ঢাকা: শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে র্যাগিং-যৌন নিপীড়ন বন্ধ করতে পোস্টারিং-ক্যাম্পেইন-সেল খুলছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। গত রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ নিয়ে কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়।
‘র্যাগিং, বুলিং, টিজিং, সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্টকে না বলুন’ শিরোনামে এতে বলা হয়েছে- দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বিভিন্ন সময় র্যাগিং, বুলিং, টিজিং, সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট ইত্যাদি সংগঠিত হতে দেখা যায়। যা একজন শিক্ষার্থীর ওপর চূড়ান্ত পর্যায়ের মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। সেই সঙ্গে তাকে পারিবারিক, সামাজিকভাবেও হেয় প্রতিপন্ন হতে হয়। যা সুষ্ঠুভাবে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনায় অন্তরায়।
মূলত অজ্ঞতা, পারিবারিক ও প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় দুর্বলতা, উশৃঙ্খলতা, তথ্য-প্রযুক্তির অপব্যবহার, সামাজিক ও ধর্মীয় গোঁড়ামি ইত্যাদি কারণে র্যাগিং, বুলিং, টিজিং, যৌন নিপীড়ন সংগঠিত হয়। দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে (বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, মাদ্রাসা, স্কুল প্রভৃতি) সংগঠিত যে কোন পর্যায়ের র্যাগিং, বুলিং, টিজিং ও যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ বরাবরের ন্যায় জোরালো অবস্থান ঘোষণা করছে। একই সঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষকে এর বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ প্রশাসনিক ও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে।
যেসব বিষয়ের উল্লেখ করা হয়েছে: র্যাগিং, বুলিং, টিজিং ও সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্টকে না বলুন; র্যাগিং, বুলিং, টিজিং ও সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্টের সঙ্গে জড়িত হলে ঝরে যেতে পারে আপনার শিক্ষাজীবন, ক্যারিয়ার ও পারিবারিক-সামাজিক মর্যাদা; হাইকোর্টের নির্দেশনা মোতাবেক র্যাগিং, বুলিং, টিজিং ও সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট ফৌজদারি অপরাধ; এসব অপরাধে জড়িত থাকলে ১ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে; কোনো শিক্ষার্থী র্যাগিং, বুলিং, টিজিং ও সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্টের শিকার হলে অনতিবিলম্বে নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দায়িত্বরত শিক্ষক/কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করুন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে সহযোগিতা না পেলে নিকটস্থ থানায় যোগাযোগ করুন; র্যাগিং, বুলিং, টিজিং ও সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্টের হাত থেকে তাৎক্ষণিক রক্ষা পেতে জাতীয় জরুরি সেবা ‘৯৯৯’ এ ফোন করুন।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের প্রতি যেসব আহ্বান জানানো হয়েছে: শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষা ও শিক্ষক নিয়োগের সার্কুলারে র্যাগিং, বুলিং, টিজিং ও সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট বিরোধী প্রচারণা ও স্লোগান অন্তর্ভুক্ত করতে হবে; র্যাগিং, বুলিং, টিজিং ও সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট বিরোধী কর্মসূচি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বার্ষিক কর্মকাণ্ড ও সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে; র্যাগিং, বুলিং, টিজিং ও সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট বিরোধী কর্মসূচী প্রণয়ন এবং সেসব কর্মসূচিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক করতে হবে; র্যাগিং, বুলিং, টিজিং ও সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্টের ঘটনা ঘটলে কর্তৃপক্ষকে জরুরি ভিত্তিতে রেসপন্স করতে হবে, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর পাশে থাকতে হবে, শিক্ষার্থী ও তার পরিবারকে সাপোর্ট দিতে হবে, তার শিক্ষাজীবন নির্বিঘ্নে শেষ করতে প্রয়োজনে অতিরিক্ত সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে; র্যাগিং, বুলিং, টিজিং ও সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্টের ক্ষেত্রে প্রশাসনকে ভুক্তভোগীর ব্যক্তিগত ও পারিবারিক গোপনীয়তা রক্ষা করতে হবে; হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কার্যকর ‘র্যাগিং ও যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি’ গঠন করতে হবে এবং সেই কমিটিতে শিক্ষার্থী প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে; শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, মাদ্রাসা ও স্কুলে ‘র্যাগিং, বুলিং, টিজিং ও সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট প্রতিরোধ দিবস’ পালন করতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৬ ঘণ্টা, মার্চ ১, ২০২৩
এসকেবি/এমএমজেড