ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

বিরোধিতাকারীদের ফরমায়েশি রায় দেওয়া হচ্ছে: গণতন্ত্র মঞ্চ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২, ২০২৪
বিরোধিতাকারীদের ফরমায়েশি রায় দেওয়া হচ্ছে: গণতন্ত্র মঞ্চ

ঢাকা: দেশে আইন সবার জন্য সমান নয়, বিরোধিতাকারীদের বিরুদ্ধে ফরমায়েশি রায় দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতৃবৃন্দ বলেছেন, সরকারপক্ষীয় ও আওয়ামী দালালদের জন্য আইন একভাবে কাজ করে আর বিরোধী অন্যান্য রাজনৈতিক দলের জন্য দেশে আইন আরেকরকম। দেশে এখন বিরোধিতাকারীদের বিরুদ্ধে ফরমায়েশি রায় দেওয়া হচ্ছে।

মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে এগারোটায় ‘একতরফা ভোট বয়কট করুন’ এই আহবান নিয়ে কাকরাইল মোড়ে আয়োজিত সমাবেশে এসব কথা বলেন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা। সমাবেশের পরে গণতন্ত্র মঞ্চ একটি মিছিল সহযোগে কাকরাইল মোড় থেকে শান্তিনগর, মালিবাগ হয়ে মালিবাগ রেলগেট এলাকায় গণসংযোগ করে।

গণসংযোগপূর্ব এই সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমম্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দীন মাহমুদ স্বপন। সভা পরিচালনা করেন নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার।

সমাবেশে পুলিশ মাইক ব্যবহার বন্ধ করে দিতে চাইলে তার নিন্দা জানিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, মাইক ব্যবহারের সাংবিধানিক অধিকার আমাদের রয়েছে। এই একতরফা তামাশার নির্বাচন বর্জন করা জনগণের অধিকার এবং সেটা জনগণকে আহ্বান জানানোও সাংবিধানিক অধিকার।

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, দেশে আইন সকলের জন্য সমান নয়। সরকারপক্ষীয় ও আওয়ামী দালালদের জন্য আইন একভাবে কাজ করে আর বিরোধী অন্যান্য রাজনৈতিক দলের জন্য দেশে আইন আরেকরকম। দেশে এখন বিরোধিতাকারীদের বিরুদ্ধে ফরমায়েশি রায় দেওয়া হচ্ছে। এমনকি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তি ড. মুহাম্মদ ইউনূসকেও দণ্ড দেয়া হলো। আওয়ামী লীগ বিএনপিকে নিষিদ্ধ করারও নাকি চিন্তা করছে!

গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, অন্যের জন্য গর্ত খুঁড়লে নিজেরও সেই গর্তে পড়ার সম্ভবনা থাকে। এইসব ফ্যাসিস্ট চিন্তা বাদ দিয়ে দেশে একতরফা নির্বাচন পরিহার করে গণতান্ত্রিক রূপান্তরের পথে এগুতে হলে দরকার একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন, দরকার একটি নতুন গণতান্ত্রিক বন্দোবস্ত। সেই পথেই এগানোর জন্য সরকারের প্রতি আমরা পুনরায় আহ্বান জানাই।

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ নির্বাচন কমিশনাররা বলছেন, নির্বাচন সুষ্ঠু দেখাতে না পারলে সারা দুনিয়া থেকে বাংলাদেশকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে হবে। ৭ জানুয়ারির তথাকথিত নির্বাচন ইতোমধ্যেই একটা তামাশার বিষয়ে পরিণত হয়েছে। এই নির্বাচনকে সুষ্ঠু দেখানোর চেষ্টা করে কোনো লাভ নেই। এটা ইতোমধ্যেই মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার একটি নাটক হিসেবে জনগণের কাছে এবং আন্তর্জাতিক বিশ্বে প্রতিভাত।

এই নির্বাচন বন্ধ করে সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে রাজনৈতিক সংকট সমাধান করে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনের ব্যবস্থা করার আহ্বান জানান গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা।

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, সরকারের ডামি নির্বাচনে দেখা যাচ্ছে এক নৌকা চারভাগে বিভক্ত। এই যে এতজন মিলে ভাগাভাগি; এই ভাগাভাগির মধ্যেও সহিংসতা থামাতে পারছেন না। সেজন্য আমরা সরকারকে বলছি, আমাদের সমাবেশ-মিছিল থামানোর দরকার নাই। আমাদের শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশ করতে দেন। আপনারা পুলিশ বাহিনীকে বলেন, যেখানে আওয়ামী লীগ নিজেরা সহিংসতা করছে সেখানে যান।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০২, ২০২৪
এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।