ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মুক্তমত

একজন লাল বাহাদুর শাস্ত্রী, নষ্ট সমাজ ও গোয়েবলস

নঈম নিজাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০১৯
একজন লাল বাহাদুর শাস্ত্রী, নষ্ট সমাজ ও গোয়েবলস

রহস্যজনক মৃত্যু ছিল ভারতের প্রধানমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর। এ নিয়ে একটি সিনেমাও আছে। ১৯৬৬ সালের ১০ জানুয়ারি তাশখন্দে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতি স্বাক্ষরিত হয়। পরদিন হোটেল কক্ষে পাওয়া যায় ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর লাশ। 

মৃত্যুর কারণ হিসেবে চিকিৎসকরা বললেন, কঠিন হৃদরোগ। পরিবারের সদস্যরা বিস্মিত হন।

তারা ময়নাতদন্তের দাবি তোলেন। বলেন, এভাবে তিনি মরতে পারেন না। ভারতের অনেক মিডিয়ার ইঙ্গিত ছিল পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার দিকে।  

বিষপ্রয়োগের কথাও কোনো কোনো গণমাধ্যম ইঙ্গিত করে। বিতর্কের মাঝেই লাশ আনা হয় ভারতে। তারপর দাহ শেষ হয়। কিন্তু শোক কাটানোর আগেই পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে একটি চিঠি পান মিসেস শাস্ত্রী। চিঠিতে ব্যাংক জানায়, প্রয়াত লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর ৫ হাজার রুপির একটি ব্যাংক ঋণ ছিল পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংকে।  

গাড়ি কেনার জন্য এ ঋণ নিয়েছিলেন শাস্ত্রীজি। তাঁর মৃত্যুর পর ঋণ কিস্তি শোধ করতে হবে নিয়ম মেনে। আকাশ ভেঙে পড়ল মিসেস শাস্ত্রীর মাথায়। এভাবে ঝামেলায় পড়বেন ভাবেননি কখনো। গাড়িটি কেনা হয় লাল বাহাদুর শাস্ত্রী প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে। পরিবারের দাবির মুখে ব্যক্তিগত গাড়ি কিনেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। কারণও ছিল। রাষ্ট্রীয় গাড়িতে সন্তানদের চড়তে দিতেন না।  

বলতেন, এই গাড়িতে চড়ার অধিকার পরিবারের সবার নেই। প্রধানমন্ত্রীর গাড়ি বলে কথা। কিন্তু মন্ত্রী থাকাকালেও তিনি একই কথা বলতেন। পরিবারের সবাই তখন একটি গাড়ি কেনার দাবি জানান। কিন্তু পাত্তা দেননি। প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে ভাবলেন, এবার পরিবারের জন্য গাড়ি কিনে দেবেন। পুরো পরিবারের অ্যাকাউন্ট হিসাব করে পাওয়া গেল মাত্র ৭ হাজার রুপি। কিন্তু ফিয়াটের দাম ১২ হাজার। দেখেশুনে ফিয়াট কিনলেন।  

মোটর কোম্পানি ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা করল। পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংক কিস্তি শোধের শর্তে ঋণ দেয় ৫ হাজার রুপি। প্রধানমন্ত্রীর বেতনের অর্থ থেকে সেই কিস্তি শোধ হতো। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যুর পর এ টাকা কে দেবে? ব্যাংক তো আর টাকা মাফ করতে পারে না। তাই পরিবারের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। কী করে এ অর্থ শোধ দেবেন? 

পরে এই ঋণ শোধ হয় পেনশনের অর্থ থেকে। লাল বাহাদুর শাস্ত্রী ছিলেন অতিসাদামাটা মানুষ। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেন। নেহরুর ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেন। নেহরুর মন্ত্রিসভায় রেল, স্বরাষ্ট্র, যোগাযোগ, বাণিজ্যসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলেন। নেহরুর মৃত্যুর পর অনেকের ধারণা ছিল ইন্দিরা গান্ধী প্রধানমন্ত্রী হবেন।  

কিন্তু ইন্দিরা বলে দেন, তিনি প্রধানমন্ত্রিত্ব নেবেন না। নেহরুর কট্টর অনুসারী হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন লাল বাহাদুর শাস্ত্রী। এই ক্যাবিনেটে ইন্দিরা সম্প্রচারমন্ত্রী ছিলেন। মন্ত্রী থাকাকালেও লাল বাহাদুর ছিলেন ব্যতিক্রম। ১৯৫৬ সালে অন্ধ্র প্রদেশে মাহবুবনগরে এক রেল দুর্ঘটনা হয়। এতে মারা যান ১১২ যাত্রী। লাল বাহাদুর শাস্ত্রী রেলমন্ত্রী।  

এ দুর্ঘটনা তাঁকে ভাবিয়ে তোলে মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বের প্রশ্নে। সঙ্গে সঙ্গে পদত্যাগপত্র পেশ করেন তিনি। এই পদত্যাগের আগে তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেননি। দেখা করার প্রয়োজনও মনে করেননি। পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন। বিস্মিত হন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু। তিনি এ পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেননি। বললেন, এক্সিডেন্ট হতে পারেই। পদত্যাগ কেন করতে হবে? 

