ঢাকা: বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বলেছেন, তাদের দল এককভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যেতে চায় না। যারা আন্দোলন-সংগ্রামে-রাজপথে থাকবেন, যারা গণতান্ত্রিক, দেশপ্রেমিক তাদের নিয়ে সরকার গঠন করা হবে।
শনিবার (১০ জুন) সারাদেশে বিদ্যুৎ লোডশেডিং বন্ধ এবং লাগামহীন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে আয়োজিত এক নাগরিক বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই সমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার আন্দোলন।
সমাবেশে বরকত উল্লাহ বুলু আরো বলেন, ৪০ লাখ বিএনপি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে এই সরকার। এই মামলা দিয়ে আপনি (প্রধানমন্ত্রী) ক্ষমতায় টিকে থাকবেন সেটা হবে না। ২০২৩ সালের মধ্যে দেশের মানুষ আপনাকে বিতাড়িত করে একটি নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সরকার গঠন করে নিজের ভোট নিজে দেওয়ার অধিকার ফিরিয়ে আনবে।
তিনি আরো বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি, ৩০ লাখ মানুষ বুকের তাজা রক্ত দিয়েছে গণতন্ত্র, অর্থনৈতিক মুক্তি, বাক স্বাধীনতার জন্য। আজ দেশে গণতন্ত্র নেই, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নেই। একটি অবৈধ সরকার ক্ষমতায় আছে। মার্কিন প্রেসিডেন্টসহ পৃথিবীর সব দেশের নেতাদের সমালোচনা করা যায়, ব্যঙ্গ কার্টুন করা করা যায়। কিন্তু শেখ পরিবারের কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে কেউ যদি কোনো কথা বলে, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইসিটি অ্যাক্টে মামলা হয়ে যায়। এত পবিত্র তারা, এত ক্ষমতাবান তারা।
বিএনপির এই নেতা আরো বলেন, আপনারা (আওয়ামী লীগ) বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নাকি মুক্তিযুদ্ধ করেননি। তাহলে শেখ মুজিব কেন জিয়াউর রহমানকে সেক্টর কমান্ডার হিসেবে বীর উত্তম খেতাব দিয়েছেন। কারণ জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন। ওনার ঘোষণার মধ্য দিয়ে দেশে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে রণাঙ্গনে। যুদ্ধ করে তিনি বাংলাদেশ স্বাধীন করেছেন। সেই কারণে তাকে বীর উত্তম খেতাব দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, গত ২৪ ডিসেম্বর শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে বলেছেন, এদেশের মানুষ ভোট চোরদের পছন্দ করে না। আমরাও বলতে চাই, এদেশের মানুষ ভোট চোরদের পছন্দ করে না। তাই আজকে জাতিসংঘ, জাপান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বলছে, ভোট চোররা বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা অবৈধভাবে দখল করে আছে।
তিনি আরো বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা এ দেশের মানুষের বিরুদ্ধে নয়। যারা অতীতে ভোট চুরি করেছেন, ভোট চুরির সহায়তা করেছেন, যারা কেন্দ্র দখল করেছেন, যারা মানুষের অধিকার হরণ করেছেন, মত প্রকাশের অধিকার হরণ করেছেন, মানুষকে গুম-খুন করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে। আগামী দিনেও এই নিষেধাজ্ঞা থাকবে।
বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক এম জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাছের রহমতুল্লাহ, নেছারুল হক ও মৎস্যজীবী দলের সদস্য ইসমাইল হোসেন সিরাজী।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৫ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০২৩
এসসি/এসআইএস