ঢাকা: জাতীয় পার্টি (জাপা) চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদের বলেছেন, ভারত হচ্ছে আমাদের সব চেয়ে কাছের এবং বড় প্রতিবেশী। ভারতের জনগণ সবসময় আমাদের পাশে ছিল।
তিনি বলেন, শুধু একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ নয় সব প্রয়োজনেই ভারত বন্ধু প্রতিম দেশ হিসেবে আমাদের পাশে ছিল। আমাদের সংস্কৃতি, চেহারা ও ইতিহাসে মিল রয়েছে। বর্তমানে ভারত শুধু সামরিক শক্তি নয় অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবেও আত্মপ্রকাশ করেছে। বন্ধু প্রতিম দেশের উন্নয়নের সঙ্গে আমরাও উপকৃত হচ্ছি। ব্যবসা, চিকিৎসা এবং শিক্ষার জন্যও ভারত আমাদের কাছে দরকারি। আমাদের স্বার্থেই ভারতের সঙ্গে সুস্পর্ক রাখা জরুরি।
শনিবার (২০ মে) দুপুরে রাজধানীর দয়াগঞ্জের জাতীয় শিব মন্দির চত্বরে স্বামী শ্রী অধোক্ষানন্দ দেবতীর্থ মহারাজ এর নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
জি এম কাদের বলেন, প্রতিবেশী সব দেশের সঙ্গেই জাতীয় পার্টি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে বিশ্বাস করে। ভারতের সঙ্গে আমাদের যেমন সম্পর্ক রাখা দরকার, তেমনি আমাদের সঙ্গেও ভারতের সম্পর্ক রাখা জরুরি। ভৌগলিক কারণেই বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে হবে। কারণ, ভারতে নিরাপত্তা বিঘ্নিত করতে বাংলাদেশকে যেন কেউ ব্যবহার করতে না পারে। ভারতে ন্যায্য দাবি হচ্ছে, বাংলাদেশকে ব্যবহার করে কেউ যেন ভারতে নিরাপত্তা বিঘ্নিত করতে না পারে। পরস্পরের প্রয়োজনীয়তার ভিত্তিতে বাংলাদেশ ও ভারত শক্তিশালী সম্পর্ক। তাই, বাংলাদেশ ও ভারতের বন্ধুত্বে কেউ ফাটল ধরাতে পারবে না। এমন সম্পর্কে পরস্পর এক সঙ্গে এগিয়ে চলা সহজ হয়। ভারতের প্রয়োজনে আমরা সহায়তা দেবো আবার আমাদের প্রয়োজনে ভারত সহায়তা করবে এটাই দুটি দেশের মানুষের প্রত্যাশা। এ কারণেই ভারতে যে সরকারই আসে তারাই বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেছে।
তিনি বলেন, আমরা পরস্পরের ভাই হিসেবে থাকবো, একে অন্যের বিপদে পাশে থাকবো। বাংলাদেশ ও ভারত একইসঙ্গে সার্বিক উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, পৃথিবীর সব ধর্মই শান্তি, সম্প্রীতি ও কল্যাণের কথা বলেছে। প্রতিটি ধর্মই মানবিক মূল্যবোধের উন্নয়নের কথা বলেছে। বাংলাদেশের মানুষ হাজার বছর ধরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ঐতিহ্য লালন করছে। সব ধর্মের মানুষ যেন আত্মীয়তার বন্ধনে বাধা। দেশের মানুষের রক্তের মধ্যেই রয়েছে ধর্মনিরপেক্ষতা। অন্যের ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ আমাদের শেখাতে হয় না।
অনুষ্ঠানে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা বলেছেন, দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রকৃত বন্ধু হচ্ছে জাতীয় পার্টি।
তিনি বলেন, পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ শুভ জন্মাষ্টমীতে সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছেন। জন্মাষ্টমীর র্যালি বের করতে সব সহায়তা করেছেন। হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করেছিলেন পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। এছাড়া পূজা-পার্বণে জাতীয় পার্টি সব সময় সংখ্যালঘুদের পাশে থাকে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অক্ষয় হয়ে থাকবে। বাংলাদেশ ও ভারতের বন্ধুত্ব অকৃত্রিম।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ভারতের ত্রিপুরা বিধান সভার ডেপুটি স্পিকার শ্রী রাম প্রসাদ পাল।
অ্যাডভোকেট বিধান বিহারী গোস্বামীর সভাপতিত্বে সংবর্ধনা সভা পরিচালনা করেন জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক সুজন দে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সত্যম রায় চৌধুরী, এস কে বাদল ও তরুন চক্রবর্তী।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভরায়, জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এর উপদেষ্টা ডা. মোস্তাফিজুর রহমান আকাশ, ভাইস চেয়ারম্যান আমির উদ্দিন আহমেদ ঢালু ও যুগ্ম কোষাধ্যক্ষ অ্যাডভোকেট আবু তৈয়ব।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৫ ঘণ্টা, মে ২০, ২০২৩
এসএমএকে/আরআইএস