ঢাকা: সরকারের ভেতরে লণ্ডভণ্ড শুরু হয়ে গেছে মন্তব্য করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান বলেছেন, সরকারের আইনমন্ত্রী সংসদে বলেছেন, নির্বাচন কমিশন একটি প্রস্তাব দিয়েছে, নির্বাচনের আগে আর যেন কোনো হয়রানিমূলক মামলা না হয়। আইনমন্ত্রীর এ বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সরকার প্রমাণ করে দিয়েছে, বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ বিএনপির ৪১ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে আগে যেসব মামলা দেওয়া হয়েছে, সেগুলো রাজনৈতিক হয়রানিমূলক গায়েবি মামলা।
আযম খান আরও বলেন, সরকার গণতন্ত্রের কোনো প্রতিবাদই সহ্য করতে পারছে না। স্বপ্নে-জাগরণে দেখছে তার গদি নেই। কি করবে দিশেহারা হয়ে গেছে।
শনিবার (১০ জুন) খালেদা জিয়া, তারেক রহমান, আব্দুস সালাম পিন্ট ও লুৎফুজ্জামান বাবরের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক ফরমায়েশি সাজা বাতিল এবং ডা. জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ ইয়ূথ ফোরাম।
সভায় আহমেদ আযম খান আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক সিরাজুল আলম খানের মৃত্যুতে সরকারের কোনো উদ্যোগ ও আয়োজন দেখিনি। অথচ সরকার বলে বেড়ায় তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে। সিরাজুল আলম খানের মৃত্যুতে আপনাদের (সরকার) উদ্যোগ কোথায়? সরকারের এ দ্বিমুখী নীতি মুক্তিযুদ্ধের কথা বলে দেশকে লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে। দেশের গণতন্ত্র, মানবাধিকা, ভোটের অধিকার লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে।
তিনি বলেন, আজকে দেশের সামাজিক, পেশাজীবী, রাজনৈতিক সংগঠন কারো কথাই এ সরকারের কানে পৌঁছায় না। তারা যত রকমের কর্তৃত্ববাদী অপশাসন করে এ দেশকে নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তারা কোনো রকমের নির্বাচন না করে, দিনের ভোট রাতে করে তারা দেশকে নিজেদের রাজত্বে পরিণত করছে।
বিএনপির এ নেতা আরও বলেন, সরকারের এক মন্ত্রী বলেন, আলোচনার কোনো বিকল্প নেই। সরকারের আরেক সিনিয়র নেতা বলেন, জাতিসংঘের মধ্য দিয়ে আমরা আলোচনা চাই। সরকারের মুখপাত্র ওবায়দুল কাদের আবার বলেন, এগুলো কোনো কথা নয়, আলোচনা হবে না। সরকারের ভেতরে আসলে কাঁপন ধরে গেছে। আর রক্ষা নেই।
তিনি বলেন, এতদিন সরকার বলতো, ভিসা নীতিকে স্বাগত জানাই। এখন সরকার বলছে, আমরা আমেরিকায় না গেলে কি হয়। সরকারের সব মন্ত্রী, এমপির ঠিকানা আছে ওই আমেরিকার মুলুকে। কাজেই সরকার মুখে বলছে এক কথা, আবার ভেতরে ভেতরে সমঝোতা করার জন্য আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। অর্থাৎ সরকারের মূল কথা তারা ২০২৪ সালের নির্বাচনে আবার কারচুপি করে বিজয় অর্জন করতে চায়। এর জন্য তারা মহাষড়যন্ত্রের মধ্যে আছে।
তিনি আরও বলেন, দেশনায়ক তারেক রহমান ১০ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। এসব দফার প্রধান দফা হলো এ সরকারের পদত্যাগ। দ্বিতীয় দফা হলো বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি। তৃতীয় দফা হলো একটি অবা এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা করা। জনগণ তাদের ভোট দেবেন।
তিনি বলেন, আজকে দেশে গ্যাস নেই, বিদ্যুৎ নেই। এ কারণে রপ্তানি ব্যাহত হচ্ছে। শহর-গ্রামে মানুষ রান্না করতে পারছে না। পানির সংকট হচ্ছে। দেশের মানুষকে এমন বিপদে ফেলে আপনাদের (সরকার) সঙ্গে সংলাপে গিয়ে বিএনপি জাতির সঙ্গে বেঈমানি করবে না। আমরা জাতির সঙ্গে আছি, জাতির সঙ্গে থাকবো। আপনারা (সরকার) জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে ক্ষমতা পদত্যাগ করুন।
বাংলাদেশ ইয়ূথ ফোরামে সভাপতি মুহাম্মদ সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকন, বিএনপির নির্বাহী কমিটির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রাশেদা বেগম হীরা, জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের যুগ্ম সম্পাদক এম নাজমুল হাসান ও মৎস্যজীবী দলের সদস্য ইসমাইল হোসেন সিরাজী।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৯ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০২৩
এসসি/জেএইচ