কিন্তু তিন মাস পর তামিলনাড়ুতে আবার রেল অ্যাক্সিডেন্ট। এবার মারা যান ১৪৪ যাত্রী। বিবেকের দংশনে পড়েন লাল বাহাদুর শাস্ত্রী। ভাবলেন, আর মন্ত্রী থাকার মানে নেই। তিনি কোনোভাবে এর দায় এড়াতে পারেন না। আবার পদত্যাগপত্র পেশ করেন। এবার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী। তবে প্রধানমন্ত্রী এ নিয়ে পার্লামেন্টে বক্তব্য দেন।  

নেহরু বলেন, ‘যদিও তিনি পদত্যাগ করেছেন, আমরা তা গ্রহণ করেছি, এর মানে এই নয় যে মি. শাস্ত্রী তাঁর দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন। পদত্যাগপত্র এ কারণে গ্রহণ করা হয়েছে যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম জানতে ও শিখতে পারে, তিনি সংবিধান, গণতন্ত্র ও দায়িত্বের প্রতি কতটা সৎ এবং নিবেদিত ছিলেন। ’ 

এর নাম গণতন্ত্র। এর নাম বিবেকবোধ। সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সংসদে বিতর্কের জবাবে মন্ত্রী হিসেবে লাল বাহাদুর শাস্ত্রী বলেছিলেন, ‘স্বভাবত আমি খর্বকায় ও মৃদুভাষী হওয়ায় দেশবাসী মনে করেন আমি হয়তো দৃঢ়চেতা নই। শারীরিক দিক থেকে বলবান না হলেও আমি মনে করি ভিতরে ভিতরে আমি মোটেও দুর্বল নই। ’

বাস্তবে মোটেও দুর্বল ছিলেন না লাল বাহাদুর শাস্ত্রী। তিনি বারবার প্রমাণ করেছিলেন দৃঢ়চেতা দৃষ্টিভঙ্গি। নিজের সততা-নিষ্ঠার কাছে সব সময় ছিলেন আপসহীন। ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় সাহসী ভূমিকা রাখেন। মন্ত্রী কিংবা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাজ করেছেন মানুষের কল্যাণে। ইন্দিরার মতো ব্যক্তিত্ব শুধু নন, ভারতের সেরা রাজনীতিবিদদের নিয়েই ছিল তাঁর ক্যাবিনেট।  

পাঠকদের একটি কথা শুধু আবার স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি; নেহরু প্রধানমন্ত্রী থাকাকালেই ইন্দিরা ভারতীয় কংগ্রেসের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন সফলভাবে। সে সময় চীনের সঙ্গে সীমান্ত যুদ্ধ শুরু হলে আসামে ভারতীয় সেনাদের পাশে এসে উৎসাহ দেন ইন্দিরা। চাণক্যের একটি কথা আছে, ‘চাঁদ নক্ষত্রসমূহের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে, একজন সুশাসক পৃথিবীর সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেন, স্বামী-স্ত্রী সম্পর্ক পরিবারের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। ’

মন্ত্রীদের দক্ষতাই শাসন ক্ষমতায় সাফল্য এনে দেয়। রাজনীতিবিদদের সততা-নিষ্ঠা রাষ্ট্রকে নতুন মাত্রা দেয়। অঙ্গীকারটা থাকতে হয় মানুষের প্রতি। এই রাজনীতি, সমাজ, দেশ সবকিছুই মানুষের জন্য। মানুষবিহীন সমাজে কোনো কিছুরই দরকার নেই। মানুষকে বাদ দিয়ে কিছুই হতে পারে না। রাজনীতিবিদরা সব সময় মানুষের গল্পই শোনান। কিন্তু সত্যিকার অর্থে কতজন মানুষের মনের ভাষা বুঝতে পারেন? বঙ্গবন্ধু মানুষ বুঝতেন।  

