ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

বাজেটে অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় দিশা নেই: গণসংহতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৯ ঘণ্টা, জুন ১, ২০২৩
বাজেটে অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় দিশা নেই: গণসংহতি

ঢাকা: গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী ও নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল বলেছেন, প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় কোনো দিশা নেই, দিক-নির্দেশনা নেই।

বৃহস্পতিবার (১ জুন) জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানিয়ে যৌথ বিবৃতি এ কথা বলেন গণসংহতি আন্দোলনের শীর্ষ নেতৃত্ব।

নেতৃবৃন্দ বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের অর্থনীতি ও জনজীবন এক ভয়াবহ সংকটকাল অতিক্রম করছে। সামনে এই সংকট আরও প্রবল হবে বলে অর্থনীতিবিদরা আশঙ্কা করছেন। অথচ বাংলাদেশের প্রস্তাবিত বাজেটে এই সংকট মোকাবেলার কোনো চিন্তা অনুপস্থিত। মূল্যস্ফীতি তথা দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষ যখন দিশেহারা তখন নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমাতে কৃষিতে বিশেষ ভর্তুকি কিংবা নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের আমদানি ব্যয় কমানোর কোনো কার্যকর পরিকল্পনা এই বাজেটে নেই।

তারা বলেন, একদিকে সরকার কৃচ্ছ্রসাধনের কথা বলছে অন্যদিকে স্বল্প প্রয়োজনীয় মেগা প্রকল্পে বরাদ্দ অব্যাহত রাখছে। দেশি ও বিদেশি ঋণের বোঝা দিন দিন বাড়ছে। সরকারের ঋণ করে ঘি খাওয়ার নীতি অব্যাহত আছে। অর্থাৎ আয় কীভাবে হবে তার সুনির্দিষ্ট বিবেচনা ছাড়াই বিপুল অংকের ব্যয়কে নতুন করে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে চালু বিদ্যুৎপ্রকল্প জ্বালানির অভাবে বন্ধ হয়ে গেলেও বাগাড়ম্বর করে জ্বালানি খাতে মহাপরিকল্পনা ঘোষণা করা হয়েছে। জ্বালানির প্রাথমিক উৎস কীভাবে বাড়ানো যেতে পারে, কীভাবে দেশজ উৎস ও নবায়নযোগ্য খাতকে প্রধান করে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা যায়, এর কোনো কিছুই প্রস্তাবিত বাজেটে নেই।

দেশের বিপুল অর্থ লুণ্ঠিত হয়ে পাচার হয়ে গেলেও সেই অর্থ ফিরিয়ে নিয়ে আসার কোনো সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা বাজেটে নেই। বরং লুণ্ঠনকারীদের লুণ্ঠন চালিয়ে যাবার সমস্ত আয়োজন অব্যাহত রয়েছে। এই সরকারের প্রদর্শনমূলক উন্নয়নের নীতিতে দেশের জনগণের প্রকৃত আয় বাড়ছে না, কিন্তু দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ফলে মানুষের জীবন আজ ভয়াবহ সংকটের মুখোমুখি।

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, দেশে ডলার সংকটের কারণে বিভিন্ন মাঝারি-ছোট ব্যবসায়ীরা এলসি খুলতে পারছেন না। রেমিট্যান্স কমছে, রপ্তানি আয় কমছে; আর এই সব কিছুর ভার জনগণের উপরে নতুন করে চাপিয়ে দেওয়ার জন্য সরকার জ্বালানিসহ সেবামূলক খাতে জনগণের ব্যয় বাড়াচ্ছে। দেশের অর্থনৈতিক সার্বিক গতিশীলতা ও বেসরকারি খাতে নতুন বিনিয়োগ আকর্ষণের দিকেও বাজেটে মনোযোগ দেওয়া হয়নি। এমনকি বাজেটে গরিবদের ওপর তাদের টিআইন নম্বরে বাধ্যতামূলক ফি ধরা হয়েছে। যাদের করযোগ্য আয় নেই তাদের ওপর কর আরোপ করা হয়েছে। এটা জবরদস্তিমূলক নীতি, তাই এরকম বাজেট বলাইবাহুল্য গরিববান্ধব নয়।

গণসংহতি আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ বলেন, এরা গ্যাস-পানি-বিদ্যুৎ-নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সবকিছুর দাম বাড়িয়ে দিয়েছে; যেখানে লুণ্ঠনই আসলে প্রধান টার্গেট। ফলে এই বাজেট আসলে সরকারের তথাকথিত উন্নয়নের নামে লুন্ঠনের ধারাবাহিকতা। দেশের বিপুল অধিকাংশ জনগণের জীবনের সংকট মেটাতে ‘ব্যর্থ সরকারের’ এবং ‘অবৈধ সরকারের’ ঔদ্ধত্যের প্রকাশ এই বাজেট।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, আমরা মনে করি জনগণের ভোটে নির্বাচিত একটি গণতান্ত্রিক সরকারই কেবল বাংলাদেশের জনগণের সত্যিকার চাহিদার কথা মাথায় রেখে একটি জনকল্যাণমূলক বাজেট প্রণয়ন করতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৯ ঘণ্টা, জুন ০১, ২০২৩
এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।