ঢাকা: রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা বন্ধে মায়ানমার সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টিতে বাংলাদেশের আরও কার্যকর ভূমিকা, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোতে মায়ানমারকে একঘরে করার উদ্যোগ এবং শরণার্থীদের রক্ষার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে গণসংহতি আন্দোলন।
মায়ানমারকে কেন্দ্র করে দেশে যেকোন সাম্প্রদায়িক উস্কানি প্রতিরোধেরও আহ্বান জানান গণসংহতির নেতারা।
বুধবার (২৩ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য ফিরোজ আহমেদ, কেন্দ্রীয় নেতা মনিরউদ্দীন পাপ্পু প্রমুখ।
এছাড়াও সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা বাচ্চু ভূঁইয়া, আবু বকর রিপন, শ্যামলী সরকার, আরিফুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট জান্নাতুল মরিয়ত, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি সৈকত মল্লিক।
সমাবেশে জোনায়েদ সাকি বলেন, মায়ানমার কার্যত সেনাবাহিনী পরিচালিত একটি রাষ্ট্র। সারা পৃথিবী আকাঙ্ক্ষা করেছিল অং সাং সুচি নির্বাচনে বিজয়ী হলে রোহিঙ্গাসহ অন্যান্য জাতিসমূহের ওপর নিপীড়ন বন্ধে ব্যবস্থা নেবেন। কিন্তু বর্তমান গণহত্যার ঘটনায় আমরা সুচির মৌনসমর্থকের ভূমিকাই কেবল দেখতে পাচ্ছি। অন্যদিকে বাংলাদেশসহ প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলো এই গণহত্যা বন্ধে যে কূটনৈতিক চাপ সৃষ্টি করতে পারতো, সে রকম কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ফলে এক তরফাভাবে গণহত্যা, ধর্ষণ ও পোড়ামাটি নীতির শিকার হচ্ছেন রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী।
জোনায়েদ সাকি আরও বলেন, মায়ানমারকে এই গণহত্যা থেকে বিরত রাখতে জাতিসংঘের যে ভূমিকা রাখার কথা ছিল, সেটাও কার্যত অনুপস্থিত। তারা কেবল বাংলাদেশকে শরণার্থীদের গ্রহণ করতে বলেই দায় সারছে। কিন্তু গণহত্যা বন্ধ না করা এবং রোহিঙ্গাদের নাগরিক অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিত না করা পর্যন্ত মায়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক অবরোধ আরোপ করাই ছিল জাতিসংঘের কর্তব্য।
জোনায়েদ সাকি হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেন, মায়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী যেন ধর্মীয় জঙ্গিবাদে জড়িয়ে না পড়ে, সেটা দেখাও প্রতিবেশী হিসেবে বাংলাদেশের কর্তব্য। বাংলাদেশ এই উদ্বাস্তুদের প্রতি দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে উগ্রপন্থার এই আগুনে আমাদেরও ক্ষতিগ্রস্ত হবার সম্ভাবনা রয়েছে। অবিলম্বে তাই উদ্বাস্তু রোহিঙ্গাদের প্রাণরক্ষা করে তাদের প্রতি মানবিক কর্তব্য পালন করা যেমন দরকার, তেমনি বাংলাদেশের নিজের স্বার্থেও প্রয়োজন মাদক কারবারী, অপরাধচক্র ও পাচারকারী গোষ্ঠীগুলোর খপ্পর থেকে তাদের মুক্ত রাখা।
মায়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর হামলাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে যেন কোনো সাম্প্রদায়িক ও জাতিগত সহিংসতার উস্কানি না তৈরি হয়, কোনো সুযোগসন্ধানী গোষ্ঠী যেন পরিস্থিতির সুযোগ না নিতে পারে, সেজন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান জোনায়েদ সাকি।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০১৬
পিআর/এমজেএফ