ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ মে ২০২৪, ০৫ জিলকদ ১৪৪৫

রাজনীতি

‘জাতিসংঘে ভোট না দেওয়া প্রমাণ করে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ মিথ্যা নয়’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৪ ঘণ্টা, জুলাই ৫, ২০২৩
‘জাতিসংঘে ভোট না দেওয়া প্রমাণ করে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ মিথ্যা নয়’

ঢাকা: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সম্প্রতি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে সিরিয়ায় গুম বা নিখোঁজ এক লাখ ৩০ হাজার মানুষের চূড়ান্ত পরিণতি কী হয়েছে, তা জানতে একটি নিরপেক্ষ মেকানিজম বা বডি গঠন করার প্রস্তাব করা হয়।  

তিনি বলেন, এই প্রস্তাবে সাধারণ পরিষদে বাংলাদেশ ভোটদানে বিরত থাকে।

প্রস্তাবটি সাধারণ পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের ভোটে পাস হয়। সেখানে বাংলাদেশের ভোটদানে বিরত থাকা মানবাধিকার নীতির পরিপন্থী।  

বুধবার (৫ জুলাই) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিএনপি মহাসচিব এ তথ্য জানান। আর মঙ্গলবার রাতে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চ্যুয়াল সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়।

ফখরুল বলেন, বাংলাদেশ জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের সদস্য নির্বাচিত হলেও এ বিষয়ে ভোটদানে বিরত থাকা প্রমাণ করে যে, বাংলাদেশের বর্তমান অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের যে গুরুতর অভিযোগ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উঠেছে, তা মিথ্যা নয়। সভায় এ অবৈধ সরকারের সব ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘন ও গণতন্ত্রবিরোধী কার্যকলাপের তীব্র নিন্দা জানানো হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, সম্প্রতি জাতীয় সংসদে ব্যাংকের পরিচালকদের মেয়াদ ৯ বছর থেকে বাড়িয়ে ১২ বছর করে ব্যাংক কোম্পানি আইনের যে সংশোধনী আনা হয়েছে, সভায় তা সম্পূর্ণ গণবিরোধী এবং সুশাসনবিরোধী বলে অভিহিত করা হয়। সভা মনে করে, দীর্ঘদিন ধরে ব্যাংক ব্যবস্থায় নৈরাজ্য চালিয়ে ব্যাংকিং খাতকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করা হয়েছে। বিশেষ করে খেলাপি ঋণের ক্ষেত্রে সরকার দুর্নীতির লক্ষ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে ঋণ খেলাপির জন্য কোনোরকম শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নিয়ে তাদের সব ধরনের সুবিধা দিয়েই চলেছে। পুনঃতফশিলকৃত ঋণ, অবলোপন করা ঋণ, অর্থঋণ, আদালতে আটকে থাকা বিপুল পরিমাণ অঙ্কের ঋণ বিশেষ বিবেচনায় নবায়ন করাসহ আরও অনেক ঋণ, যেগুলো খেলাপিযোগ্য সেগুলো খেলাপি ঋণ হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হচ্ছে না।

তিনি বলেন, ২০২৩ সালের মার্চ মাসের সরকারি হিসাব মতে, খেলাপি ঋণের পরিমাণ এক লাখ ৩১ হাজার ৬২০ কোটি টাকা। কিন্তু উপরোক্ত ঋণগুলোকে তালিকাভুক্ত না করায় প্রকৃত খেলাপি ঋণ প্রায় চার লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে বলে অর্থনীতিবিদরা মনে করেন। ব্যাংকার ও অর্থনীতিবিদদের মতে, এর প্রধান কারণ রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা। সরকারঘনিষ্ঠ অলিগার্কদের খেলাপি ঋণ বার বার পুনঃতফশিল ও অবলোপন করে তা গোপন করা হয়। ব্যাংকিং খাতকে এ সরকার সচেতনভাবে ধ্বংস করছে। ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধন করে যে আইন করা হয়েছে, সভায় তা বাতিলের দাবি জানানো হয়।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, সভায় সম্প্রতি সরকারের মদদপুষ্ট ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের চক্রান্তে কাঁচা মরিচের মূল্য প্রতি কেজি এক হাজার ১০০ টাকা, অন্যদিকে কাঁচা চামড়ার মূল্য নিম্নমুখী হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। সভা মনে করে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে, অন্যদিকে কাঁচা চামড়ার মূল্য পরিকল্পিতভাবে হ্রাস করায় সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে এতিমখানাগুলো তাদের প্রাপ্য অর্থ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। সভায় এ বিষয়ে সরকারের ব্যর্থতার তীব্র সমালোচনা করা হয় এবং অবিলম্বে দ্রব্যমূল্য হ্রাস ও কাঁচা চামড়ার ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়।

তিনি আরও বলেন, গত ১৯ মে থেকে এখন পর্যন্ত ২১৫টি মামলায় বিএনপির ৯ হাজার ৮০০ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। মোট গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮৩৬ জনকে। স্থায়ী কমিটির সভায় গভীর আশঙ্কা প্রকাশ করা হয় যে, আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি তথা বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের মাঠ থেকে সরিয়ে দেওয়ার হীন উদ্দেশ্যে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, গ্রেপ্তার, আহত ও হত্যা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৬ ঘণ্টা, জুলাই ৫, ২০২৩
টিএ/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।