ঢাকা: আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০১৯ সালের ৩ জানুয়ারি ৬৮ বছর বয়সে ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন।
সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
মঙ্গলবার (০৩ জানুয়ারি) সকালে সমাধিতে শ্রদ্ধা জানান তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। এ সময় তিনি বলেন, সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মৃত্যু ছিল অপ্রত্যাশিত। দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পরিশীলিত ছিলেন তিনি। তার লোভ-লালসা ছিল না। নতুন প্রজন্মের কাছে তার আর্দশ অনুসরণীয় হয়ে থাকবে।
বেলা সাড়ে ৯টায় তার সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম যেভাবে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন, নিজের এলাকার মানুষকে সেবা দিয়েছেন, এতে তিনি নিজেকে একটা অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন। অত্যন্ত বুদ্ধিদীপ্ত এই নেতা ছিলেন একজন মুক্তিযোদ্ধা। ১/১১ সময়কালীন দলের দুঃসময়ে তিনি দলকে নেতৃত্বে দিয়েছিলেন। পরিচ্ছন্ন রাজনীতির যে উদাহরণ তিনি তৈরি করেছিলেন, তা সকলের জন্য অনুকরণীয়।
সৈয়দ আশরাফ স্মৃতি সংসদসহ বিভিন্ন অংগ-সংগঠনের নেতাকর্মীরাও সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ১৯৫২ সালের ১ জানুয়ারি বীর দামপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মুজিবনগর সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি, জাতীয় চার নেতার অন্যতম সৈয়দ নজরুল ইসলামের জ্যেষ্ঠ পুত্র।
তিনি ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-প্রচার সম্পাদক ছিলেন। ১/১১ সময়কালীন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ছিলেন আওয়ামী লীগের মুখপাত্র।
তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিল গ্রেফতার হলে সৈয়দ আশরাফ দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে ২০০৯ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত দলের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৯৬ সালে তিনি কিশোরগঞ্জ-১ সদর আসন থেকে সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তখন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীরও দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ২০০১ সালে পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন সৈয়দ আশরাফ।
২০০১ থেকে ২০০৫ পর্যন্ত তিনি পররাষ্ট্রবিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন। ২০০৮ এবং ২০১৪ সালের নির্বাচনেও তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৫ সালের ৯ জুলাই তাকে এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে দপ্তরবিহীন মন্ত্রী করা হয়। এক মাস এক সপ্তাহ দপ্তরবিহীন মন্ত্রী থাকার পর ১৬ জুলাই প্রধানমন্ত্রী তাকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৩, ২০২৩
এমকে/এমজেএফ