মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর ফটোজার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাসিম বলেছিলেন ‘আমি লিখে দিতে পারি বিএনপি নির্বাচনে আসবে’।
নাসিমের এমন বক্তব্যের জবাবে বি চৌধুরী বলেন, উনারা সবকিছু লিখে দিতে পারেন। এসব হচ্ছে দম্ভ। এই দম্ভ এবং অহংকার করে আর যাই হোক জনগণের জন্য রাজনীতি করা যায় না।
বি. চৌধুরী বলেন, আমাদের রাজনীতির সর্বপ্রধান প্রায়োরিটি হওয়া উচিত জনগণ। একই সঙ্গে দুর্নীতি এবং সন্ত্রাসকে ঘৃণা করতে হব। যিনি দুর্নীতি সন্ত্রাসকে ঘৃণা করতে পারবেন না, তিনি রাজনীতি করতে পারবেন না। মানুষকে ভালোবাসতে হবে। যিনি মানুষকে ভালোবাসতে পারবেন না, তিনি কিভাবে দেশকে ভালোবাসবেন।
অর্থমন্ত্রীর সমালোচনা করে সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বলেন, উনি এমন একজন অর্থমন্ত্রী যে বলে দিলেন, সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা কোনো টাকাই না। তিনি আরো বলেন, (অর্থমন্ত্রী) ঘুষ কোনো অপরাধ নয়, এটা নাকি স্পিড মানি। এই স্পিড মানি দিলে কাজ তাড়াতাড়ি হয়ে যায়। একজন সিনিয়র রাজনীতিবিদ হয়ে তিনি এসব কথা কিভাবে বলেন। তার এই কথা শুনে লজ্জা হয়।
বি. চৌধুরী আরও বলেন, কোনো নির্বাচন ছাড়াই ১৫৪জন সংসদ সদস্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। তাদের মন্ত্রী বানানো হয়েছে। তাদের নিয়ে সংবিধান সংশোধন করা হয়েছে। এটা কিভাবে সম্ভব? এটা কি কোনো গণতান্ত্রিক কাজ?
প্রধান বক্তার বক্তব্যে জাসদ (জেএসডি) নেতা আসম আব্দুর রব বলেন, ৫ জানুয়ারির মতো কোনো নির্বাচন এদেশের জনগণ আর হতে দেবে না। দেশে রক্তগঙ্গা বয়ে যাবে। আমরা জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য সবাইকে নিয়ে আবার যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়বো। রাষ্ট্রে জনগণের সরকার কায়েমের জন্য আমরা যুক্তফ্রন্ট করেছি। তবে কোনো স্বাধীনতা বিরোধীকে নিয়ে আমরা রাজনীতি করবো না।
তিনি বলেন, আপোষে কোনো স্বৈরাচারি সরকার ক্ষমতা ছাড়ে না। মুখের কথায়ও ক্ষমতা ছাড়বে না। আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমেই এ সরকারকে নামাতে হবে।
প্রশাসনের পদোন্নতিকে গজবের সঙ্গে তুলনা করে আব্দুর রব বলেন, আজ আবার এক গজব নাজিল হয়েছে। সচিব, অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম-সচিবের পদ আছে ১২০০, কিন্তু প্রমোশন দেয়া হয়েছে ২৪০০ জনকে। পদ নাই শুধু প্রমোশন দেয়। ১০ জনের পদ আছে প্রমোশন দেয় ২০ জনকে। পিওন, আরদালি চাপরাশি থেকে শুরু করে সব সরকারি কর্মকর্তাদের বেতন দিগুণ করা হয়েছে। এসব করে ক্ষমতায় টিকে থাকা যাবে না। স্বৈরাচারি ফ্যাসিবাদী নাম ঘুচানো যাবে না।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কাকে বলে? প্রশ্ন করে আব্দুর রব বলেন, জনসভা, মিছিল করতে দেয়া হয় না। এটা কি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। এজন্য কি আমরা যুদ্ধ করেছিলাম?
মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর ১৩৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আজকের গণতন্ত্র’ শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করে গণসংস্কৃতি দল নামে একটি সংগঠন। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির সভাপতি এস আল মামুন।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নাল আবদিন ফারুক, আব্দুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন মনি প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৭
এমএইচ/এসএইচ