বগুড়া: আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়ার ৪টি আসন থেকে অংশগ্রহণ করছেন বিএনপির সাবেক ও পদবঞ্চিত চার নেতা।
ইতিমধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার জন্য তারা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন।
শুক্রবার (০১ ডিসেম্বর) বগুড়া সিনিয়র নির্বাচন অফিসারের কার্যালয় থেকে পাঠানো দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে মনোনয়ন পত্র দাখিলের প্রার্থীর তালিকা থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
বিএনপির সাবেক যে চার নেতা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন তারা হলেন- বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য ও চারবারের সাবেক সংসদ সদস্য ডা. জিয়াউল হক মোল্লা, বগুড়া জেলা বিএনপির সাবেক উপদেষ্টা বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ শোকরানা, বগুড়া সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও শাজাহানপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সরকার বাদল এবং জেলা বিএনপির সাবেক মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ও শিবগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান বিউটি বেগম।
তাদের মধ্যে বগুড়া-১ (সারিয়াকান্দি-সোনাতলা) আসন থেকে মোহাম্মদ শোকরানা, বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ) আসন থেকে বিউটি বেগম, বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসন থেকে ডা. জিয়াউল হক মোল্লা এবং বগুড়া-৭ (শাজাহানপুর-গাবতলী) আসন থেকে সরকার বাদল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।
বগুড়া-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ শোকরানা জানান, যখন আমাকে নিয়ে কথা হচ্ছে তখন বিএনপিকে টেনে নিয়ে আসা হচ্ছে। অথচ আমি গত ৪ বছর আগে বিএনপি থেকে পদত্যাগ করেছি। এরপর থেকে কোন রাজনৈতিক দলেরই সদস্য নই। আমার পূর্ব পুরুষরা সারিয়াকান্দি এলাকায় অনেক উন্নয়নমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলো।
তিনি বলেন, সারিয়াকান্দিতে যে গ্রোয়েন বাধ ওটা কিন্তু আমার চাচাই নিয়ে আসছেন। এছাড়া যমুনা নদী যেন বাঙালি নদীর সঙ্গে মিশে না যায় এজন্য প্রথম পদক্ষেপ তিনিই নিয়েছেন। উনার পরে দীর্ঘ গ্যাপ হয়ে গেছে আমাদের পরিবার থেকে কোন নেতৃত্ব আসেনি। এই জন্য আমি মনে করেছি আমার পরিবার থেকে একজন ব্যক্তিকে অন্তত পক্ষে এই পার্লামেন্ট নির্বাচন করা দরকার।
বগুড়া-২ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী বিউটি বেগম জানান, আমি জনগণের হয়ে কাজ করেছি। জনগণের দাবিতে আমি দাড়াচ্ছি।
বগুড়া-৪ আসনের ৪ বারের বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মোল্লা জানান, পুরো নেতাকর্মী আমার পেছনে আছে এবং ওই এলাকার সামাজিক যে শক্তি আছে তারা আমাকে আশ্বস্ত করেছে আমাকে নির্বাচনে যাওয়ার জন্য। ইনশাআল্লাহ আমি বিজয়ী হবো।
এদিকে বগুড়ার ৭টি সংসদীয় আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য আওয়ামী লীগ ও দলটির বিদ্রোহী, জাতীয় পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ, জাকের পার্টি এবং নবগঠিত তৃণমূল বিএনপি এবং স্বতন্ত্রসহ মোট ৮৯ জন তাদের মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। বগুড়ায় রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এবং উপজেলাগুলোতে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়গুলোতে তারা মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।
রিটার্নিং কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি ২৫ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন বগুড়া-৭ (গাবতলী ও শাজাহানপুর উপজেলা) আসনে। আর সবচেয়ে কম ৮ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন বগুড়া-৫ (শেরপুর ও ধুনট উপজেলা) এবং বগুড়া-৬ (সদর) আসনে। এছাড়া বগুড়া-৩ (আদমদীঘি ও দুপচাঁচিয়া উপজেলা) আসনে ১৬ জন, বগুড়া-১ (সারিয়াকান্দি ও সোনাতলা উপজেলা) আসনে ১২ জন এবং বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ) ও বগুড়া-৪ (কাহালু ও নন্দীগ্রাম উপজেলা) আসনে ১০জন করে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।
ইসি ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল ৩০ নভেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে আগামী ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ ডিসেম্বর। প্রতীক বরাদ্দ ১৮ ডিসেম্বর। আর ভোটগ্রহণ হবে ৭ জানুয়ারি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০১, ২০২৩
এমএম