আর বুঝতেন বলেই দেশটা স্বাধীন করেছেন। এখন সেই স্বাধীন দেশে কিছু মানুষ যা খুশি তা করছে। সততা-নিষ্ঠা, ন্যায়পরায়ণতা হারিয়ে গেছে। পিয়াজ থেকে ব্যাংককান্ড সব আশাবাদকে শেষ করে দেয়। শেয়ারবাজার আর ব্যাংকগুলো আর্থিক খাতের লুটেরাদের দখলে। ব্যাংকের টাকা নিয়ে ওরা ফেরত দেয় না। স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা বলে কিছু নেই। ব্যাংকের টাকা মেরে অনেকে বড়লোক। কোনো লাজলজ্জা নেই। বড় বড় গাড়ি হাঁকিয়ে বেড়ান। আর্থিক খাতের দৈন্যদশা তৈরি করেন।  

অনেক লিজিং কোম্পানি বন্ধ হয়ে গেছে। সত্যিকারের ব্যবসায়ীরা হতাশ। তাদের গুনতে হয় অতিরিক্ত সুদের হার। অনেকে ঋণখেলাপি হয়ে সুদের চক্রবৃদ্ধিতে পড়ে সব শেষ করে ফেলেন। আবার অনেকেই পুরো টাকাটাই মেরে দেন। নামে-বেনামে ব্যাংক ঋণ নিয়ে সর্বনাশ করেন দেশের। খালি করেন ব্যাংক। একদিকে লুটেরাদের এই অরাজকতা, অন্যদিকে আরেকদল লোক গুজব ছড়িয়ে বাজারে সিন্ডিকেট বানায়।  

পিয়াজ, লবণের দাম বাড়ায়। নষ্ট সমাজে ভন্ডদের অপকর্মের শেষ নেই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম যেন গুজবের ফ্যাক্টরি। গুজব ছড়িয়েই দাম বাড়িয়েছে লবণের। অথচ লবণের কোনো সংকট নেই। আমার গ্রাম থেকে একজন ফোন করে জানাল, ভাই, মানুষ লাইন ধরে লবণ কিনছে। বিস্মিত হলাম। বললাম, মানুষকে জানাও কোনো সংকট নেই লবণের।

গুজব কিছু মানুষ ছড়াবেই। কিন্তু সরকারের মন্ত্রী বাহাদুরদের সতর্ক থাকা প্রয়োজন অনেক বেশি। কিন্তু তারা বিষয়গুলো কতটুকু গুরুত্বের সঙ্গে নেন? পিয়াজ নিয়ে সরকারের মন্ত্রী সাহেব কি সতর্ক ছিলেন? আমার কাছে মনে হয়েছে তিনি বিষয়টি হালকাভাবে নিয়েছিলেন। গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজন মনে করেননি। একজন মন্ত্রী কেন নিজের প্রতিষ্ঠানের সমস্যা আগে টের পাবেন না? আর টের পাওয়ার পর সমাধান কেন করতে পারবেন না? তাহলে মন্ত্রী সাহেবদের কাজ কী? 

আকাশে মেঘ জমলে দেখা যায়। মেঘে আকাশ ঢাকলে বৃষ্টির আভাস পেতে আবহাওয়া বিভাগের প্রয়োজন হয় না। দুই মাস আগে পিয়াজের সমস্যার কথা সবাই জানেন। পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হয়েছে। মন্ত্রী ব্যবসায়ীদের বৈঠকেও ডেকেছিলেন। একজন ছাড়া কোনো ব্যবসায়ী বৈঠকে হাজির হননি। এই দেখে মন্ত্রী নিজেও বৈঠকে যাননি। সাবধান তখনই হওয়ার দরকার ছিল।  

তখন সাবধান হলে আজ পিয়াজ নিয়ে এত যন্ত্রণায় পড়তে হতো না। এত সমস্যা হতো না। মানুষ ভোগান্তিতে পড়ত না। দেশে সংকট রেখে মন্ত্রী সাহেব চলে গেলেন বিদেশে মেলা করতে। সংকটমুহূর্তে বিদেশ সফরের এত কী দরকার? আগে দেশের সংকট নিরসন করুন, তারপর বিদেশ যান। মানুষের সংবেদনশীলতার প্রতি শ্রদ্ধা দেখান। মানুষ যখন দেখবে আপনি বিপদের সময় পাশে আছেন তখন ব্যর্থ হলেও আপনার প্রতি সহানুভূতি থাকবে সবার। সংকট নিরসনে আন্তরিকতাটুকুই দেখতে চায় সবাই।  

