ঢাকা: চারদিকের অবস্থা ভালো না উল্লেখ করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, যেদিনই বিএনপি ও বিরোধী দল মিটিং ডাকে লক্ষ লক্ষ মানুষ সেখানে উপস্থিত হয়। আন্দোলনের এখনো কিছু দেখেননি।
শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিএনপি চেয়রপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে সু-চিকিৎসার জন্য দ্রুত বিদেশে প্রেরণ এবং আমান উল্লাহ আমান, সালাউদ্দিন আহমেদ, রফিকুল আলম মজনু, তানভীর আহমেদ রবিনসহ জাতীয় নেতাদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার আন্দোলন।
প্রতিবাদ সভায় শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ৫২ বছর বয়স আমাদের দেশের। এই ৫২ বছরে আমাদের অর্জন হচ্ছে আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা আর ভিসানীতি। গতকাল প্রধানমন্ত্রী আমেরিকা থাকা অবস্থায় ভিসানীতির কার্যকারিতা শুরুর ঘোষণা দিয়েছে দেশটি। কারণ বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই, মানুষের ভোটাধিকার নেই, মানুষের মানবাধিকার নেই, মানুষের নিরাপত্তা বলে কিছু নেই। এজন্য তারা (যুক্তরাষ্ট্র) আগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, এখন ভিসানীতি কার্যকরের ঘোষণা দিয়েছে। শোনা যাচ্ছে সরকারি দলের অনেক নেতা, প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তা এই ভিসানীতির আওতায় পড়েছে।
কেন এই ঘটনার মুখোমুখি বাংলাদেশকে হতে হয়েছে প্রশ্ন করে তিনি বলেন, এটা কোনো আনন্দের সংবাদ নয়। যেই দেশ মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছে, গণতন্ত্র-মানবাধিকারের জন্য মুক্তিযুদ্ধ করেছে, সেই দেশে এখন গণতন্ত্র-স্বাধীনতা নেই।
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, আপনারা (সরকার) বহু টাকা ইতোমধ্যে লুটপাট করেছেন। লক্ষ হাজার কোটি টাকা আপনারা দেশ থেকে বিদেশে নিয়ে গেছেন। ভিসানীতির আওতায় যদি আপনি পড়ে যান, তাহলে আমেরিকায় যদি আপনার বাড়ি, টাকা থাকে, সেটা তো ভোগ করতে পারবেন না। আমি জানি আপনারা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। কিন্তু এই যে অন্যায় করেছেন, এর জন্য আমাদের লজ্জা হয়।
রাষ্ট্র এখন দানবে পরিণত হয়েছে মন্তব্য করে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, সে (রাষ্ট্র) মানুষকে দেখে না, নাগরিককে দেখে না। সে দানবের মতো আচরণ করছে। বর্তমান সরকার যত তাড়াতাড়ি পদত্যাগ করবে, ততই তার জন্য, দেশের জন্য, মানুষের জন্য ভালো হবে। এই সরকারের পদত্যাগের কোনো বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমেরিকায় এক-দুই দিন থাকার কথা। কিন্তু শোনা যাচ্ছে, এই পুরো মাস তিনি সেখানে থাকবেন। কেন, কীসের জন্য তিনি থাকবেন, সেটি রাষ্ট্রীয়ভাবে ও সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়নি। আবার শোনা যাচ্ছে তিনি অতি তাড়াতাড়ি চলে আসবেন। আসেন, দেশে দাঁড়িয়ে পদত্যাগের ঘোষণা দেন। তাহলে কিছুটা হলেও রক্ষার পথ পাওয়া যাবে। মানুষ, দেশ, জনগণ চায় আপনি পদত্যাগ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করবেন। আর যদি না করেন, দেশের মানুষ আপনাদের বাধ্য করবে পদত্যাগ করতে।
বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক এম জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার মোফাজ্জল হোসেন হৃদয়ের সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সহ-তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ও বাংলাদেশ পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরী, তাঁতী দলের যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মনিরুজ্জামান মনির, হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. ইউনূস আলী, কৃষক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ আবদুল্লাহ আল বাকী, যুব জাগপার সভাপতি মীর আমির হোসেন আমু প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৩
এসসি/এমজেএফ