ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

রাজনীতি

আজকের আ. লীগ জিয়াউর রহমানের অনুদানের দল: বুলু

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪২ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০২৩
আজকের আ. লীগ জিয়াউর রহমানের অনুদানের দল: বুলু বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু

ঢাকা: বর্তমান আওয়ামী লীগ শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের অনুদানের দল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু।

রোববার (১৯ মার্চ) সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন বাতিল এবং পুলিশের সহযোগিতায় বিএনপি সমর্থিত প্যানেলের নেতাকর্মীদের ওপর আওয়ামী লীগের হামলার বিচার ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে জিয়াউর রহমান সমাজকল্যাণ পরিষদের (জিসপ) ঢাকা মহানগর উত্তর শাখা।

প্রতিবাদ সভায় বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের সমস্ত নেতাকর্মীদের জিয়াউর রহমান ও তার পরিবারের কাছে কৃতজ্ঞ থাকা উচিত। আপনার (শেখ হাসিনা) বাবা ১৯৭৫ সালের ২৫ সংবিধানে চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে এদেশে এক দলীয় শাসনব্যবস্থার বাকশাল কায়েম করেছিলেন। সব সংবাদপত্র নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার, বাক স্বাধীনতা, মৌলিক অধিকার হরণ করেছিলেন। আওয়ামী লীগকে কবর দিয়ে তিনি বাকশাল করেছিলেন।

তিনি আরও বলেন, ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে এদেশে আবার বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন করেছিলেন। তখন জাতীয় সংসদের স্পিকার আব্দুল মালেক উকিল রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কাছে রাজনৈতিক দলগুলোকে রাজনীতি করার অনুমতি দেওয়ার আবেদন করেন। আওয়ামী লীগকে লাইসেন্স দেওয়ার আবেদন করেন। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সেদিন আওয়ামী লীগকে অনুমোদন দিয়েছিলেন।

তিনি আরও বলেন, আজকের আওয়ামী লীগ শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের অনুদানকৃত দল। এটা শেখ মুজিবের আওয়ামী লীগ নয়। শেখ মুজিব আওয়ামী লীগকে কবর দিয়ে গেছেন। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যদি সেদিন আওয়ামী লীগকে পুনরায় জীবিত না করতেন, তাহলে আজকে তাদের দলের নেতাদের অন্যদল করতে হতো। তাই তাদের কৃতজ্ঞ থাকা উচিত।

বিএনপির এই নেতা আরো বলেন, গত দুইদিন ধরে দেশের পত্রিকায় আরাভ খান নামে এক ব্যক্তির আবির্ভাব হয়েছে। তিনি একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে হত্যা করে দেশ থেকে ভারতে পালিয়ে গিয়ে নাম পরিবর্তন করে দুবাইতে গিয়ে হাজার কোটি টাকার স্বর্ণের বিশাল সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন। গোয়েন্দারা বলছেন, এই পুঁজি নাকি সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদের। আরাভ খানের কাছে দুবাইতে লগ্নি হয়েছে।

আজকে বাংলাদেশ কোথায় এসে দাঁড়িয়েছে প্রশ্ন করে তিনি আরও বলেন, দেশের চলচ্চিত্রসহ বিভিন্ন অঙ্গনের তারাকারা আরাভ খানের স্বর্ণের দোকান উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দুবাইতে গিয়েছিলেন। কোনো নৈতিক অবস্থানে গিয়ে বাংলাদেশ দাঁড়িয়েছে? এ প্রশ্নের উত্তর শেখ হাসিনাকে দিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, মানুষ ভোট দিয়ে আপনাকে (শেখ হাসিনা) নির্বাচিত করেনি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোকেরা ভোটের আগের রাতে ব্যালট বাক্সে ঢুকিয়ে আওয়ামী লীগকে নির্বাচিত ঘোষণা করে দিয়েছে। সে জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ কারো ওপর আওয়ামী লীগ সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই। তারা বলেন, আমরা আপনাদের এমপি, মন্ত্রী বানিয়েছি। আমরা যেভাবে বলবো, আপনারা সেভাবে চলবেন।

তিনি আরও বলেন, আমি আওয়ামী লীগের নেতাদের অসহায়ত্ব দেখেছি। ওসি এখন এমপিদের কথা শুনে না। আওয়ামী লীগের নেতাদের কথা প্রশাসনের কেউ শুনে না। তারা বলেন, আপনারা বাইরে বসেন, আমরা এ সরকারকে, শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী বানাইছি। তিনি আমাদের প্রধানমন্ত্রী। আপনাদের তো প্রয়োজন হয়নি তার। অতএব, এর থেকে দেশকে উদ্ধার করতে হলে সমস্ত জনগোষ্ঠীকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট বারের নির্বাচনের যে ব্যালট বাক্স লুট হলো, যে নেক্কারজনক ঘটনা ঘটলো, প্রধান বিচারপতিসহ সমস্ত বিচারপতিরা বসে রইলেন। পুলিশ পিটিয়ে বহু সাংবাদিককে আহত করলেন, দেশের বরণ্য আইনজীবীদের পেটালেন। এমনি একটি নারকীয় ঘটনা ঘটলো। এর বিরুদ্ধে আপনারা (সরকার) কোনো প্রতিকার গ্রহণ করেননি। এটা রাষ্ট্রের জন্য অত্যান্ত ন্যাক্কারজনক।

তিনি আরও বলেন, আজকে জাতিসংঘসহ সারা পৃথিবীর মানুষ বলছে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই। বাংলাদেশে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নেই, মানুষের মৌলিক অধিকার নেই, বাক স্বাধীনতা নেই। আজকে এটি দুর্নীতি পরায়ণ রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন খবরের কাগজ খুললে দেখা যায়, হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে লুট হয়ে গেছে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা প্রশিক্ষণের পর দেশের মানুষের জান, মালের নিরাপত্তা দেওয়ার শপথ করেন৷ আপনারা তো আওয়ামী লুটেরাদের পাহারা দেওয়ার জন্য শপথ গ্রহণ করেননি। আওয়ামী লীগের লুটেরারা লুট, চুরি, ডাকাতি, মানুষের সম্পদ লুট করবে আর আপনারা তাদের পাহারা দেবেন, নিরাপদে বিদেশে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেবেন, এজন্য তো শপথ গ্রহণ করেননি।

জিসপের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এম গিয়াস উদ্দিন খোকনের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) একাংশের সভাপতি কাদের গণি চৌধুরী, দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন ও জিনাফ সভাপতি লায়ন মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪২ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০২৩
এসসি/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।