ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

সরকারের অবস্থা বড়ই খারাপ, হুঁশ নেই: নজরুল ইসলাম 

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২৩
সরকারের অবস্থা বড়ই খারাপ, হুঁশ নেই: নজরুল ইসলাম  বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান

ঢাকা: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, সরকারের অবস্থা বড়ই খারাপ। যখন কেউ আবোলতাবোল বলতে শুরু করেন তখন বুঝতে হবে তাদের অবস্থা খারাপ, হুঁশ নেই।

 

তিনি বলেন, তারা (সরকার) বলছেন স্যাংশন নাকি হয়েছে তাদের কথা মতো! তারা চেয়েছে সুষ্ঠু নির্বাচন হোক, আর বিএনপি নাকি তাতে বাধা দিচ্ছে। এরজন্য নাকি আমেরিকা বলেছে যারা সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধা দেবে তাদের জন্য ভিসানীতি। সরকারের কোনো অসুবিধা নেই। তাহলে আপনারা (সরকার) কেন এত ভয় পাচ্ছেন? ভেতরে এত কান্নাকাটি কেন?

শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর বিজয়নগর পানির টাংকির সামনে ১২ দলীয় জোট আয়োজিত খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসা এবং সরকার পতনের একদফা দাবিতে এক বিশাল গণ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।  

নজরুল ইসলাম বলেন, কেউ নিজের জন্য, কেউ ছেলের জন্য, বউয়ের জন্য আজ অস্থির হয়ে গেছে। কারণ, যার ওপর ভিসানীতি আসবে তার পুরো পরিবারের ভিসা বাতিল হয়ে যাবে।

বিএনপির এ সিনিয়র নেতা বলেন, আমরা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আন্দোলন করছি। আর সরকার ২০১৪ এবং ১৮ সালের মতো প্রহসনের নির্বাচন করার পাঁয়তারা করছে। আমরা আন্দোলন করছি, বাধা দিচ্ছি যাতে সে অবৈধ নির্বাচন যাতে না হয়। আমরা সংগ্রাম করছি সুষ্ঠু নির্বাচন আদায় করার জন্য। সুতরাং, এ স্যাংশন আমাদের জন্য নয়, তাদের জন্য, ভোট চোরদের জন্য। এটি তারাও ভালো মতো জানে। তাদের ওপর স্যাংশন জারি না হলে তারা এত ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়তো না।

তিনি বলেন, তারা (আ.লীগ) বলতো বিএনপি মাজা ভাঙা দল। তাহলে আপনারা কেন শয়নে স্বপনে সারাক্ষণ বিএনপি, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নাম বলেন? কথায় কথায় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নাম যতবার আপনারা মুখে নেন, ততবার আল্লাহর মুখে নিলে আপনারা বেহেশতে যেতেন।

তিনি বলেন, দেশের মানুষ ভোটের অধিকারের জন্য আন্দোলন করছে। যে নেত্রী আজীবন গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন তাকে আজ বন্দি রাখা হয়েছে। আসুন সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেই কাঙ্ক্ষিত গণতন্ত্র।

গণ সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে জাপার একাংশের চেয়ারম্যান ও সাবেকমন্ত্রী মোস্তফা জামাল হায়দার সরকারের উদ্দেশে বলেন, মানে মানে বিদায় হোন। দেশের ক্ষমতা জনগণের হাতে তুলে দেন। দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেন। মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দেন। গণতন্ত্রকে মুক্তি দেন। নতুবা দেশের জনগণ আপনাদের ক্ষমা করবে না।

জাপার যুগ্ম মহাসচিব এএসএম শামীম এবং এলডিপির অতিরিক্ত মহাসচিব তমিজ উদ্দিন টিটুর সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন ১২ দলীয় জোটের মুখপাত্র কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক, ১২ দলীয় জোটের সমন্বয়ক বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বি এম এল) এর চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, জাতীয় গণতান্ত্রিক দল (জাগপা)এর সিনিয়র সহ-সভাপতি রাশেদ প্রধান, ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম, রাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ফারুক রহমান, ইসলামিক ঐক্যজোটের মহাসচিব মাওলানা আব্দুল করিম, ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাশেম, বাংলাদেশ এলডিপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল গনি, জাতীয় পার্টির মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকন, বাংলাদেশ জাতীয় দলের মহাসচিব রফিকুল ইসলাম ও বাংলাদেশ জাস্টিস পার্টির সাধারণ সম্পাদক মানসুর আলম শিকদার।

সমাবেশে নেতারা বলেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতা দীর্ঘদিন ধরে রাখতে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে মিথ্যা ও বানোয়াট মামলায় ফরমায়েশি রায়ে কারাদণ্ড দিয়েছে। প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে তিন তিনবারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী বেগম জিয়াকে তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। ভয়াবহ অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে দিচ্ছে না। অবিলম্বে বেগম জিযাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিয়ে যাওয়া জন্য নিঃশর্ত মুক্তি দাবি জানাচ্ছি।  

নেতারা আরও বলেন, আমেরিকার ভিসানীতি ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের চাপ শেখ হাসিনার মাথা নষ্ট করে দিয়েছে। একজন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে যে অসংলগ্ন কথাবার্তা ও আচরণ দেখাচ্ছেন তা জাতির জন্য লজ্জাজনক ও অবমাননাকর।  

সেলফি নাটক ও আবারও পাতানো নির্বাচনের পাঁয়তারার তীব্র সমালোচনা করে নেতারা বলেন, ক্ষমতা হারানোর আতঙ্কে শেখ হাসিনার আমেরিকা ভীতি আর আমেরিকা প্রীতির দ্বৈত ভূমিকা সবাইকে অবাক করার মতো। তিনি একবার বলেন, আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে আমেরিকা যাওয়ার দরকার নেই। তারপরে বিশাল বহর নিয়ে আমেরিকা গিয়ে দীর্ঘ সময় অবস্থান ও লবিং করে আমেরিকার আশীর্বাদ লাভের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। মজার ব্যাপার শেখ হাসিনার আমেরিকায় উপস্থিত থাকা অবস্থাতেই ভিসা নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের ঘোষণা দেওয়া হয়। ব্যর্থ মনোরথ হয়ে তাকে দেশে ফিরতে হচ্ছে।

মোস্তফা জামাল হায়দার মানে মানে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা ছেড়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার গঠনের আহ্বান জানান।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২৩
টিএ/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।