ঢাকা, রবিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

‘অবৈধ সরকারকে গণবিপ্লবের মাধ্যমে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৯, ২০২৩
‘অবৈধ সরকারকে গণবিপ্লবের মাধ্যমে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে’

ঢাকা: যে সরকার আলু, পেঁয়াজসহ নিত্যপণ্যের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখতে পারে না সে সরকারের কোনো বৈধতা নেই। তাই গণবিপ্লব, গণরোষের মাধ্যমে বর্তমান সরকারকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হবে।

গণফোরাম ও বাংলাদেশ পিপলস পার্টি আয়োজিত গণমিছিলে এ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বক্তারা।  

বক্তরা বলেছেন, যে সরকার মামলা বাজ, দুর্নীতিবাজ তাকে আমরা একমুহূর্তের জন্যও ক্ষমতায় দেখতে চাই না। আপনি অনতিবিলম্বে ক্ষমতা থেকে পদত্যাগ করবেন এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দেবেন। আর ভারতকে অতিরিক্ত সুবিধা দিয়ে আমাদের দেশের জনগণের ওপর আর চড়াও হয়েন না। যত দ্রুত সম্ভব এক মুহূর্ত দেরি না করে পদত্যাগ করুণ। আমরা জনগণ ঠিক করবো কারা রাষ্ট্র পরিচালনা করবে।  

শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর)এক দফা এক দাবি শেখ হাসিনার পদত্যাগ, অবাধ সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষে নির্দলীয় সরকারের দাবিতে গণ মিছিল থেকে এ দাবি জানানো হয়। এরপর সেখান থেকে একটি মিছিল বের হয়। মিছিলটি মতিঝিলের শাপলা চত্বর হয়ে আবার নটরডেম কলেজে এসে শেষ হয়।

গণফোরাম ও বাংলাদেশ পিপলস পার্টি আয়োজিত গণমিছিলে নির্বাহী সভাপতি জগলুল হায়দার আফ্রিদের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আয়ুব খান ফারুক, পিপলস পার্টির মহাসচিব মো. আব্দুল কাদের, গণফোরামের ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রওশন ইয়াজদানী ও তথ্য ও গণমাধ্যম সম্পাদক মোহাম্মদউল্লাহ মধু বক্তব্য রাখেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, আপনারা দেখেছেন বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে ৩৫ জন লেখকের নামে ইনিয়ে বিনিয়ে গুণ কীর্তন করে ৬৮টি আর্টিকেল ছাপা হয়েছে। ফ্রান্সের একটি সংস্থা থেকে অনুসন্ধানে জানা গেছে এগুলো সব ভুয়া। সেখানে বলা হয়েছে ৩৫ জন লেখকের একজনও পৃথিবীতে নেই৷ এভাবে বাংলাদেশের মানুষকে বোকা বানিয়ে রেখেছে।

তিনি বলেন, বর্তমান সরকার বলে বাংলাদেশের উন্নয়ন বা মেগাপ্রকল্প সারা পৃথিবীতে রোল মডেল তৈরি করেছে। দেশের জনগণের পেটে ভাত নেই, মানুষের শরীরের মাংস শুকিয়ে গেছে।  অথচ কতোগুলো কঙ্কাল তৈরি করছে। এই উন্নয়নের নাম দেওয়া হয়েছে কঙ্কাল। কারণ মেগাপ্রজেক্ট করেছে লুটপাট ও বিদেশে অর্থপাচার করার জন্য। এভাবে মেগাপ্রজেক্টের নামে গুটি কয়েক পরিবারের হাতে দেশের সমস্ত সম্পদ তুলে দিয়েছেন।

সুব্রুত চৌধুরী বলেন, আর দরবেশ কিভাবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সব জায়গায় যায়। আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, অন্যান্য মন্ত্রী নেই তার কেন এত গুরুত্ব।  সুতরাং বুঝতে হবে এই যে হাজার হাজার কোটি টাকা নিয়ে ব্যাংকগুলোকে ফতুর করে দিয়েছে। তাদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ান হচ্ছে আজিজ, এসআলম, দরবেশ সাহেবরা। আজিজ সাহেব গত এক বছরে এত সম্পদ সিঙ্গাপুরে নিয়ে গেছেন ফলে সেখানে ধনীদের তালিকায় তার প্রমোশন হয়েছে। এভাবে তারা সারা বাংলাদেশকে লুটেপুটে খাচ্ছে।

তিনি বলেন, শেষ পর্যন্ত পুলিশ ও প্রশাসন বিভাগকে রাজনীতিকরণ করেছে এই সরকার। আমাদের পবিত্র স্থানছিল বিচার বিভাগ সেখানেও আপনার আছর হয়েছে। ফলে আমাদের বিচারকরা এখন রাজনীতির মাঠে নেমেছে। ফলে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে ১৭৫টি মামলা হয়েছে। সরকার মামলাবাজ, দুর্নীতিবাজ তাকে আমরা একমুহূর্তের জন্যও ক্ষমতায় দেখতে চাই না। আপনি অনতিবিলম্বে ক্ষমতা থেকে পদত্যাগ করবেন এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীন নির্বাচন দেবেন। আমরা জনগণ ঠিক করবো কারা রাষ্ট্র পরিচালনা করবে। যথেষ্ট হয়েছে দয়া করে আমাদের আর কষ্ট দেবেন না।

নির্বাহী সভাপতি জগলুল হায়দার আফ্রিক বলেন, এদেশের মানুষ এই সরকারকে আর দেখতে চায় না। সাধারণ জনগণ এই সরকারকে সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাখ্যান করেছে। দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চলছে অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য। আমরা এক দফা দাবির আন্দোলনকে চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে এসেছি।  

তিনি বলেন, এদেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে। এ সরকার লুটেরাদের লালন পালন করছে। এছাড়া নোবেল পুরস্কার পেয়ে এদেশের মুখ উজ্জ্বল করেছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। অথচ তার বিরুদ্ধে ১৭৫টি মামলা দিয়েছে। পুলিশবাহিনীকে দিয়ে ক্ষমতা দখল করে আছে। এই সরকারকে টেনে না নামিয়ে এদেশের মানুষ ঘরে ফিরে যাবে না।  

গণমিছিলে বক্তারা বলেন, দেশের জনগণ ভালো নেই। বর্তমান সরকার মালটিপ্রজেক্ট উদ্বোধন করে কিন্তু জনগণের কি অবস্থা সেই খবর রাখে না। অথচ বাংলাদেশ ব্যাংক ২২ হাজার কোটি টাকা লোন দিয়েছে একজন এমপিকে। নির্বাচনের তিন মাস আগে সেটি কিভাবে দিতে পারলো৷ যে কিনা ঋণ খেলাপি। তারপরও তাকে ২২ হাজার কোটি টাকা কিভাবে দিলো সেই প্রশ্ন রাখতে চাই।

তারা আরও বলেন, সরকারিদলের লোকজন দুর্নীতি লুটপাট করে সিঙ্গাপুরের ধনীদের মধ্যে ৪১তম হয়েছে। আমাদের কাছে অত্যন্ত দুঃখজনক যে আপনি দেশের গুণীজনকে সম্মান দিতে পারেন না। কারণ আপনাদের চোখে কালো চশমা। সারাদেশের মানুষ চায় আপনার পদত্যাগ। সে লক্ষে সারা বাংলাদেশের মানুষ রাস্তায় নেমেছে৷ সে পদত্যাগ না করিয়ে সাধারণ মানুষ ঘরে ফিরবে না।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৯,২০২৩
জিসিজি/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।