ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

মুক্তমত

বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিরতা শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ বিপন্ন করে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৮, ২০১৯
বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিরতা শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ বিপন্ন করে

বিভিন্ন সূচকে বেশ ভালো করছে বাংলাদেশ। গত জানুয়ারিতে প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের অর্থনৈতিক স্বাধীনতার সূচকে সাত ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ। পেছনে ফেলেছে ভারত-পাকিস্তানকেও। তথ্যপ্রযুক্তিসহ ক্রমবর্ধনশীল খাতে দেশটির অগ্রগতি নজর কেড়েছে বিশ্বের।

উন্নত বিশ্বের কাতারে পৌঁছাতে বাংলাদেশকে সব খাতেই জোরালো নজর দিতে হবে। বিশেষ করে দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়ন।

এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভূমিকা অগ্রগণ্য। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদেরও তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবতে হবে।  

গুরুত্ব দিতে হবে নিজেকে প্রস্তুত করার দিকে। কারণ আসন্ন চতুর্থ শিল্পবিপ্লব বা ফোর্থ ইন্ডাস্ট্রিয়ালাইজেশনের যুগে তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ কর্মীর বিকল্প নেই।
 
সাম্প্রতিক বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বা শিক্ষকদের নিয়ে একটা ষড়যন্ত্র হচ্ছে। শুধু ষড়যন্ত্র-ই করা হচ্ছে বিষয়টা এমন নয়, দেশের ভবিষ্যতকে নষ্ট করে দেওয়ারও পাঁয়তারা চলছে। আর এজন্যই পরিকল্পিতভাবে এসব করে যাচ্ছে একটি চক্র।
 
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বেশ ভালো করছে। সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসজুড়েই একটা স্থিতিশীল পরিবেশ বিরাজ করছে। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহসহ অন্যান্য সদস্যরাও সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছেন।
 
একটা অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে চাই, ব্যক্তিগতভাবে আমি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হই, তখন তিনবছর বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বন্ধ ছিল। মেধাবী শিক্ষার্থীরা রীতিমতো বসেছিল। তারা পড়াশোনা করতে পারেনি, গবেষণা করতে পারেনি। এতে দেশ অনেক পিছিয়ে গেছে। এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে সঠিক গন্তব্যে নিয়ে যাচ্ছেন। সেক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকার কোনো সুযোগ নেই।
 
বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যদি সঠিক পথে না চলে বা শিক্ষার্থীরা যদি এই জায়গাটায় অনুধাবণ না করে যে, তাদের ভবিষ্যৎ তাদেরই নির্মাণ করতে হবে। তাহলে ভুক্তভোগী হতে হয়, মূলত তাদেরই। এক্ষেত্রে তারা যদি নিজেদের ভবিষ্যতকে গুরুত্ব না দেয়, বিশ্ব সম্পর্কে ওয়াকিবহাল না হয়, তাহলে তো এগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।  

আমরা পিছিয়ে পড়বো। এক্ষেত্রে কারও উসকানি কিংবা প্ররোচণায় নয়, শিক্ষার্থীদের নিজের সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ গড়তে এবং দেশের সম্পদ হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে পাঠে মনোনিবেশ করতে হবে।
 
উচ্চশিক্ষা একটি দেশের উন্নয়নের অন্যতম সোপান। এ লক্ষ্যেই স্বাধীনতার পর প্রথম বিজয় দিবসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইউজিসি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। যে সংস্থাটি এখন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অভিভাবক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে চলেছে।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনা ছিল, ‘ছাত্র ভাইয়েরা, লেখাপড়া করেন। ডিগ্রি নিয়ে লাভ হবে না। ডিগ্রি নিয়ে মানুষ হওয়া যায় না। ডিগ্রি নিয়ে নিজের আত্মাকে ধোঁকা দেওয়া যায়। মানুষ হতে হলে লেখাপড়া করতে হবে। ’

বর্তমানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে যে অশান্ত পরিবেশ তৈরির চেষ্টা চলছে বা তৈরি করা হচ্ছে, এতে ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যতটাই নষ্ট করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তাদের ভবিষ্যৎ মানেই তো দেশের ভবিষ্যৎ। দেশের ভবিষ্যত যদি নানা অপকর্মে জড়িয়ে নষ্ট হয়ে যায় তাহলে ভূগতে হবে আমাদের। তাই তরুণদের জনসম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।  

