ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

রূপগঞ্জে যুবলীগ-ছাত্রলীগের দুগ্রুপে সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধসহ আহত ১০

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩২৩ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০২৩
রূপগঞ্জে যুবলীগ-ছাত্রলীগের দুগ্রুপে সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধসহ আহত ১০

নারায়ণগঞ্জ: প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে যুবলীগ-ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এসময় বিল্লাল নামে এক রেস্তোরাঁর বাবুর্চি গুলিবিদ্ধসহ উভয় পক্ষের ১০ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।

মঙ্গলবার (৩০ মে) বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উপজেলার তারাব পৌরসভার বরপা বাস স্টেশন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।  এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া জানান, বিল্লালের কোমরে একটি গুলিবিদ্ধ হয়েছে। তবে তার অবস্থা আশঙ্কামুক্ত। ঘটনাটি রূপগঞ্জ থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, বিকেলে তারাব পৌরসভার বরপা বাস স্টেশন এলাকায় সিফাত নামে এক ছাত্রলীগ কর্মী বাইক চালানোর সময় প্রাইভেটকারের সঙ্গে লেগে সড়কে পড়ে যান। এসময় বাইক আরোহী ও প্রাইভেটকার চালকের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে প্রাইভেটকার চালকের পক্ষে তারাব পৌর যুবলীগের ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক বায়েজিদ সাউদ ও বাইক আরোহীর পক্ষে উপজেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তানজির আহমেদ রিয়াজের লোকজন তর্কবিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। এসময় দুই পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।

এসময় এক পক্ষ আরেক পক্ষকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে একপর্যায়ে রেস্তোরাঁর বাবুর্চি বিল্লাল গুলিবিদ্ধ হন। এছাড়া ওই রেস্তোরাঁর সহকারী বাবুর্চি আফজাল, বয় আশরাফুল, চাইনিজ খাবার তৈরির সহকারী কামাল, রেস্তোরাঁর ম্যানেজার মাসুদসহ উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন।

পরে স্থানীয়রা গুলিবিদ্ধ বিল্লালকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় স্থানীয় ইউএস বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। বাকি আহতরা স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

রেস্তোরাঁটির মালিক মো. নাদিম সাউদ জানান, বিকেলে রেস্তোরাঁর ভেতরে রান্নাঘরে কাজ করছিলেন বিল্লাল। তখন বেশ কয়েকজন যুবক দৌড়ে রেস্তোরাঁর ভেতর ঢুকে খেতে বসা এক যুবককে মারধর শুরু করে। তখন ওই যুবক তাদের হাত থেকে বাঁচতে বাবুর্চিখানার ভেতরে ঢুকে পড়লে হামলাকারীরাও সেখানে ঢুকে পড়ে। একপর্যায়ে তাদেরই কারোর ছোড়া গুলিতে আহত হয় বাবুর্চি বিল্লাল। সঙ্গে সঙ্গে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে ভর্তি করা হয়।

স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, পান থেকে চুন খসলেই অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে এই দুই গ্রুপ। এতে করে সাধারণ পথচারীসহ স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হন। এসব গ্রুপের কারণে আতঙ্কে দিনযাপন করতে হয়।

এ বিষয়ে পৌর যুবলীগের ত্রাণবিষয়ক সম্পাদক বায়েজিদ সাউদ বলেন, সিফাতের বাইক শ্রমিক লীগ নেতা মোহাম্মদ আলীর প্রাইভেটকারে লেগে যায়। মোহাম্মদ আলী আমাকে জানালে আমি ঘটনাস্থলে এসে মীমাংসার চেষ্টা করি। এসময় ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তানজির আহমেদ রিয়াজের লোকজন অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় রেস্তোরাঁর বাবুর্চি গুলিবিদ্ধ হয়।

এ বিষয়ে জানতে উপজেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তানজির আহমেদ রিয়াজের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

রূপগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আতাউর রহমান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পরবর্তীতে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২৩১৭ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০২৩

এমআরপি/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।