শনিবার (০১ ডিসেম্বর) রাজধানীর পুরানো পল্টনের মুক্তি ভবনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ‘ভিশন: মুক্তিযদ্ধ একাত্তর বাস্তবায়নে’ নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন দলটির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম।
এ সময় দলের সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম, প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুল্লাহ ক্বাফী রতন, সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্সসহ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে দুটি দলের নেতৃত্বে দেশে লুটপাট চলছে। এখন দেশের মূল দ্বন্দ্ব হলো একভাগ লুটপাটকারী সঙ্গে নিরানব্বই ভাগ জনগণের স্বার্থের দ্বন্দ্ব। দেশকে বাঁচাতে হলে বিকল্প পথ অনুসরণ করা আজ অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। দেশের মানুষ এর পরিবর্তন চায়। যা গণজাগরণ মঞ্চের উত্থান, নিরাপদ সড়কের আন্দোলনে সম্প্রতি কিশোর বিদ্রোহের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে।
‘‘তাই লুটপাটতন্ত্র, গণতন্ত্রহীন, সাম্রাজ্যবাদ ও সাম্প্রদায়িকতাকে পরাজিত করে লুটেরাদের ‘ব্যবস্থা বদলে’র লক্ষ্যকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘কাস্তে’ মার্কায় মনোনীত প্রার্থীদের পাশাপাশি বাম গণতান্ত্রিক জোটের ‘মই’ ও ‘কোদাল’ প্রার্থীদের ভোট দিয়ে বিজয়ী করুন। তারা বিজয়ী হলে দেশের উন্নয়নে ৩০ দফা কর্মসূচি বাস্তবায়নে কাজ করবো আমরা। ’’
সিপিপির ৩০ দফার মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হচ্ছে- নির্বাচনকালীন সরকারের বিধান সংবিধানে যুক্ত করা হবে, মেহনতি ও দরিদ্র প্রার্থীদের আর্থিক বাধা দূর করে সিপিবির ৫৩-দফা সুপারিশের ভিত্তিতে নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কার করা হবে।
পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস রোধ, পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষা বাতিলসহ শিক্ষার প্রসার ও মানোন্নয়ন করা। বিত্তবানদের জন্য কর রেয়াত বন্ধ ও প্রত্যক্ষ করের হার বৃদ্ধি এবং সাধারণ জনগণের ওপর আরোপিত পরোক্ষ করের অনুপাত কমিয়ে বিকল্প অর্থনৈতিক নীতি ও ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করা।
দারিদ্র্য, অনাহারী, বেকার, অসহায় মানুষের ন্যূনতম সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত, শহর ও গ্রামের মানুষের সুযোগ-সুবিধার বৈষম্য কমিয়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে।
ঘুষ দুর্নীতি-লুটপাটের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হবে। ভোক্তা অধিকার আইন কার্যকর করে দ্রব্য মূল্য নিয়ন্ত্রণ ও খাদ্যে ভেজাল রোধ করা।
জঙ্গিবাদ রুখতে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন, মাফিয়া-গডফাদারের দমন এবং অপরাধী চক্রের দেশি-বিদেশি অর্থ ও শক্তির উৎসগুলো উৎপাটন করে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ-দুর্বৃত্তায়ন-মাফিয়াতন্ত্রের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করা হবে।
এছাড়া যুবসমাজের তারুণ্য-সম্পদকে সর্বোচ্চ কাজে লাগানো, নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা, শিশু-কিশোর ও বৃদ্ধ-দুঃস্থ নাগরিকদের অধিকার নিশ্চিত করা এবং শহরের বস্তিবাসী, হকার ও নাগরিকদের জীবনমান উন্নয়ন করা, সংখ্যালঘুদের প্রতি বৈষম্য রোধ এবং তাদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা, তথ্য প্রযুক্তি, টেলিযোগাযোগ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সার্বজনীন করা।
নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের দাবিগুলো বাস্তবায়ন করে সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধ, যোগাযোগ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও যানজট রোধ করা এবং সাম্রাজ্যবাদী ষড়যন্ত্র রুখে দাঁড়ানোসহ স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতির ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক সম্পর্কে ও বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠা করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০১, ২০১৮
এমএফআই/এমএ