বাংলাদেশ প্রযুক্তিখাতে বেশ ভালো করছে। ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ এখন বাস্তব। শহর থেকে গ্রামে প্রযুক্তির প্রসার ঘটেছে। আর এই প্রযুক্তিই সমাজের দুর্নীতি রোধ করবে।
 
প্রযুক্তি-ই মানুষকে দুর্নীতি থেকে বের করে আনতে পারে। সেটা ইউরোপ, কানাডা, আমেরিকাসহ বিভিন্ন উন্নত দেশ করে দেখিয়েছে। প্রযুক্তির কল্যাণে দেখেছি এখন এসব দেশের সবাই ট্যাক্স পে করছে।  

আগে নিউইয়র্কে দেখেছি, যারা ট্যাক্সিচালক রয়েছেন, তারা আগে ট্যাক্স পে করতেন না। কিন্তু প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে এখন তারা ট্যাক্স পে করছেন। আর ক্রেডিট কার্ড থেকে শুরু করে সব জায়গাতেই কিন্তু স্বচ্ছতা চলে আসছে। দুর্নীতি কমে গেছে।
 
আমরাও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ও তার আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের পরিকল্পনায় সেই পথেই হাঁটছি। এখন মানুষ ঘরে বসে দেশের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে মুহূর্তেই টাকা পাঠাতে পারছে।  

পণ্য কিনতে পারছে। এভাবে একটার সঙ্গে সঙ্গে আরেকটা বিষয় সংযুক্ত হয়ে যাচ্ছে। ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ এর মূল থিম এটাই। আর এই স্বপ্নটাই কিন্তু দুর্নীতিমুক্ত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার।  

আমাদের প্রধানমন্ত্রী একটা লক্ষ্য দিয়েছেন, সেটা ‘ভিশন ২০৪১’। আর সমৃদ্ধ বাংলাদেশের অপর কথাই হচ্ছে ‘টেকনোলজিক্যালি সাউন্ড বাংলাদেশ বা প্রযুক্তিনির্ভর বাংলাদেশ’।  

এর ফলে এক ক্লিকেই জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) মাধ্যমে সব কিছুই জানা সম্ভব হয়ে যাবে। যেমন ব্যাংকের সঙ্গে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং এর সঙ্গে নির্বাচন কমিশন, পাসপোর্ট, ইমিগ্রেশন- সব তথ্য চোখের সামনে চলে আসবে। সবই পারস্পারিক সংযুক্ত (কানেক্টেড) হয়ে যাবে। ফলে দুর্নীতি কমে আসবে। সব সেবা প্রদান ও গ্রহণ দ্রুত ও স্বচ্ছতার সঙ্গে সম্পন্ন হবে।
 
একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন।  আমরা এই জায়গাটায় পৌঁছাতে পারলে তখন সবই হয়ে যাবে অংশগ্রহণমূলক বা পারফরমেন্স বেজড। কাজের মধ্যে ডুবে যাবে সবাই। কাজ দিয়ে দেশের সেবা করবে।  

আমরা একটা ‘পারফরমেন্স বেজড সোসাইটি’ পাবো। এতে কর্মীর সঠিক মূল্যায়নও হবে। কারণ কে কতটুকু কাজ করেছে বা পারফরমেন্স দেখিয়েছে তা মেশিন-ই বলে দেবে। মেশিন তো মিথ্যা বলবে না।
 
একটা কথা শোনা যায়, দুর্নীতি থেকে গেলে ‘সমৃদ্ধ বাংলাদেশ’ কিভাবে হবে? আসলে দুর্নীতি থাকবে না। প্রযুক্তিই আমাদের সেখান থেকে সরিয়ে নেবে। এখন যে দুর্নীতিগ্রস্তদের ধরা হচ্ছে তাও কিন্তু বিভিন্ন প্রযুক্তির মাধ্যমেই। সামনে আরও ভালো করে ধরা যাবে।  

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চাইছেন, আমাদের ‘পারফরমেন্স বেজড সোসাইটি’ প্রতিষ্ঠা হোক। এটা তার ভিশনারি প্ল্যান। যার মাধ্যমে আমাদের সুন্দর বাংলাদেশ গড়ে উঠবে।

বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা যেকোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান-শিক্ষার্থীদের নিজেকে দক্ষ করতেই হবে। ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ আমাদের সে সুযোগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। বর্তমান সরকার সব পেশার দিকেই সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে।
 
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এখন দক্ষকর্মী হিসেবে বাংলাদেশিরা ভালো করছেন। তবে আমাদের যে জনশক্তিকে ‘লেবার ফোর্স’ হিসেবে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে পাঠাচ্ছি; তা যদি দক্ষ হিসেবে পাঠাতে পারি তাহলে কয়েকগুণ রেমিট্যান্স বেড়ে যাবে। আমাদেরও এক্ষেত্রে আইটি বেজড প্রজন্ম তৈরির উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে।
 
ভারতও কিছু সার্ভিসে পৃথিবীতে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে অন্যতম সফটওয়ার ইন্ডাস্ট্রি। আমাদেরও সে সুযোগ আছে। তাই বিপুল পরিমাণ জনসংখ্যাকে সম্পদে পরিণত করে এই সুযোগটাকে কাজে লাগাতে হবে এবং আমরা তা পারবো। আর সে দায়িত্বটা ঘুরে ফিরে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিতে হবে।  

আমাদের শিক্ষার্থীরা যে মেধাবী, এতে দ্বিমত নেই। বিশ্ববিদ্যালয়, ট্রেনিং সেন্টার-যেখানেই গিয়েছি দেখেছি যে, তাদের যদি সুযোগ দেওয়া যায়, মোটিভেশন দেওয়া হয় তাহলে তারা পারে। এই মোটিভেশন ও সুযোগ তৈরির দায়িত্বটাই বিশ্ববিদ্যালয়কে নিতে হবে।

একুশ শতাব্দীর এই সময়ে বিশ্ব হাতের মুঠোয় চলে এসেছে। তা হয়েছে ১৯৬৯ সালে ইন্টারনেট উদ্ভাবনের মাধ্যমে। সামনে যে বিপ্লব অপেক্ষা করছে সেটাও প্রযুক্তির। তা হচ্ছে ইন্টারনেট অব থিংসে’র মতো বিষয়ের মাধ্যমে। এর মধ্য দিয়েই বাংলাদেশও ‘গ্লোবাল ভিলেজে’র সত্যিকারের অংশ হতে যাচ্ছে।  

আমরা কানেক্টেড যুগে বাস করছি। এই যুগে বাংলাদেশের বরিশালের প্রত্যন্ত গ্রামে কী হচ্ছে, আমেরিকার ভার্জিনিয়ায় কী হচ্ছে কিংবা অ্যান্টার্টিকায় কি ঘটছে তা আমাদের শিক্ষার্থীরা মুহূর্তেই জেনে যাচ্ছে।
 
এখানে পিছিয়ে থাকার কোনো সুযোগও নেই। এই কানেক্টেড বিশ্বে সবাই একটা ছন্দে কাজ করছে। সবাই একটা সুপার ব্রেইনের মতো একই বৃন্তে গ্রন্থিত। এখানে কোনো জায়গায় যদি আমরা পিছিয়ে পড়ি তাহলে মূল প্রতিযোগিতা থেকেই সটকে পড়বো।  

এই কানেক্টেড বিশ্বের সুবিধা হলো- নিজেদের দক্ষ করতে পারলেই অনেক ভালো করতে পারবো এবং এগিয়ে যেতে পারবো। পাশাপাশি কোনো কোনো ইন্ডাস্ট্রিতে নেতৃত্বেও দিতে পারবো।
 
প্রযুক্তির কল্যাণ-অকল্যাণ দুটোই আছে। শিক্ষার্থীদের অকল্যাণ পরিহার করে মানুষের কল্যাণে প্রযুক্তিকে কাজে লাগাতে হবে। একটা বিষয় লক্ষ্যণীয়, আমাদের ছাত্র-ছাত্রীদের অন্য কাজে জড়িয়ে পড়তে দেখতে পাই। অনেকেই মাদক, চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মে জড়িয়ে যাচ্ছে। যা খুবই দুঃখজনক।

