ঢাকা, রবিবার, ১৩ আশ্বিন ১৪৩২, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৫ রবিউস সানি ১৪৪৭

অন্যান্য দল

দমন-পীড়ন চালিয়ে অগ্রযাত্রাকে থামানো যাবে না: ঐক্যফ্রন্ট

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০:৩৭, ডিসেম্বর ২৯, ২০১৮
দমন-পীড়ন চালিয়ে অগ্রযাত্রাকে থামানো যাবে না: ঐক্যফ্রন্ট

ঢাকা: জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীদের ওপর দমন-পীড়ন চলছে অভিযোগ তুলে ফ্রন্টের সমন্বয় কমিটির প্রধান জগলুল হায়দার আফ্রিক বলেছেন, ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্টের মনোনীত ধানের শীষ প্রার্থীর এজেন্টদের টার্গেট করে গ্রেফতার করা হচ্ছে। এভাবে ঢালাও গ্রেফতারের মাধ্যমে দমন-পীড়ন চালিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে রাখা যাবে না। 

শুক্রবার (২৮ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর বিজয় নগরে ঐক্যফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ভবন প্রীতম-জামান টাওয়ারের পাশে পল্টন টাওয়ারের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে আফ্রিক এ কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন গণদলের চেয়ারম্যান এ টি এম গোলাম মাওলাসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা।

জগলুল হায়দার আফ্রিক বলেন, বারবার নির্বাচন কমিশনকে বলার পরও পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর আক্রমণাত্মক আচরণের বিন্দুমাত্র পরিবর্তন হয়নি। বরং দিনে দিনে বেড়েই চলেছে আক্রমণের ধরন। এদিকে ইন্টারনেটের গতি না কমানোর জন্য একাধিকবার আহ্বান জানানো হলেও তা মানা হচ্ছে না। নির্বাচনের দিন আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও নির্বাচন সংক্রান্ত সার্বিক খবরাখবর দ্রুত জানার স্বার্থে ফোর-জি সচল রাখার আহবান জানাচ্ছি আমরা।

তিনি অভিযোগ করেন, তফসিল ঘোষণার দিন কারাগারে ছিল ৯০ হাজার। বর্তমানে তা এক লাখ ছাড়িয়ে গেছে। এ অতিরিক্ত ১০ হাজার বন্দি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা-কর্মী। এছাড়া ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ৮৪৪টি মামলা হয়েছে এবং তাদের ওপর হামলা হয়েছে ২ হাজার ৮৯৬টি। এসব হামলায় নিহত হয়েছেন ৯ জন, আহত হয়েছে ১৩ হাজার। দিন দিন এ সংখ্যা জ্যামিতিক হারে বাড়ছে।  

ঐক্যফ্রন্টের সমন্বয় কমিটির প্রধান বলেন, বৃহস্পতিবার (২৭ ডিসেম্বর) রাতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সারাদেশে চিরুনি অভিযান চালিয়ে ঐক্যফ্রন্টের নেতা-কর্মী যেখানেই পেয়েছে গণহারে ধরেছে। গণগ্রেফতারের মাধ্যমে দেশের কারাগারকে ঐক্যফ্রন্টের নেতা-কর্মীদের কেন্দ্রে পরিণত করেছে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মনোনীত প্রায় দু’ডজন প্রার্থীই রয়েছেন কারাগারে।  

তিনি আরও বলেন, তফসিল ঘোষণার পর থেকে প্রার্থী নেতা-কর্মীদের ওপর পুলিশের গ্রেপ্তার-হয়রানি ও দমন-পীড়ন থেমে নেই। যেজন্য চলমান সহিংসতার নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। নির্বাচনের দিন ব্যাপক সহিংসতার আশঙ্কা করেছেন স্বয়ং মার্কিন রাষ্ট্রদূত। উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব। তাদের পক্ষ থেকে বারবারই বলা হচ্ছে, ভোটের নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য। কিন্তু ভীতিকর অবস্থায় কাঙ্ক্ষিত উন্নতি বা পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।

নির্বাচনের দিন অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়য়ের কর্মকর্তাদের প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) নির্দেশনা প্রসঙ্গে আফ্রিক বলেন, এই নির্দেশ প্রমাণ করে সেদিন রক্তক্ষয়ী পরিবেশ সৃষ্টির অপচেষ্টা অথবা জনমনে ভীতি সঞ্চার করার জন্য এসব করা হচ্ছে। কিন্তু এতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী বা নেতা-কর্মী-সমর্থকরা মোটেও ভীত নন। ভোটারাও ভয় পাবেন না। বরং সবকিছুকে তুচ্ছ করে ৩০ ডিসেম্বর ভোট বিপ্লব ঘটানোর মিছিলে শামিল হয়ে ভোটাররা কাঙ্ক্ষিত বিজয়ে অবদান রাখবেন বলে ঐক্যফ্রন্টের দৃঢ় বিশ্বাস।  

এক প্রশ্নের জবাবে ঐক্যফ্রন্টের সমন্বয় কমিটির প্রধান বলেন, সারাদেশে নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টির কঠিন দায়িত্ব সেনাবাহিনীর উপর ন্যস্ত। অতীতে সেনাবাহিনী নিরপেক্ষ ভূমিকা রেখে দায়িত্ব পালন করেছে, অতীতের ঐতিহ্য রক্ষা করবে এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনে অতীতের মতো ভূমিকা রাখবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।

জগলুল হায়দার আফ্রিক বলেন, আমরা সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন চাই। মানুষ ন্যায়বিচারসহ গণতান্ত্রিক মৌলিক অধিকার ফিরে পাবে, আমরা সেই ধরনের সরকার দেখতে চাই। যতই অত্যাচার-নির্যাতন করা হোক না কেন, ভোটের মাঠ থেকে সরে যাবো না। শেষ পর্যন্ত ভোটের মাঠেই থাকবো। জনগণ ঐক্যবদ্ধ হলে গণবিরোধী শক্তি পরাজিত হবেই। অতীতেও আমরা দেখেছি, গণবিরোধী শক্তিকে জনগণ কিভাবে পরাজিত করেছে। জনগণ যেহেতু ঐক্যবদ্ধ হয়েছে তারা পরিবর্তন চায়। আশা রাখি, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী গণবিরোধী শক্তিকে সহায়তার পথে হাঁটবে না। জনগণের জয় হবেই।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০১৮
জিসিজি/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

অন্যান্য দল এর সর্বশেষ