ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

রামপালে বিএনপি-জামায়াতের ৫০ নেতাকর্মীকে আসামি করে মামলা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৯ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০২৩
রামপালে বিএনপি-জামায়াতের ৫০ নেতাকর্মীকে আসামি করে মামলা

বাগেরহাট: বাগেরহাটের রামপালে বিএনপি-জামায়াতের ৫০ নেতাকর্মীকে আসামি করে নাশকতার মামলা দিয়েছে পুলিশ। এর মধ্যে ৩০ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

বাকিরা  অজ্ঞাতনামা আসামি।  

বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) রামপাল থানায় বিশেষ ক্ষমতা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলাটি দায়ের করেন ফয়লা পুলিশ ক্যাম্পের উপ-পরিদর্শক (এসআই) খন্দকার আব্দুল মবিন।

মামলায় ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশ উপলক্ষে নাশকতার জন্য ককটেল, লোহার রড, হাঁসুয়া ও বাঁশের লাঠি নিয়ে গোপন বৈঠক করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।  

তবে মামলার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট উল্লেখ করে এটিকে ‘গায়েবি মামলা’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন বিএনপি নেতারা।
বৃহস্পতিবারের মামলায় ঘটনাস্থল হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে রামপাল উপজেলার গোবিন্দপুর পশ্চিমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠ। এজাহারে বুধবার দিনগত রাত ১০টার দিকে আসামিরা সেখানে পুলিশকে লক্ষ্য করে ককটেল ছোড়ে উল্লেখ করে সেখান থেকে চারটি অবিস্ফোরিত ককটেলসহ আটজনকে গ্রেপ্তারের কথা বলা হয়েছে।

এদিকে ওই মামলায় আটক গৌরম্ভা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য সদস্য মো. আব্দুল হালিমকে এজাহারে উল্লেখ করা সময়ের অন্তত আট ঘণ্টা আগে বুধবার দুপুরে রামপাল উপজেলার প্রশাদনগর বাজার থেকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ তার পরিবারের।

আব্দুল হালিমের ছেলে মো. মহিবুল্লাহ আল সাকিব বলেন, বাবা গৌরম্ভা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য। তিনি দীর্ঘদিন ধরে জামায়াতে ইসলামের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে তাকে আটক করা হয়। কিন্তু রাতে ককটেল ফাটানোর মিথ্যা অভিযোগে করা মামলায় আমার বাবাকে আটক করা হয়েছে বলে জানানো হয়। আমি তার মুক্তি চাই।

একই রকম কথা বলেছেন বাইনতলা ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক নেতা সাগরের স্ত্রী উর্মি বেগম। তিনি বলেন, তার স্বামী দুপুরে ভাত খাওয়ার পর ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। বিকেল ৫টার দিকে পুলিশ এসে তাকে তুলে নিয়ে যায়। পরে তিনি জানতে পারেন, রাতের একটি বিস্ফোরক মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে চালান দিয়েছে পুলিশ।  

এদিকে বুধ ও বৃহস্পতিবার বাগেরহাটের বিভিন্ন থানা পুলিশ বিএনপি-জামায়াতের অন্তত ২৫ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। তাদের অধিকাংশকে আগে করা বিভিন্ন নাশকতার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

রামপাল উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাফিজুর রহমান তুহিন বলেন, উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আমাদের আট নেতাকর্মীকে আটক করে পুলিশ মিথ্যা গায়েবি মামলা দিয়েছে। আমাদের কর্মীরা হামলা-মামলার কারণে এমনিতেই বাড়িতে থাকতে পারেন না। আবার নতুন করে মিথ্যা মামলা, ধরপাকড় শুরু হলো।

বাগেরহাট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আকরাম হোসেন তালিম  বলেন, ঢাকার মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে গেল কয়েকদিন ধরে জেলাজুড়ে গ্রেপ্তার অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পুলিশ তাদের খুঁজছে। গত বুধবার ও আজ বৃহস্পতিবার রামপাল উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মুজিবর রহমান বাবুল, গৌরম্ভা ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি হেমায়েত শেখ, বাইনতলা ইউনিয়নের সাবেক ছাত্রনেতা হুমায়ুন কবির সাগরসহ আটজনকে আটক করা হয়েছে। পরে তাদের নামে মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন গায়েবি মামলা দেওয়া হয়েছে।

জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট শেখ আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, কেন্দ্রীয় কর্মসূচি ঘোষণার পর থেকে পুলিশ জেলাজুড়ে নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি অভিযান চালাচ্ছে। পুলিশ বুধবার গৌরম্ভা ইউনিয়নের প্রসাদনগর এলাকার ইউপি সদস্য আব্দুল হালিম, রাজনগর এলাকার নজিবর রহমান, সোনাতুনিয়া থেকে আলাউদ্দীন ও মোজামকে আটক করে নতুন করে গায়েবি মামলা দিয়ে আদালতে পাঠিয়েছে।

রামপাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস.এম. আশরাফুল আলম বলেন, নাশকতার চেষ্টাকালে কিছু দুর্বৃত্তকে আটক করা হয়েছে। এসব ঘটনায় মামলা হয়েছে। আটজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত অন্যদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

বাংলাদেশ সময়: ১২০৭ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০২৩
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।