ঢাকা, সোমবার, ১১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ জুন ২০২৪, ১৬ জিলহজ ১৪৪৫

রাজনীতি

ঘুষ দিয়ে কোনো কাজ করবেন না : মাশরাফী

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০২২
ঘুষ দিয়ে কোনো কাজ করবেন না : মাশরাফী

নড়াইল: জাতীয় নির্বাচনের এক বছর আগে ‘জনতার মুখোমূখী জনতার সেবক’ নামে এক ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠানে জনতার সামনে হাজির হলেন নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা।

বুধবার (২১ ডিসেম্বর) বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নড়াইল সদরের হবখালি ইউনিয়নের হাড়িগড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে উপস্থিত হয়ে তিনি ওই এলাকার গণ মানুষের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া শোনেন ও উত্তর দেন তিনি।

এসময় শিক্ষক, কৃষক, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ  এলাকার সাধারণ মানুষ বিভিন্ন রাস্তা-ঘাট নির্মাণ, হাসপাতাল-ক্লিনিকে চিকিৎসকের অভাব, ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সীমাহীন দুর্নীতি, বিদ্যালয় ভবন ও ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ এবং মসজিদ-মন্দির সংস্কারের দাবি তুলে ধরেন।

সংসদ সদস্য মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা এসব প্রশ্ন নোট করেন ও ধাপে ধাপে সব প্রশ্নের উত্তর দেন। জনতার প্রশ্নের উত্তরের শুরুতে উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করেন, ‘টিআর, কাবিখা, কাবিটার কাজ পেতে আমার পরিবার বা আত্মীয় স্বজন অথবা আমার নামে কেউ কোনো টাকা নেয় কিনা সে কথা জানতে চাই। যদি কেউ এ কাজ করে থাকে তাহলে আমাকে জানান। আমি তার ব্যবস্থা নেব। ’

তিনি বলেন কষ্টের টাকায় ঘুষ দিয়ে আপনারা কোনো কাজ করবেন না। ভাতার ৫শ টাকার একটি কার্ড নিতে কেন আপনরা ৬ হাজার টাকা দেবেন? চাকিরর জন্য কেন আপনারা টাকা দেবন? এ দায়ভার তো আমার না। যোগ্যতা থাকলে আপনাদের চাকরি হবে। টাকার বিনিময়ে কেউ কোনো কাজ করে দিতে পারবে না।

রাস্তা-ঘাট নির্মাণ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আপনারা জানেন করোনার কারণে প্রায় দুই বছর উন্নয়নমূলক কাজ বন্ধ ছিল। তবুও গত চার বছরের বাকি সময় বিভিন্ন রাস্তা-ঘাট, মসজিদ-মন্দিরে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এসময় তিনি ওই ইউনিয়নে উন্নয়নের বিভিন্ন বরাদ্দের তালিকা পড়ে শোনান।

এমপির সঙ্গে দেখা করতে না পারার অভিযোগের উত্তরে তিনি বলেন, আপনাদের জন্য আমার দরজা ২৪ ঘণ্টাই খোলা। যে কেউ আমার সঙ্গে দেখা করতে পারেন। আপনাদের কথা শুনতে আমি বাধ্য। এর আগে অনেকেই আপনাদের মাথায় হাত বুলিয়ে খুশি করে থাকতে পারে। কিন্তু আমি তা করতে চাই না। আমি এসেছি আপনাদের কথা শুনতে। আপনারা আমাকে ভোট দিয়েছেন। এখনো নির্বাচনের এক বছর বাকি আছে। আগামীতে হয়তো আমি নাও থাকতে পারি। সেজন্য একবছর আগে এসেছি যেসব কাজ করেছি, আর যা বাকি আছে তার হিসাব দিতে।

চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আপনারা জানেন চাইলেই রাতারাতি এখানে হাসপাতাল বানানো সম্ভব নয়। সরকারি কাজের কিছু নিয়ম-কানুন আছে। এসব নিয়ম মেনে এ ব্যপারে যা যা করা সম্ভব সব কিছু করব। আপনারা আমার ওপর বিশ্বাস রাখেন।

ইউনিয়ন ভূমি অফিসের দুর্নীতির বিষয়ে তিনি বলেন, জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলে দ্রুতই এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেবা নিতে এসে ভবিষ্যতে কেউ যেন হয়রানির শিকার না হয় সে বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি রাখা হবে।

কৃষকদের সময়মত পর্যাপ্ত সার না পাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আজই কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এসময় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাড. সুবাষ চন্দ্র বোস, নড়াইল পৌর মেয়র আঞ্জুমান আরা, জেলা পরিষদের সদস্য খোকন সাহা, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সরদার আলমগীর হোসেন, প্যানেল মেয়র কাজী জহিরুল হক, হবখালি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান টিপু সুলতান, নলদী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, আউড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান এস এম পলাশসহ আওয়ামী লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) লোহাগড়া উপজেলার কোটাখোল ইউনিয়ন ও শুক্রবার (২৩ ডিসেম্বর) কাশিপুর ইউনিয়নে জনতার মুখোমুখি হওয়ার কথা রয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক এই অধিনায়কের।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০২২
এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।