ঢাকা, রবিবার, ১৪ পৌষ ১৪৩১, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

বর্তমান সংকটময় বিশ্বে কার্ল মার্কস আরও বেশি প্রাসঙ্গিক: সিপিবি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৩ ঘণ্টা, মে ৫, ২০২৩
বর্তমান সংকটময় বিশ্বে কার্ল মার্কস আরও বেশি প্রাসঙ্গিক: সিপিবি

ঢাকা: বর্তমান সংকটময় এ বিশ্বে একুশ শতকে এসে কার্ল মার্কস আরও বেশি প্রাসঙ্গিক বলে উল্লেখ করেছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) নেতারা।  

শুক্রবার (০৫ মে) বিকেলে কার্ল মার্কসের ২০৫তম জন্মজয়ন্তী ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথা বলেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচার থিয়েটার হলের সিরাজুল ইসলাম মিলনায়তনে সকাল ১০টা থেকে দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত আলোচনা সভার প্রথম পর্বে সভাপতিত্ব করেন সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. এম এম আকাশ।

এই পর্বে ‘বাংলায় মার্কস’ বিষয়ে মূল বক্তব্য উত্থাপন করেন মার্কসবাদী ঐতিহাসিক, ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির প্রবীণ নেতা, মার্কসবাদী তাত্ত্বিক ভানুদেব দত্ত। এ বিষয়ে আরও বক্তব্য দেন সিপিবির সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। স্বাগত বক্তব্য দেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স।

বেলা ৩টায় দ্বিতীয় পর্বে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম। এই পর্বে ‘মার্কস ভাবনা আজ ও আগামীকাল’ বিষয়ক মূল আলোচনা উত্থাপন করেন ভারতের প্রখ্যাত মার্কসবাদী তাত্ত্বিক অধ্যাপক শোভনলাল দত্তগুপ্ত, এ বিষয়ে আরও বক্তব্য দেন ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী) তাত্ত্বিক নেতা শান্তনু দে, সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য শাহীন রহমান। আলোচনা সভা পরিচালনা করেন অধ্যাপক ড. এম এম আকাশ।

দুই পর্বের আলোচনা সভায় দেশের বিশিষ্টজন, অর্থনীতিবিদ, মার্কসবাদী, বিভিন্ন বামপন্থী, প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল, সংগঠনের নেতারা মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন ও বিভিন্ন প্রশ্ন করেন। মূল আলোচকেরা এসব প্রশ্নের উত্তর দেন।

আলোচনা সভায় অধ্যাপক শোভনলাল দত্তগুপ্ত বলেন, যারা মার্কসের তত্ত্বের ঘোরতর বিরোধিতা করেন তারাও সমাজ বিকাশের ইতিহাস ব্যাখ্যা করতে গিয়ে কার্ল মার্কসের গুরুত্ব অস্বীকার করতে পারবে না। মার্কস শুধুমাত্র একজন দার্শনিক ছিলেন না, তিনি ছিলেন শোষিত সমাজ পরিবর্তনের একজন সক্রিয় সৈনিক। আজকের এ বৈশ্বিক সংকট ও মানব সভ্যতার বিপর্যয়ের সময়ে এসে মার্কস আরও বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠেছেন।

তিনি বলেন, এক কথায় মার্কসকে ব্যাখ্যা করা যাবে না। তার সমাজ বিকাশের ইতিহাস ব্যাখ্যা করার পদ্ধতি অবলম্বন করে মার্কসবাদ ব্যাখ্যা করতে হবে। গোটা পৃথিবীর শোষিত মানুষের ইতিহাস, শোষণের কারণ তিনি আলোচনা করে গেছেন। ১৮৫৩ পরবর্তী তার লেখায় ভারতবর্ষের সমাজ ব্যবস্থা ও পুঁজিবাদের বিকাশ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।

বক্তারা বলেন, মার্কসকে ধারণ করতে হবে তার সমাজ বিশ্লেষণের পদ্ধতিকে অনুসরণ করে। মার্কসবাদ কি তা যদি আমরা এক কথায় বলতে চাই তাহলে বলতে হবে মার্কসবাদ হলো পুঁজিবাদের বিকল্প একটি আধুনিক মতবাদ। যা শোষণমুক্ত বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার ধারণা।

বিশ্বায়নের নামে এককেন্দ্রিক বৈষম্যমূলক সমাজ প্রতিষ্ঠার যে বিপুল আয়োজন মার্কসবাদ তার পূর্ব ধারণা বা ধারাবাহিকতা সম্পর্কে সেই উনিশ শতকে তিনি উল্লেখ করে গেছেন। কাজেই আজকের যুগে এসে অত্যন্ত যৌক্তিকভাবে প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠেছে। দেশে দেশে কমিউনিস্ট পার্টিকে শক্তিশালী করার মধ্য দিয়ে মার্কসবাদের মূল বক্তব্য ধারণ করে শোষণমুক্ত বিশ্ব গড়ার লড়াইকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৩ ঘণ্টা, মে ০৫, ২০২৩
আরকেআর/এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।