ঢাকা, মঙ্গলবার, ৪ ভাদ্র ১৪৩২, ১৯ আগস্ট ২০২৫, ২৪ সফর ১৪৪৭

অন্যান্য দল

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক বিষয়ে গণসংহতির গোলটেবিল

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১:১২, এপ্রিল ৩, ২০১৭
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক বিষয়ে গণসংহতির গোলটেবিল বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক বিষয়ে গোলটেবিল/ছবি: জিএম মুজিবুর

ঢাকা: সামরিক চুক্তি নয়, পানির ন্যায্য হিস্যার দাবি তুলেছেন ‘বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক: সমতা ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকের বক্তারা।

গণসংহতি আন্দোলন কেন্দ্রীয় পরিচালনা কমিটির উদ্যোগে সোমবার (০৩ এপ্রিল) সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে এ গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

গণসংহতির প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকির সভাপতিত্বে গোলটেবিল বৈঠকে স্বাগত বক্তব্য রাখেন গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম।

এরপর লিখিত বক্তব্য উত্থাপন করেন কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক পরিষদের অন্যতম সদস্য আবুল হাসান রুবেল।

গোলটেবিল বৈঠকে আলোচনা করেন তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক আহমেদ কামাল, পানি বিশেষজ্ঞ ম ইনামুল হক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক নাসিম আখ্‌তার হোসাইন, বাসদ-মার্কসবাদী কেন্দ্রীয় নেতা শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, সিপিবির কেন্দ্রীয় নেতা শাহ্ আলম, বাসদ-এর কেন্দ্রীয় নেতা বজলুর রশীদ ফিরোজ, মানবাধিকার কর্মী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, সঙ্গীতশিল্পী মাকসুদুল হক, সঙ্গীতশিল্পী অরূপ রাহী,  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক তানজিমউদ্দীন খান, অধ্যাপক মোশাহিদা সুলতানা প্রমুখ।

সভাপতির বক্তব্যে জোনায়েদ সাকি বলেন, ভারতের সাথে সমতার প্রশ্নটা যথাযথভাবে তুলতে হলে, করণীয় নির্ধারণ করতে হলে আগে আমাদের ভেতরের সমস্যার সমাধান করতে হবে। কোন বিষয়ে আমরা কী দাবি করবো, তার জন্য জাতীয় ভিত্তিতে একটা ঐক্য আমাদের প্রতিষ্ঠা করতে হবে, সে জন্য দরকার গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, কথা বলার পরিবেশ নির্মাণ। এটা ছাড়া কোনভাবেই গোটা দেশকে জাতীয় স্বার্থের প্রশ্নে এক করা যাবে না।

অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, আমাদের সরকারগুলো একদিকে যেমন জাতীয় প্রশ্ন বা দাবিগুলো কখনোই উত্থাপন করে না, অন্যদিকে ভারতীয় রাষ্ট্রের দাবিদাওয়া কীভাবে পূরণ করা যায়, সেই লক্ষ্যেই তৎপর থাকে। ভারতের জনগণকে বাংলাদেশ বিষয়ে একরকম অন্ধকারে রাখা হয়, ফলে তিতাস নদীর ওপর আড়াআড়ি বাঁধ দিয়ে ট্রানজিটের পণ্য পরিবহনের মতো ভয়াবহ ঘটনাও এখানে ঘটে চলেছে। পানির ন্যায্য হিস্যা থেকে আমরা বঞ্চিত হচ্ছি, অন্যদিকে রামপালে ভারতীয় স্বার্থে সুন্দরবন ধ্বংসকারী কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের কাজ চলছে।
   
অধ্যাপক আহমেদ কামাল বলেন, ভারত ক্রমাগত হিন্দুত্ববাদী চেহারা ধারণ করে এই অঞ্চলে সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতিকে তপ্ত করে তুলছে। বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদকে মোকাবেলা করতে হলে উপমহাদেশের জনগণের মৈত্রী প্রতিষ্ঠা করতে হবে। অন্যদিকে ভারত রাষ্ট্রের আধিপত্যের বিরুদ্ধেও সোচ্চার হতে হবে।

ম ইনামুল হক ভারতের ‘পানি রাজনীতির’ কথা উল্লেখ করে বলেন, ভারতীয় জনগণের অবর্ণনীয় দুর্দশার কারণ ঘটানো ফারাক্কা বাঁধ বাংলাদেশকেও শুকিয়ে ধ্বংস করছে। আমরা ফারাক্কা নিয়ে কথা বলছি না, কিন্তু বিহারের মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যেই এই বাঁধ ভেঙে ফেলার আহবান জানিয়েছেন।

শিল্পী মাকসুদুল হক বলেন, বাংলাদেশের শিল্পী, গণমাধ্যম এবং সংস্কৃতির ওপর এক ধরনের পরোক্ষ অথচ কার্যকর নিয়ন্ত্রণ ভারত আরোপ করে রেখেছে, যদিও বাংলাদেশে এটা একদমই নেই।

অধ্যাপক তানজিমউদ্দীন খান বলেন, অস্ত্র বিক্রেতা হিসেবে ভারত আন্তর্জাতিক বাজারে আবির্ভূত হতে চায়, বাংলাদেশের সাথে প্রতিরক্ষা চুক্তির পথ ধরেই এই ক্ষেত্রে তারা অগ্রসর হবার কৌশল নির্ধারণ করেছে।

অন্যান্য বক্তারা জনগণকে স্বাস্থ্য-শিক্ষা-পুষ্টিসেবা প্রভৃতি থেকে বঞ্চিত করে চীন থেকে ডুবোজাহাজ কেনা কিংবা ভারত থেকে অস্ত্র ক্রয় চুক্তির নিন্দা করে বলেন, এই অঞ্চলের শাসকরা জনগণের মাঝে পারস্পরিক শত্রুতা জিইয়ে রেখে নিজেদের গদিকেই অক্ষুণ্ণ রাখতে চায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৩, ২০১৭
পিআর/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

অন্যান্য দল এর সর্বশেষ