ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

ট্রেড স্যাংশনের শঙ্কা নাকচ করলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ৯, ২০২৩
ট্রেড স্যাংশনের শঙ্কা নাকচ করলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

ঢাকা: ট্রেড স্যাংশনের শঙ্কা নাকচসহ নির্বাচনের আগে বিদেশিদের কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার কোনো ধরনের সম্ভাবনা ও প্রেক্ষাপট নেই বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।

সোমবার (৯ অক্টোবর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় সুইডেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ডায়ানা জানসের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

দেশিয় ও আন্তর্জাতিক মহলে একটি গুঞ্জন উঠেছে- দেশে বাণিজ্যিক স্যাংশন আসতে পারে। এ বিষয়ে সরকারের করণীয় কি? সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, তারা এসব আলোচনা কোথায় পেয়েছে আমি জানি না। কিন্তু আমি খুব ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলতে পারি, দশ বছর এই দপ্তরে থাকার পর কাজ করে যদি আমি কিছু বুঝতে পারি- সেই ন্যূনতম জ্ঞান থেকে আমি বলতে পারি এমন ধরনের কোনো সম্ভাবনাই নেই। এটিকে করা হয়েছে খুব প্ল্যানড ম্যানারে (পরিকল্পিতভাবে)। মানুষের মধ্যে যে একটা ভয়ভীতি- এটাকে পূঁজি করে একটা গোষ্ঠী এখান থেকে ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করছে। আমি সবাইকে অনুরোধ করব, এই বিষয়ে আপনারা বাস্তবতার ভিত্তিতে এবং এই কাজ গুলোয়  যারা জড়িত যেমন- আমরা সরকার বাংলাদেশের একটা পক্ষ এবং সেই সাথে বিদেশি যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ অন্য দেশগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলে আপনারা যাচাই করবেন।

তিনি বলেন, আমি পরিষ্কারভাবে বলতে চাই সামনে জাতীয় নির্বাচনের আগে নতুন করে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ট্রেড স্যাংশন তো অনেক দূরের কথা- নতুন করে আর কোনো পদক্ষেপ বা ব্যবস্থা নেওয়ার সম্ভাবনা, এটার বাস্তবতা এবং কোনো প্রেক্ষাপটই নেই। মার্কিন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি জানিয়েছে তারা এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবে না। এই বিষয়ে সরকার কি পদক্ষেপ নেবে জানতে চাইলে শাহরিয়ার আলম বলেন, আমি সুইডেনের কাছে ব্যাখ্যা করেছি। যে ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনের নির্বাচনে তারা আসেনি। না এসে বরং তারা সে সময় বাধার সৃষ্টি করেছে। যেটা সে সময় নিউইয়র্ক টাইমসের ৫ জানুয়ারির পত্রিকায় এসেছিল যে নির্বাচন শুধু বয়কট নয় নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টা। বাংলাদেশের নির্বাচন বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী হবে। নির্বাচন কমিশনের অধীনেই নির্বাচন হবে। যে কেউ বানচালের অপচেষ্টা করলে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সুইডেন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের আকাঙ্ক্ষা কি? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সুইডেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ডায়ানা জানসে বলেন, আমার মনে হয় এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে বাংলাদেশে একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আর সেটা করার দায়িত্ব সরকারের।

ডায়ানা জানসে আরও বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে স্বাধীনতার আগে-পরে সুইডেনের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আছে। এই দুই দেশের সম্পর্ক আরও কীভাবে জোর দেওয়া যায় এবং পারষ্পরিক সম্পর্কের সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। পাশাপাশি আগামী দ্বাদশ নির্বাচন নিয়ে যে সকল চ্যালেঞ্জগুলো আছে সেসব বিষয় নিয়ে আমাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এবং সার্বিকভাবে আরও যেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে সেগুলো হলো- অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য ও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন।

সুইডেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ডায়ানা জানসের সঙ্গে কি আলোচনা হয়েছে- এ বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, সুইডেনের পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্যিক দ্বিপাক্ষিক আলোচনা হয়েছে। এর বাইরে তিনি জানতে চেয়েছেন আমাদের আগামী নির্বাচনকে অবাধ সুষ্ঠু করার জন্য আমরা কী পদক্ষেপ নিয়েছি। আমি তাদের বলেছি, ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনের আগের দুই বছরের যে তত্ত্বাবধায়ক ছিল, সে সময়ের প্রেক্ষাপট এবং ২০০৮ সালের নির্বাচনের অভিজ্ঞতা। ২০১৪ সালের নির্বাচনে কয়েকটি রাজনৈতিক দলের বয়কট করা এবং নির্বাচন বানচালের চেষ্টা। পাশাপাশি যে ঘটনা প্রবাহ ছিল, জ্বালাও পোড়াও হয়েছে মানুষকে খুন করা হয়েছে সে সব জানিয়েছি।

তিনি বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনে কিছু রাজনৈতিক দলগুলো এলেও তাদের নেতৃত্বের অভাবে তারা শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থাকেনি। এবং তারা এখনো অপচেষ্টা করে যাচ্ছে। নির্বাচন কমিশনে যে নতুন আইন হয়েছে সে বিষয়েও সুইডেনের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে জানিয়েছি। পাশাপাশি ইউরোপের সহায়তায় ফটোযুক্ত ভোটার কার্ড করাতে আমাদের নির্বাচনে সুবিধা হয়েছে এবং সামনে নির্বাচন প্রক্রিয়া আরও সহজ করতে সুইডেন সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ৯, ২০২৩
ইএসএস/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।