের বশে একটু-আধটু লেখালেখি করি। সেই সুবাদে বিভিন্ন দৈনিকে লেখা ছাপা হতো। এভাবেই সমকালের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ি। এর বাইরে ভিন্ন কিছু কখনও ভাবিনি। অনলাইন আমার কাছে অনেকটা অজেয় বিষয় মনে হতো। এখানে লিখলে ক’জনইবা দেখে বা পড়ে এই ভাবনাটা একান্তে করে নিয়েছিলাম। অনলাইনে নিজেকে জাহিরের অবকাশ কই! সুতরাং ওমুখো হওয়া চলবে না।

এ বছরের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে বাংলানিউজ থেকে পাওয়া একটি ফোন সযত্নে লালিত আমার বিশ্বাসে চিড় ধরায়। বাংলানিউজের ফিচার সম্পাদক ফারুক আহমদ সেই ফোনটি করেছিলেন। বিষয় বাংলানিউজে কাজের বিষয়ে। সংক্ষিপ্ত কথা- কাল আসেন, কথা বলেন আলমগীর ভাইয়ের সঙ্গে। সাক্ষাতসূচি ৬ জানুয়ারি, সকাল ১০টা।

বিষয়টি নিয়ে কাছের বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করলাম। তারা উৎসাহ দিলেন। এলাম বাংলানিউজের অফিসে প্রথমবারের মতো। হাতে একটি মেটো রংয়ের খাম। সাক্ষাৎ দিলেন এডিটর ইন চিফ আলমগীর হোসেন ভাই। সাক্ষাতপর্বটি সময়ের হিসেবে কম হলেও নতুন যাত্রার একটি সিদ্ধান্ত আমাকে নিতে হলো।

আমার লেখার বিষয় যেহেতু ধর্ম বিষয়ক, সেহেতু ধর্ম বিষয়ে বাংলানিউজের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে জেনেই মূলত আমার অনলাইনে কাজের আগ্রহ সৃষ্টি হয়।

প্রথম সাক্ষাতে এডিটর ইন চিফ বলেছিলেন, ‘বাংলানিউজে ধর্ম কারো স্বার্থ কিংবা কোনো এজেণ্ডা বাস্তবায়নে ব্যবহৃত হয়নি, এখনও হয় না। ভবিষ্যতেও হবে না। আমরা চাই, সত্যিকারের ইসলাম সম্পর্কে মানুষ জানুক। ধর্ম বিষয়ে বিভিন্ন দল-উপদলের কোন্দলে না জড়িয়ে সঠিক ইসলামের শিক্ষা, দর্শন, বিধান প্রচার-প্রসারে বাংলানিউজ অবশ্যই ভূমিকা রাখবে। ’

আমরা যারা ছাপার অক্ষরে লেখা পড়ে ও দেখে অভ্যস্ত তাদের জন্য অনলাইন প্রথম একটু অন্য অনুভূতি দেবে। কিন্তু একটি লেখা বা সংবাদ প্রকাশের পরপরই দেশে-বিদেশের পাঠকের সরাসরি প্রশ্ন, অভিযোগ, আপত্তি, প্রশংসা ও মন্তব্য আপনাকে দেবে অন্যরকম অনুভূতি। যা এখন আমার হচ্ছে। আসছে প্রচুর পরামর্শ, লেখা ও প্রশ্ন। যা প্রিন্ট মিডিয়ায় অনেকটাই অনুপস্থিত। কারণ, প্রিন্ট সংস্করণের পত্রিকার সঙ্গে পাঠকের যোগাযোগ মাধ্যম অনেক কষ্টসাধ্য বিষয়। যা অনলাইনের বেলায় নেই। এখানে স্মার্ট ফোন, ট্যাব, ল্যাপটপ বা কম্পিউটারে কোনো খবর পড়ে ইচ্ছে হলে সঙ্গে সঙ্গে ভালো-মন্দ, প্রশংসা-ভৎসর্না সবই করা যায় মুহূর্তে। প্রতিক্রিয়া ভেতরে থাকতে থাকতে তা প্রকাশ করার মজাই আলাদা। অনলাইনের পাঠকরা এদিক থেকে বেশ এগিয়ে। সেই সঙ্গে অনলাইনের সঙ্গে জড়িত সংবাদকর্মীরাও।

প্রিন্ট পত্রিকায় নির্দিষ্ট গণ্ডির মাঝে, নির্দিষ্ট শব্দে ও মেকাপে লেখা শেষ করতে হয়- অনলাইনে তা নেই। বাংলানিউজের ইসলাম বিভাগে প্রতিদিন পাঠকের প্রচুর প্রশ্ন আসে। এসব প্রশ্নের কিছু উত্তর আমরা প্রকাশ করি। আর কিছু প্রশ্নের উত্তর একান্ত ব্যক্তিগত বিধায় ব্যক্তিগতভাবে দেওয়া হয়। এখানে প্রচার বা লোক দেখানোর বিষয় থেকে- আমরা সম্মানিত পাঠকের প্রয়োজনকে মূল্যায়ন করেছি, গুরুত্ব দিয়েছি পাঠকের ব্যক্তিগত ভাবনাকে।

বাংলানিউজ ধর্মের সঙ্গে রাজনীতিকে গুলিয়ে ফেলেনি। চলমান সামাজিক বিভিন্ন সমস্যার ধর্মীয় সমাধান সম্বলিত লেখা যেমন প্রকাশ হয়েছে, তেমনি চলতি রমজানে বিভাগীয় শহরের উল্লেখযোগ্য মসজিদের ইমাম খতিবের রমজান বিষয়ক সাক্ষাৎকারও স্থান পেয়েছে। বিশ্বের নানাপ্রান্তে ইসলাম-মুসলমানের অগ্রযাত্রা ও অর্জন বিষয়ক খবরগুলো আমরা তুলে আনতে ভুল করিনি। ‘অপার মহিমার রমজান’ শিরোনামে রমজানের বিশেষ আয়োজন ইতিমধ্যে সাড়া ফেলেছে পাঠকের মাঝে। এমনকি দেশের বাইরে অবস্থানকালেও এ বিভাগ নিয়ে এডিটর ইন চিফের নির্দেশনা বিভাগীয় সম্পাদক হিসেবে আমাকে দিয়েছে অন্যরকম উৎসাহ ও প্রেরণা। এভাবেই বাংলানিউজ এক সুতোয় গেঁথেছে সবাইকে।

বাংলানিউজ কর্মবান্ধব এক মিডিয়া হাউজ। এ হাউজের কর্মীরা কাজে বিশ্বাসী। নতুন কিছু সৃষ্টির নেশায় সদা মগ্ন। বাংলানিউজ যার যার প্রাপ্য মর্যাদা ও স্বীকৃতি প্রদানে কৃপণ নয়। বাংলানিউজের কর্মী যেখানেই কোনো কাজে সফল হয়েছে, কোনো স্বীকৃতি পেয়েছে তাকে সেভাবেই মূল্যায়ন করা হয়েছে।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে প্রত্যাশা, বাংলানিউজ তার প্রত্যাশিত পথে পথ চলুক অবিরাম, অব্যাহত সংবাদের দুনিয়ায় সারাক্ষণ থাকার অঙ্গীকার।  

লেখক: বিভাগীয় সম্পাদক, ইসলাম, বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৪ ঘণ্টা, জুল‍াই ১, ২০১৫
জেডএম/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।