ঢাকা: চলমান সংকট নিরসনে জাতীয় ঐক্য’র কোনো বিকল্প নেই। কালবিলম্ব না করে এখনই জাতীয় ঐক্য’র উদ্যোগ নিতে হবে।
বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) প্রেসক্লাবে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) আয়োজিত সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে জাতীয় এক্য প্রতিষ্ঠায় ‘তৃণমূলে গণতন্ত্রের প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি’র সভাপতি আ স ম আব্দুর রবের সভাপতিত্বে গোলটেবিল আলোচনায় অংশ নেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক কমরেড খালেকুজ্জামান, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন, বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টির সাইফুল ইসলাম, নাগরিক ঐক্য’র নেতা শহীদুল্লাহ কায়সার প্রমুখ।
এছাড়া গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরউল্লাহ চৌধুরী ও ঢাবি শিক্ষক আসিফ নজরুল গোল টেবিল আলোচনায় অংশ নেন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বলেন, আমি পরিস্কার ভাষায় বলতে চাই প্রকৃত জাতীয় ঐক্য না হলে ক্ষমতাসীনরা মারা যাবেন। বাংলাদেশ মারা যাবে। কেউ বাঁচতে পারবে না। তাই জাতীয় ঐক্যে বাধা না হয়ে সব রাজনৈতিক দলকে সঙ্গে নিয়ে আজই বসুন। আর সময় নেই। আকাশ-বাতাস-তরুলতা জাতীয় ঐক্য চাইছে।
তিনি বলেন, ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ৯৮ ভাগ আসন পেয়ে বিজয়ী হয়েছিল। তারপরও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় সংগ্রাম পরিষদ গঠন করেছিলেন। সেখানে আওয়ামী লীগ যেমন ছিল, তেমনি মুসলীম লীগ, নেজামে ইসলাম পার্টি এমনকি জামায়াতও ছিল।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে কাদের সিদ্দিকী বলেন, আপনার পিতার নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হয়েছে। আপনার নেতৃত্বে দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হোক, সেটা আমরা চাই। কিন্তু সে রকম লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। আপনি বলছেন জাতীয় ঐক্য হয়ে গেছে। কার সঙ্গে হয়েছে? এ সব ছল-চাতুরি রাখুন। জাতীয় ঐক্য’র উদ্যোগ নিন।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরউল্লাহ চৌধুরী বলেন, আপনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করেন অথচ বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকীকে না ডেকেই জাতীয় ঐক্য করে ফেললেন। সংবিধানে বিশ্বাস করেন, অথচ ড. কামাল হোসেনকে ডাকলেন না। আ স ম আব্দুর রব আপনার ডাক পেলেন না?
তিনি বলেন, জামায়াতের ব্যাপারে আপনার আপত্তি থাকাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু অন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে আজই জাতীয় ঐক্য’র প্রস্তুতি নিন। বসে থাকার সময় এখন না।
সভাপতির বক্তব্যে জেএসডির সভাপতি আ স ম আব্দুর রব বলেন, সরকারের দম্ভ ও অহমিকা দেখে মনে হচ্ছে, তারা এ জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ নির্মূল করতে চান না। এটিকে জিইয়ে রেখে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চান।
তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে গুলশান ও শোলাকিয়া হামলার আগাম খবর গোয়েন্দা সংস্থার কাছে ছিল। তাহলে এটিকে প্রতিরোধ করা হল না কেন। এত অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে সন্ত্রাসীরা সেখানে প্রবেশ করলো কীভাবে?
জাতীয় ঐক্য’র আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, পুলিশ-র্যাব এমনকি সেনাবাহিনী দিয়েও এ সমস্যার সমাধান হবে না। সুতরাং ক্ষমতায় থাকার জন্য জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদকে ইস্যু না বানিয়ে এখনই জাতীয় ঐক্য’র ডাক দিন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৭ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০১৬
এজেড/এসএইচ