ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অন্যান্য দল

‘গুমের অভিযোগ নেয় না পুলিশ’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০১৭
‘গুমের অভিযোগ নেয় না পুলিশ’ আলোচনা সভার বক্তারা

ঢাকা: নিখোঁজ হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান দাবিতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে সন্ধান দাবি করলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পুলিশ অভিযোগই নেয় না বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।

রোববার (১০ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে এক আলোচনা সভায় এমন মন্তব্য করেন তিনি।  

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, অভিযোগ নিলেও সেগুলোর তদন্ত কাজ এগোয়নি।

গণমাধ্যমে এসব নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলেও পুলিশ পাত্তা দেয় না।

বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে ‘সন্তানহারা মায়েদের ৪ বছর অতিবাহিত, অপেক্ষার শেষ কোথায়?, মায়ের ডাক- সন্তানদের মায়ের কোলে ফিরিয়ে দাও’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করেন স্বজনহারা পরিবারের সদস্যরা।

এ সময় মান্না তার বক্তব্যে বলেন, আমি নিজেই গুমের শিকার হয়েছিলাম। গুম নিয়ে বহু কথা বলার পরেও গুম হওয়া ব্যক্তিদের কোনো সন্ধান দেওয়া হচ্ছে না। এক পরিসংখ্যান উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত ছয় মাসে ৫২ জন গুম হয়েছে, বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে ৮৭ জন।

‘মানবতার মা নিজের মানবতার সাথে প্রহসন করছেন’ উল্লেখ করে মান্না বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন ব্রিটেনেও মানুষ গুম হয়। সেসব দেশে সরকারের বিরুদ্ধে, দেশের আইন-শৃঙ্খলার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ ওঠে না। অথচ আমাদের দেশে গুম হওয়া স্বজনদের পরিবার সরাসরি রাষ্ট্র বা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন।

মান্না বলেন, আমার ভয় হয়, কোনদিন আবার কোন এক মন্ত্রী বলে ফেলেন যে গুম, অপহরণ, ধর্ষণ আমাদের সংস্কৃতির একটি অংশ। দেশ যেন মগের মুল্লুক হয়ে গেছে। মানবতার মাতা যেন কানের ভেতর তুলা দিয়েছেন। তার কানে তাই কোন কথা ঢোকে না। মারা গেলে মানুষের জানাজা করা যায়, দোয়া করা যায়, কিন্তু যারা বছরের পর বছর নিখোঁজ রয়েছে, গুম হয়েছে তারা তো কিছুই করতে পারছে না। তাদের সান্ত্বনা পাবারও কোনো উপায় নেই।

আলোচনা সভায় উপস্থিত গুম হওয়া ৩৫ ব্যক্তির পরিবারের সদস্যরা নিখোঁজ স্বজনদের ফিরে পেতে সরকারের কাছে আকুতি জানান। এ সময় তাদের কান্না আর আহাজারিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জের পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে।

জাতীয় মানবাধিকার সমিতির মহাসচিব মঞ্জুর হোসেন ঈসার পরিচালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, অধ্যাপক সি আর আবরার, নিখোঁজ সাজেদুল ইসলাম সুমনের মা হাজেরা খাতুন, বড় বোন আখি, ছোটবোন সানজিদা ইসলাম তুলি, নিখোঁজ পারভেজ হোসেনের মেয়ে রিদিসহ আরও অনেকে।

এ সময় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেন, দেশে একের পর এক গুম, খুন, বিচারহির্ভূত হত্যাকাণ্ড চলছে। বিচার বিভাগের নিষ্ক্রিয়তাও এর জন্য দায়ী।

প্রাবন্ধিক ফরহাদ মাজহারের কথা উল্লেখ জাফরুল্লা চৌধুরী বলেন, আমি ফরহাদ মজহারের সাথে কিছুক্ষণ সময় কাটিয়েছি। পুলিশ, র‌্যাব সক্রিয় না থাকলে হয়তো তার মৃতদেহ পাওয়া যেত। অনুগ্রহ করে আপনারা এসব অমানবিক কাজ বন্ধ করুন। এসব বন্ধ না হলে মুক্তিযুদ্ধ অর্থহীন হয়ে যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০১৭
এসআইজে/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

অন্যান্য দল এর সর্বশেষ