ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

কবিতা

এপ্রিলের দু’টি কবিতা | অনুবাদ: হুমায়ুন আজম রেওয়াজ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০১৬
এপ্রিলের দু’টি কবিতা | অনুবাদ: হুমায়ুন আজম রেওয়াজ

এপ্রিল তথা বসন্ত মাস নিয়ে বিশ্ববিখ্যাত কবিদের উচ্ছ্বাস সর্বজনবিদিত। ঋতুপরিক্রমায় বাংলাদেশে এইসময় বসন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে উপনীত হলেও বসন্তকে ঘিরে বিশ্বকবিদের কাব্যোচ্ছ্বাসের নমুনা আস্বাদনের প্রচেষ্টায় মহাকবি গ্যেটে ও ইংরেজ কবি লংফেলো’র এপ্রিল নিয়ে দু’টি কবিতার ভাষান্তর করা হলো।

বিশ্বখ্যাত এই দুই কবির মুত্যু হয়েছে মার্চের শেষান্তে।  

এপ্রিল
য়োহান উলফ্যাং ফন গ্যেটে

হে আমার চক্ষুরা, বলো, কী খুঁজছ তোমরা 

যার জন্য তোমাদের সুমধুর সংলাপ 
কোলাহলশ্রুত কানকে করছে প্রস্তুত
মুদুবাক্য বর্র্ষণে
এমনকি আমি দেখছি, তোমাদের দৃষ্টিজুড়ে চাঞ্চল্য; 

পেছনে ফেলে আসা দৃষ্টির উজ্জ্বলতার জন্য, 

যে সত্য, ভালোবাসা, নিজেই পরিত্যাক্ত-
আজ হৃদয়ের কাছে, 

যা হওয়া উচৎ ছিল আনন্দে পরিপূর্ণ 
মালিন্য আর দৃষ্টিহীনতার ভিড়ে, 

একবার শুভ দৃষ্টিপাতের ঠিক ততটুকু গভীরতায়
যতটুকু ধরতে পারে এর বিবিধ ঐশ্বর্য

হয়তোবা আমার দৃষ্টিতে তা ঠাওরাতে পারিনি কভু
পারিনি এই সংকেতের মর্মোদ্ধার করতে- 

আমার দৃষ্টিকে বিকশিত করতে 
তোমার আকাঙ্ক্ষার বিপরীতে! 


এক বসন্তদিনে
হেনরি ওয়াডসওয়ার্থ লংফেলো

যখন দীপ্ত রবি, যে বয়ে আনে 
বপনকাল আর ফসল, ফিরে আসে ফের
নিবিড় অরণ্যে বিহার তখনও মধুর, বসন্ত যেখানে
ফোটায় প্রথম পুষ্প, সমতলের।  

এ মওসুম অমি বড় ভালোবাসি
যখন বনের শূন্য উদ্যান ভরে যায় উজ্জ্বল অবয়বে, 
দেয় না পূর্বভাস কোনো ঘনকৃষ্ণ মেঘরাশি 
কোন আগমনী ঝড়ের সম্ভাবে।

পৃথিবীর বাঁধুনি আলগা করে 
কচি চারাগুলো মাথা তোলে আপন বৈভবে, সমহিমায়;
তীব্র শীতের ক্ষত হৃদয়ে পুরে 
ঝিমুতে থাকা গাছগুলোও গা ঝাড়া দিয়ে উঠে দাঁড়ায়।  

পাখির কুজন আর মৃদু গুঞ্জরন 
ভেসে আসছে মোহনীয় বাগান হতে, রঙিন ডানা
ঝলকে উঠল দ্বি প্রহরে, তার একাকী প্রবাহন 
বনের উৎসকোণে।  

যখন অস্তগামী রবির অমলিন কিরণে 
ঝলমল করে রুপালি বনানী, সবুজ ঢাল থেকে অপসৃয়মান 
অন্ধকার ঢলে পড়ে পর্বত গহীনে 
এবং বিস্তীর্ণ প্রান্তরজুড়ে আলোর উত্থান।  
এবং সন্ধ্যা নামার ক্ষণে,
হ্রদের নীলাভ জলের পরে আকাশ আছে ছেয়ে দিগন্তজোড়া
বিশাল শূন্যতা এঁকেছে চাঁদের ম্লানে
আর মিটিমিটি জ্বলছে অজস্র তারা।  
স্রোতে পাক খেতে খেতে 
ধূসর পাথরগুলো থামে, এবং কম্পিত ছায়া ছুড়ে দেয় 
মোহন বৃক্ষগুলো তাকায় চর্তুপ্রান্তে
এবং চোখ পাতে আপন ছায়ায়।  

মধুর বসন্ত! অজস্র স্বপ্নের 
বুনন এই গ্রন্থিতে, হৃদয়ের যে অনুরণন 
ব্যর্থ হবে না তারা, ততক্ষণ, শরৎ প্রতীক্ষায় 
যেথায় জীবনের সোনার ফসল করে বিচ্ছুরণ।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩২২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০১৬
এসএনএস
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

কবিতা এর সর্বশেষ