ঢাকা, মঙ্গলবার, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

এই নির্বাচন আ.লীগকে নির্বাসনে পাঠাবে: গণতন্ত্র মঞ্চ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০২৩
এই নির্বাচন আ.লীগকে নির্বাসনে পাঠাবে: গণতন্ত্র মঞ্চ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নাসহ অন্যান্য বক্তরা। ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: আওয়ামী লীগ সরকার আরেকটি একতরফার নির্বাচন করতে যাচ্ছে অভিযোগ করে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেছেন, এই নির্বাচন আওয়ামী লীগকে নির্বাসনে পাঠাবে। জনগণকে এজন্য অপেক্ষা করতে বলেছেন তারা।

রোববার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে একতরফা নির্বাচনের প্রতিবাদে অবরোধের পক্ষে মিছিল শেষে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তারা এসব কথা বলেন।

সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এই নির্বাচন আওয়ামী লীগের জন্য কোনো নির্বাচন নয়। এটা তাদের নির্বাসনে পাঠাবে, অপেক্ষা করেন। বিরোধী দল ভাঙতে, নতুন নতুন দল করতে চেষ্টা করেছে তারা। খেয়াল করে দেখেন, পাকিস্তান আমল পর্যন্ত রাজাকার পাওয়া গেছে। এবার তো রাজাকারও পাওয়া যাচ্ছে না। আওয়ামী লীগ এবার রাজাকার-আলবদরও পায় না। নতুন নতুন প্রার্থী দেবে, তাও পায় না। খালি আওয়ামী লীগ আছে, আর কেউ নেই।

সরকারের সমালোচনা করে তিনি আরও বলেন, চিল যেমন মুরগির বাচ্চা ধরে নিয়ে যায়, এমন করে বিএনপির নেতাদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে, বিচার করছে, রাত-দিন করে কারো নামে দুই বছর, কারো নামে আড়াই বছর, কারো নামে তিন বছর সাজা দিয়ে দিচ্ছে। মামলা চালুই হয়নি, সাজা নির্ধারিত। দুই হাত কাটা মানুষের নামে সন্ত্রাসের মামলা, মৃত মানুষের নামে ফৌজদারি সাজা। আর ওনারা (সরকার) নির্বাচনের চমৎকার পরিবেশ বিরাজ করছে।

এজেন্সির টাকা খেয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতাদের নামে মিথ্যা তথ্য প্রকাশ করা হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি আরও বলেন, আমরা রাজনীতির চামচিকা নই। আমরা রাজনীতির কিং। আমরা লড়াই করেছি জনগণের জন্য। লড়াই চলছে, লড়াই চলবে। থামবে না।

নির্বাচন ঠেকে গেছে মন্তব্য করে তিনি আরো বলেন, ওরা বিভিন্ন সময় বলে, বিরোধী দল নির্বাচন প্রতিহত করতে চায়, এই নির্বাচন ঠেকাতে পারবে? আমি বলি নির্বাচন ঠেকে গেছে। নির্বাচন কি হচ্ছে? যারাই যা করেন পার পাবেন না। ওদের নির্বাচনই নেই, ঠেকাবো কি? জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছেন নির্বাচন। বিশ্ববাসী প্রত্যাখ্যান করেছে এই নির্বাচন।

তিনি আরও বলেন, এই সরকার বলে, মারো, কাটো, গাল দাও, কান টানো, চুল টানো ক্ষমতার গদি ছাড়ব না। দেশ রসাতলে চলে যাবে, তবু প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতা ছাড়তে চায় না। আর আমরা বলছি, আমরা দেশকে রসাতলে যেতে দেব না। তাই আপনাকেও ক্ষমতায় থাকতে দেব না।

সমাবেশে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, আমাদের আন্দোলন চলবে। আমাদের আন্দোলনকে বিজয় পর্যন্ত নিয়ে যেতে হবে। এখানে পরাজয়ের কোনো সুযোগ নেই, পরাজয় মানে মৃত্যু।  

তিনি আরো বলেন, এক এগারো সরকার বিভিন্ন দল থেকে লোক ভাগিয়ে এনে কিংস পার্টি বানিয়েছে। আর এখন শেখ হাসিনা গোয়েন্দা সংস্থা দিয়ে বিভিন্ন দল থেকে লোক ভাগিয়ে এনে কিংস পার্টি বানাচ্ছে। আওয়ামী লীগ ফোর ডিভিশন দলের সঙ্গে খেলতে গিয়ে এখন নিজেরাও ফোর ডিভিশন হয়ে গেছে।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন,  সকালবেলা প্রধানমন্ত্রী একটা বক্তৃতা দিয়েছেন। সেখানে তিনি বলেন বিরোধীদের আমরা কোনো প্রকার বাধা প্রদান করছি না। এই কথাটা কী সত্য? এটা কী তথ্যভিত্তিক? তিনি যখন এই ভাষণ দেন তখন বিএনপির ১৪ হাজার নেতাকর্মী জেলখানায়। এখন বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন ক্ষেতে রাত্রিযাপন করে সকালবেলা হরতাল-অবরোধের কর্মসূচিতে যুক্ত হচ্ছেন। দুইদিন আগে তারা (সরকার) একজনকে নাশকতার জন্য জেলে পাঠিয়েছেন, তার দুই হাত নাই। যার দুই হাত নাই সে নাকি নাশকতা করেছে, বাসে অগ্নিসংযোগ করেছে। এই হচ্ছে নমুনা।  

তিনি আরও বলেন, এই সরকার এতই নির্লজ্জ-বেহায়া তারা প্রধান বিরোধী দলের অফিস এখনো তালাবদ্ধ করে রেখেছে। দেশে নাকি নির্বাচনের উৎসব চলছে। তারা মানুষের ভোটের অধিকারের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে আজকে খেলায় যুক্ত হয়েছেন। ৭০ শতাংশ মানুষ নাকি আওয়ামী লীগকে ভোট দেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছেন। তাহলে কেনো ১৫ বছর পরে একটা বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন দিতে ভয় পাচ্ছেন? কেনো মানুষের ভোটের অধিকারের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন? এরকম করার কারণটা কি? কারণ হচ্ছে ১৯৫৪ সালে মুসলিম লীগের অবস্থা যেরকম হয়েছিল, ২০২৪ সালে এসে আওয়ামী লীগের অবস্থাও সেরকম হবে। এই ভয়তেই তিনি এমন অনৈতিক নির্বাচন করছেন।

এ সময় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ  রফিকুল ইসলাম বাবলু,  রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুমসহ গণতন্ত্র মঞ্চের আওতাধীন বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে অবরোধের পক্ষে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে মিছিল করে তারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২৬ ঘণ্টা, নভেম্বর  ২৬, ২০২৩
এসসি/এসএএইচ


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।