আমাদের মোট জনসংখ্যার ৬০ শতাংশ তরুণ-তরুণী ২৫ বছরের নিচে। আর আট কোটি যুবক ১৫-৩৫ বছরের। এটা আমাদের দেশের জন্য ‘মেইন মেশিন’। এই মেশিনটাকে যদি আমরা হাইটেক ইন্ডাস্ট্রি কিংবা হাই পারফরমেন্স জবের জন্য তৈরি করতে পারি তবেই ‘ভিশন ২০৪১’ পৌঁছানো সহজ হবে। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন করতে পারে। যাতে ছাত্রদের মাঝে এই সুযোগটাকে কাজে লাগানোর স্পৃহা বেড়ে যায়।

বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের একটা অংশ রাজনীতির নামে নানা অপকর্মে জড়িয়ে যাচ্ছে। এটা কখনই কাম্য নয়। রাজনীতি করবে- অবশ্যই সেটা মানুষের কল্যাণে, দেশের কল্যাণে। ক্যারিয়ার নষ্ট করে অপরাজনীতিতে জড়িয়ে গেলে শেষে নিজেরই ক্ষতি। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) একটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে।  

এটা কখনই কাম্য নয়। আর ক্যাম্পাসে কোনো হত্যাকাণ্ড তো অবশ্যই কাম্য নয়। এ ঘটনায় জড়িতদের অবশ্যই বিচার হবে। তবে এ ইস্যু নিয়ে হাজারো শিক্ষার্থীর জীবন নষ্ট করা যাবে না। শিক্ষার্থীদের জীবন নষ্ট করা মানে দেশের ভবিষ্যৎ নষ্ট করা।  

একটা অপকর্ম তো আরেকটা অপরাধ দিয়ে প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। এতে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যত ধ্বংস হয়ে যায়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা বলা যায়। সেখানে অস্থিতিশীল পরিবেশ বিবেচনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা-কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এতে শিক্ষার্থীদেরই ক্ষতি হচ্ছে বেশি।

এভাবে চলতে থাকলে আমরা উন্নত বিশ্বে যেতে পারবো না। উন্নত বিশ্বে এটা কখনও কাম্য নয়। উদাহরণ দিলে যুক্তরাষ্ট্রের স্বনামধন্য ভার্জিনিয়া পলিটেকনিক ও স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা বলা যায়। যা ভার্জিনিয়া টেক নামে অধিক পরিচিত। ২০০৭ সালের ১৬ এপ্রিল গুলি করে সেখানে ৩২ জন শিক্ষার্থীকে মর্মান্তিকভাবে মেরে ফেলা হয়।  

এ ঘৃণ্য হামলার লক্ষ্য ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে উন্নত বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। কিন্তু এরপরেও বিশ্ববিদ্যালয়টি একদিনও বন্ধ ছিল না। সাধারণ শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনে প্রভাব ফেলে এমন কোনো কাজ বিশ্ববিদ্যালয়টি করেনি।
 
‍উন্নত বিশ্বে যেতে হলে আমাদের মনমানসিকতাকেও উন্নত করতে হবে। অপরাধ করলে কিংবা অপকর্ম করলে আইন আছে, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা হবে। দোষী হলে শাস্তি পাবে। ইউজিসি রয়েছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় রয়েছে, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) রয়েছে। তারা অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে। তাই বলে তৃতীয় বিশ্বের মতো আচরণ, এটা কখনই করা যাবে না।  

আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যখন ইচ্ছা উপাচার্যকে (ভিসি) ঘেরাও করে রাখা হচ্ছে, শিক্ষকদের ঘেরাও করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। এমন পরিস্থিতি তৈরি করা মানে প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নকে বাধাগ্রস্ত করে দেওয়া, উন্নত বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করা। আমি একজন শিক্ষক হিসেবে কখনো চাইবো না আমাদের শিক্ষার্থীদের দক্ষ হিসেবে গড়ে ওঠার জায়গা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো একদিনের জন্যও বন্ধ থাকুক।
 
সে লক্ষ্যে ইউজিসিও কাজ করে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদেরও বুঝতে হবে, নিজের ভবিষ্যৎ যেন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে না যায়! কারণ এই শিক্ষার্থীরাই তো বাংলাদেশের সম্পদ, যারা উন্নত বিশ্বের নেতৃত্ব দেবে।

লেখক: সদস্য, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয়য় মঞ্জুরী কমিশন

বাংলাদেশ সময়: ০৬৩৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০১৯
টিএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।