শুক্রবার (১০ নভেম্বর) এক যৌথ বিবৃতিতে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য ফিরোজ আহমেদ, তাসলিমা আখ্তার, হাসান মারুফ রুমি শোক প্রকাশ করেন।
গণসংহতি আন্দোলনের নেতারা বলেন, আ ফ ম মাহবুবুল হকের অকাল প্রয়াণে বাংলাদেশ হারিয়েছে একজন অকুতোভয় মুক্তিযোদ্ধা, দৃঢ়চিত্ত রাজনীতিবিদ আর মানুষের মুক্তির সংগ্রামের একজন নেতাকে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আ ফ ম মাহবুবুল হক ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী এবং মুক্তিযুদ্ধের সময়ে মুজিব বাহিনীর সংগঠক হলেও তারা ছিলেন বাংলাদেশের তরুণদের সেই ধারা যারা মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে সত্যিকারের শোষণহীন ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। ফলে মুক্তিযুদ্ধের পরপর নতুন রাষ্ট্রটির উল্টোপথে যাত্রা তারা মেনে নেননি। স্বপ্নভঙ্গ হওয়া এই তরুণরা অচিরেই জাসদ গঠন করেন। জাসদ ছাত্রলীগের হয়ে ১৯৭৩ সালের ডাকসু নির্বাচনে ২৬ বছরের তরুণ মুক্তিযোদ্ধা আ ফ ম মাহবুবুল হক বিপুল ভোটের ব্যবধানে সরকারি ছাত্র সংগঠনের জোটকে পরাজিত করলেও ইতিহাসে সেই প্রথমবারের মতো ডাকসু নির্বাচনের ব্যালট বাকশো ছিনতাই করা হয়। কিন্তু আ ফ ম মাহবুবুল হক কিংবা তাদের চেতনার বিজয়ই এই ঘটনার মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়।
পরবর্তীতে আ ফ ম মাহবুবুল হক জাসদের রাজনীতির সুনির্দিষ্ট সমালোচনা হাজির করে বাসদের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা হন। ৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে তিনি ছিলেন অন্যতম নেতা। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে ও সাম্প্রদায়িক রাজনীতির প্রতিরোধে গড়ে ওঠা আন্দোলনেও তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির নেতৃত্বে গড়ে ওঠা জাতীয় সম্পদ রক্ষার আন্দোলনের সূচনা পর্ব থেকে দায়িত্ব পালন করেছেন মাহবুবুল হক।
২০০৪ সালে প্রাতঃভ্রমণকালে রহস্যজনক সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে দীর্ঘদিন তিনি কানাডাতে তার কন্যার কাছে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তার শূন্যতা বাংলাদেশের রাজনীতিতে অনুভব করেছেন এদেশের প্রতিটি গণতন্ত্রমনা দেশপ্রেমিক মানুষ।
নেতৃবৃন্দ বলেন, আ ফ ম মাহবুবুল হকের জীবন বাংলাদেশের জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার ও সংগ্রামের সাথে অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িয়ে আছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে তিনি চিরকাল শ্রদ্ধার সাথে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০১৭
এমজেএফ