ঢাকা: গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের চারটি দল ও বিএনপি যুগপৎ আন্দোলনে একমত হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের নেতাদের সঙ্গে বিএনপির লিয়াঁজো কমিটির বৈঠকের পর নেতারা সাংবাদিকদের একথা জানান।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, আমাদের সঙ্গে আজকে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। আগামীতে রাষ্ট্রীয় কাঠামো মেরামতের যুগপৎ আন্দোলনে আমাদের যে, ২৭ দফা তার সঙ্গে উনারা ঐক্যবদ্ধ। রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামে উনারা থাকবেন। গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের নেতারা বলেছেন, ২৭ দফার মধ্যেও কিছু যোগ হবে কিছু বাদ যাবে। ওনাদের একটা দাবি যে, তিন জোটের রূপরেখা রয়েছে। সেই রূপরেখা বাস্তবায়িত হয়েছিল। আজকেও আপনারা ২৭ দফা দিয়েছেন বা অন্যান্য রাষ্ট্রীয় কাঠামোর যে কথাগুলো বলছেন আপনারা ক্ষমতায় গেলে এ ওয়াদা বাস্তবায়ন করবেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের দলের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেছেন, আগামীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে যে নির্বাচন হবে সেই নির্বাচনে যারা ক্ষমতায় আসবে। দলটি যত ছোট হোক আন্দোলন সংগ্রামে যারা শরিক থাকবে তাদের নিয়ে একটি জাতীয় সরকার হবে। সেই জাতীয় সরকারের অধীনে এ ২৭ দফাসহ সব প্রস্তাবনা এক সঙ্গে নিয়ে একটি জাতীয় সনদ জাতির সামনে উপস্থাপন করবো।
বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের (মার্কসবাদী লেলিনবাদী) সাধারণ সম্পাদক কমরেড হারুন চৌধুরী বলেন, আমরা চারটি দল গত ২০১৭ সালে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য নামে যাত্রা শুরু করি। দেশের যে নৈরাজ্য ও ফ্যাসিবাদী শাসন এ ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আমরা এ চারটি দল এক হয়ে আজ পর্যন্ত রাজপথে লড়াই করছি। যখন বিএনপির ২৭ দফা আন্দোলনের কর্মসূচি শুনেছি এরপর আমাদের ওনারা আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। আমরা সেখানে গিয়ে তাদের কথা শুনেছি। তাদের সেই ২৭ দফা কর্মসূচি আমরা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে দেখে আমাদের একটা বিশ্বাস হয়েছে যে, বিএনপি রাষ্ট্র মেরামতের জন্য যে ২৭ দফা দিয়েছে এতে দেশের কৃষক-শ্রমিক-মজুর, ছাত্র ও নারী এবং পুরুষ সবার জন্য ইতিবাচক বক্তব্য আছে। সেই কথাগুলো আমরা বিশ্বাস করেছি। আগামীতে ওনারা ক্ষমতায় আসতে পারলে এ মেরামতগুলো করবেন। রাষ্ট্রের এ মেরামতগুলো যদি হয়ে যায় তাহলে আজকে বাংলাদেশ যে অবস্থায় আছে সারা পৃথিবীর রাষ্ট্রদূতদের কাছে আমরা যেভাবে অপমাণিত অবস্থায় আছি আমি মনে করি সেটা আর থাকবে না। তাই দেশের স্বার্থে আগামীতে বিএনপির যে কোনো আন্দোলন সংগ্রামের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনের প্রস্তুতি নিয়ে আজকে তৃতীয়বার ওনাদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে।
তিনি বলেন, বৈঠকে বরকত উল্লাহ বুলু ভাই, আলাল ভাই ছিলেন। এর আগে বিএনপির মহাসচিব, টুকু ভাইসহ অনেকের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। আমরা অত্যন্ত সচেতন মনে দেশকে ফ্যাসিবাদী শাসন থেকে রক্ষা করার জন্য বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় বসেছি। আগামীতে রাজপথ যত কঠিনই হোক পিছপা হবো না। আগামী ১১ জানুয়ারি যে কর্মসূচি হবে সেটার সঙ্গেও আমরা একাত্মতা ঘোষণা করে রাজপথে থাকবো। ইনশাল্লাহ আমরা একত্রিত হয়ে আন্দোলন করে এ সরকারকে পরাজিত করে ২০২৩ সালে নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য একটা নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার হোক আর যাই হোক একটা নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করবো। সেই নির্বাচনে ইনশাল্লাহ বিএনপিসহ যে বৃহত্তম জোট সেই জোট জয়লাভ করবে। জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে।
বৈঠকে বিএনপির পক্ষে ছিলেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু ও যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।
বৈঠকে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের ছিলেন বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (মার্কসবাদী লেলিনবাদী) সাধারণ সম্পাদক কমরেড হারুন চৌধুরী, স্যোসাল ডেমোক্রেটিক পার্টির আহবায়ক কমরেড আবুল কালাম আজাদ, সমাজতান্ত্রিক মজদুর পার্টির সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দলের মহাসচিব হারুন আল রশীদ।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৩, ২০২৩
এমএইচ/আরআইএস