ঢাকা: গণতন্ত্রের সংগ্রামের নামে দেশকে চরম দক্ষিণপন্থা, ধর্মান্ধতা, প্রতিক্রিয়াশীলতার দিকে ঠেলে দেওয়ার দেশবিরোধী রাজনীতি রুখে দেওয়ার দায়িত্ব যুব সমাজের বলে জানিয়েছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি এবং সংসদ সদস্য হাসানুল হক ইনু।

শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জাসদের সহযোগী যুব সংগঠন জাতীয় যুব জোটের তৃতীয় জাতীয় কংগ্রেসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।

হাসানুল হক ইনু বলেন, দল নিরপেক্ষ সরকারের স্লোগানের আড়ালে শেখ হাসিনাকে উৎখাত করে অসাংবিধানিক সরকার আনার আসল উদ্দেশ্য জামায়াত-বিএনপির প্রক্সি সরকার, ছদ্মবেশী জামায়াত-বিএনপি সরকার আনা। পশ্চিমা বিশ্বের মোড়লদের মুখে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের কথা ভূতের মুখে রাম নাম ছাড়া আর কিছুই না। পশ্চিমারা তাদের ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে তাদের তাবেদার সরকার আনতে চাইছে। পশ্চিমারা প্রকাশ্যেই বাংলাদেশবিরোধী শক্তি পাকিস্তানপন্থি জামায়াত-বিএনপিকে আস্কারা দিচ্ছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব-সংবিধান-দেশের সম্পদ রক্ষা করার দায়িত্ব যুব সমাজের।

জাসদ সভাপতি বলেন, ১৯৭১ সালে জাতির ওপর সংগঠিত ইতিহাসের বর্বরতম যুদ্ধাপরাধের পক্ষে সাফাই গাওয়া, ১৯৭৫ এ বঙ্গবন্ধু ও কর্নেল তাহের হত্যাকাণ্ডের পক্ষে সাফাই গাওয়া, ২০০৪ সালে গ্রেনেড হামলার পক্ষে সাফাই গাওয়া এ তিনটি মহাঅপরাধ জাতিকে মহাবিভক্ত ও মহাবিভাজিত করে রেখেছে। এই তিনটি মহাবিভক্তি ও মহাবিভাজন বহাল রেখে এই দেশের রাজনীতিতে কোনো মিটমাটের সুযোগ নেই। বাংলাদেশে স্থায়ী শান্তি, স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা ও গণতন্ত্র এগিয়ে নিতে হলে ১৯৭১ এর যুদ্ধাপরাধী, ১৯৭৫ এর খুনি, ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলাকারীদের রাজনৈতিকভাবে পরাজিত ও বিতাড়িত করতে হবে।

দুর্নীতি-লুটপাট-বিদেশে অর্থপাচার বন্ধ করে বৈষম্যের অবসান করে সুশাসন ও সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম এগিয়ে নেওয়ার জন্য যুব সমাজের প্রতি তিনি আহ্বান জানান।

জাতীয় যুব জোটের সভাপতি রোকনুজ্জামান রোকনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শরিফুল কবির স্বপনের সঞ্চালনায় এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন জাসদের সাধারণ সম্পাদক এবং সংসদ সদস্য শিরীন আখতার, জাসদের কার্যকরী সভাপতি এড. রবিউল আলম, জাসদ স্থায়ী কমিটির সদস্য ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন ও জাসদের সহ-সভাপতি এবং সংসদ সদস্য আফরোজা হক রীনা।

এছাড়াও আরও বক্তব্য রাখেন কংগ্রেস প্রস্তুতি কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আমিনুল আজিম বনি, মুহাম্মদ সামছুল ইসলাম সুমন, শরিফুল ইসলাম সুজন। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন যুব মৈত্রীর সভাপতি তৌহিদুর রহমান, যুব ইউনিয়নের খান আসাদুজ্জামান মাসুম, যুব আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক মোশাহিদ আহমেদ।  

জাতীয় কংগ্রেসে সারা দেশের বিভিন্ন জেলা, মহানগর, উপজেলা থেকে কয়েক হাজার নেতাকর্মী যোগদান করেন। কংগেসের উদ্বোধনী প্যান্ডেল যুবদের একটি বর্ণাঢ্য মিলন মেলায় পরিণত হয়।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সন্ধ্যায় নগরের বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ইম্পেরিয়াল হোটেল মিলনায়তনে কাউন্সিল অধিবেশন শুরু হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৩
আরকেআর/এএটি