সংশয় দুলুনি
কোকিল ডেকেই যাচ্ছে, অবিশ্রাম
বলি, ওরে বাপুসোনা পায়ে পড়ি একটুখানি থাম
থামছে না, ডেকেই চলেছে দ্যাখো পাগলের মতো মুহুর্মুহু
সহ্য করা যায় না ওই প্রবল মদিরা আহা উঁহু
মনোমাঝে দোলায়িত ভয়
পাছে সেই ডাকিনীর সঙ্গে যদি ভুলক্রমে ফের দেখা হয়!
ক্ষমা কোরো নদী
ভালোবাসা তুমি নদী, তোমার বুকে যে চড়া, নিভু নিভু চোরা স্রোতে
ধুঁকতে ধুঁকতে করুণ কপিশ মৃত্যু অবসান, তার জন্যে তুমি জেনো
মানুষ একাই দায়ী, তোমার বন্দিশ আর অন্তর্গত আহত জ্বলুনি
তারা মূর্খ বলেই তো ধারণে অক্ষম, হাতে নিচ্ছে অবোধ কুঠার
নিজেকেই আদিঅন্ত ধ্বংস করছে, পরিণতি না জেনে বুঝেই
এই মানুষের জন্যে এক আঁজলা করুণামিশ্রণ ভীরু তাপ
বরাদ্দ কোরো হে তুমি, বিমুখ হয়ো না
নদী কিন্তু চিরকালই দিয়ে যায়, গন্ডূষে গন্ডূষে করে আত্ম উৎসর্জন
খালি চোখে দেখা যায় না, পরিমাপ করাও দুষ্কর
নদীহত্যা বড়ো পাপ, এর কোনো বিধিবদ্ধ প্রতিকার ও প্রায়শ্চিত্ত নাই
এমন পতনে আমরা নিমজ্জিত পাপবন্দি হয়ে আছি মানবসকল...
কীভাবে কেমন করে পার পাবো, স্খলনের গুরুভার কিছুটা লাঘব হবে
তার কোনো দিশাচিহ্ন চরাচরে কোথাও মেলে না, উদ্ভ্রান্ত কোনদিকে যাই
হলো না, হবে না
প্রগতি তোমার সঙ্গে এই জন্মে দেখা আর হলো না হবে না,
জেনে বুঝে গিয়েছি বলেই কষ্ট, মনস্তাপ, মানুষের ভুল স্বস্তি পাপ
মনোমাঝে গোপনে লালন করে ন্যুব্জ হয়ে পড়ি
হাহাকার নিভৃতে লালন করি এই পোড়া বুকেরই মান্দাসে
প্রগতি বিলম্বনারী, একবার ভুলেভালে এসো এ ধরায়
জরাগ্রস্ত মানুষের জ্বোরো ক্লান্ত কপালে নিঃশব্দে এসে
জলপট্টি দিতে থাকো আকুলব্যাকুল স্নেহ মমতা মেশাও
যতো দূরে থাকি জেনে কিছু শান্তি মিলবে এই আস্থাটুক জিয়ল রেখেছি
কেন ছল বিরোধ শীতল
নদীর কথা তোমার মুখে মানায়?
যেই নদীকে পর ভেবেছো তুমি,
আঁধার থেকে ছলকে ওঠা স্রোতের
তোমার নিঠুর মনের ছবি ঢাকে
স্রোতের এমন অবাধ উদারতা
একটু যদি তোমার খরায় পেতে
অমন করুণ নৃশংসতায় তুমি
নিজকে দ্রুত পারতে ফিরে পেতে!
বাংলাদেশ সময়: ১২১৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১১, ২০১৬
।