এটুকু না দেখলে মানুষ হতাশ হয়, কষ্ট পায়, ব্যথিত হয়। সবারই বোঝা দরকার সংকট কখনো দীর্ঘস্থায়ী হয় না। কিন্তু ক্ষতটুকু থেকে যায়। খারাপ দৃষ্টান্ত সব সময় উদাহরণ হিসেবে আসে। এখনো প্রয়াত মন্ত্রী কাজী জাফরকে চিনি নিয়ে খোঁটা শুনতে হয়। এ সুযোগটি মানুষকে দেওয়ার কী দরকার? এ নিয়ে বেশি কথা বললে আবারও বলবেন, আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার বেশি হয়। অপপ্রচার দুনিয়ায় নতুন কিছু নয়।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিটলারের তথ্যমন্ত্রী ছিলেন গোয়েবলস। তার কাজ ছিল অসত্য তথ্য প্রচার। অপপ্রচারে দুনিয়ায় তার কোনো তুলনা ছিল না। পোল্যান্ড আক্রমণের আগেই তিনি জার্মান রেডিওতে সম্প্রচার করলেন, হিটলারের সেনারা পোল্যান্ডে বসে এখন চা পান করছে। ওদের বিয়ারও খারাপ নয়। কোনো বাধা ছাড়াই পোল্যান্ড দখল নিয়ে নিয়েছে জার্মান সেনারা। এ জয় পোল্যান্ড দিয়ে শুরু।

তারপর অন্য দেশগুলোয় এভাবেই যাবে জার্মান সেনারা। তখন ছিল রেডিওর যুগ। মানুষ রেডিও শুনত। গোয়েবলস চিন্তা করলেন, জনগণকে রেডিও উপহার দিলে কেমন হয়। তাই করলেন। জার্মানদের মধ্যে একটা নেশা ধরালেন গোয়েবলস।  

এই নেশা খবরের নেশা। হিটলারকে বিশ্বজয়ের নায়ক বানানোর নেশা। এই যুগে মানুষের নেশা মেইনস্ট্রিম মিডিয়ার প্রতি নেই। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক নতুন নেশা তৈরি করেছে। সব বয়সের মানুষ এ নেশায় আসক্ত। আর এ নেশাতেই হচ্ছে সর্বনাশ। ফেসবুকের কবলে পড়ে কত ঘরসংসার ভাঙছে তার ঠিকঠিকানা নেই। ক্ষণিকের প্রেম-ভালোবাসারও শেষ নেই। চেনা নেই, জানা নেই ফেসবুক-ফ্রেন্ড।  

এরপর এই বন্ধুত্ব চলতে থাকে অনেক দূর। কবি নির্মলেন্দু গুণ বলেছেন, ‘রাত্রিভর স্বপ্ন দেখে ভোর সকালে ক্লান্ত, যাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখা, সে যদি জানত। ’ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এত জানাজানির কিছু নেই। হঠাৎ কথা, তারপর অনেক কিছু। এখানে একদল ব্যস্ত প্রেম নিয়ে। আরেক দল ব্যস্ত মানুষের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা নিয়ে। আরেক দলের কাজ গুজব ছড়ানো।  

এ গুজব ছড়ানো গ্রুপগুলোই এখন শক্তিশালী। ভয়াবহ মিথ্যাচার ছড়ানো হয় গোয়েবলস কায়দায়। যাচাই-বাছাইয়ের সুযোগ নেই। যার যা মনে হয় তাই করেন। সমাজের নষ্ট মানুষরা একটা নতুন ঠিকানা পেয়েছে। জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের অনেক ঘটনার উৎপত্তিও সামাজিক গণমাধ্যম। হলি আর্টিজানের ওই তরুণদের বেহেশতের লোভ দেখিয়ে সংগ্রহ করা হয়েছিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে। আহারে আমাদের মেধাবী তরুণদের কীভাবে নষ্ট করে দিচ্ছে ওরা। গোয়েবলসের একটি কথা আছে, ‘একটি মিথ্যাকে বারবার প্রচার কর, একসময় সবাই এই মিথ্যাই বিশ্বাস করতে থাকবে। ’ 

আজব এক সমাজে বাস করছি। মানুষের নীতি-আদর্শ অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। লোভ-লালসার মাঝে চলে গেছে গোটা সমাজ। হিংসা-বিদ্বেষ-ঈর্ষার অনল পুড়িয়ে দিচ্ছে চারপাশ। মাঝে মাঝে কষ্ট লাগে। এমন তো হওয়ার কথা ছিল না। সুস্থতা ও স্বাভাবিকতা কেন এভাবে হারিয়ে যাবে? মনুষ্যত্ববোধটুকু কেন থাকবে না?

লেখক: সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রতিদিন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০১৯

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।