বরিশাল: ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেছেন, সীমান্তে অস্থিতিশলীতাই প্রমাণ করে ভারত কোনোদিনই আমাদের বন্ধু ছিল না।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) বিকেলে বরিশাল নগরের সদররোডস্থ টাউন হলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বরিশাল মহানগরের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি।
এ সময় চরমোনাই পীর আরও বলেন, বাংলাদেশ বহু আন্দোলন ও সংগ্রামের ফসল। বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনতার আগে ও পরে তাদের অধিকার আদায় ও ইনসাফের জন্য বহু রক্ত দিয়েছে। কিন্তু তারা কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য কখনো পূরণ হয়নি। মুক্তির লক্ষ্যে ৪৭ এ রক্ত দিয়েছে কিন্তু পেয়েছে পাকদের শোষণ, ৭১ আবার রক্ত দিয়েছে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচারের প্রতিষ্ঠার লক্ষে কিন্তু স্বাধীনতার ৫৩ বছরে এসেও সে লক্ষ্য আজও পূরণ হয়নি। এমনকি স্বাধীন এ দেশে জনগণ তাদের অধিকার আদায়ে রক্ত দিতে হয়েছে বহুবার। যে যখন ক্ষমতায় গেছে তখন সে লুটেরা, দখলবাজ,ফ্যাসিস্ট এর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। জাতি এগুলো আর চায় না।
তিনি আরও বলেন, ২৪ এর অভ্যুত্থান প্রমাণ করে কোনো ফ্যাসিস্ট খুনির খবরদারি জাতি মেনে নেয় না। তারা চায় একটি সুন্দর বাংলাদেশ। এ জন্য দরকার একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত। আর এর অন্যতম উপাদান হলো জাতীয় সরকার। জাতীয় সরকার গঠনের সবচেয়ে উত্তম ব্যবস্থা হলো “পি.আর পদ্ধতিতে নির্বাচন (সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি)। এ পদ্ধতিতে সব জনগণের প্রকৃত মতামত প্রতিফলিত করার মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থায় ভারসাম্য আনবে। বিশেষত একক দলীয় আধিপত্যবাদ এবং স্বৈরাচারী মনোভাবের বিরুদ্ধে পি আর পদ্ধতি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবন্ধক হিসেবে কাজ করবে। এটি রাজনৈতিক, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে সহায়তা করবে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বরিশাল মহানগরের সভাপতি প্রফেসর মো. লোকমান হাকীমের সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান আলোচকরে বক্তব্যে সিনিয়র নায়েবে আমির ও শায়খে চরমোনাই মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেন, বাংলাদেশ ভারতীয় আধিপত্যবাদকে পরোয়া করে না। ভারতের চোখে চোখ রেখে কথা হবে,কোচবফ নতজানু পররাষ্ট্র নীতি মেনে নেয় হবে না। জনগণ ভারতের জঘন্য কূটকৌশলকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে। বাংলাদেশে আবারও যদি কেউ দিল্লির দাদাদের মদদপুষ্ট হয়ে ক্ষমতায় আসার চেষ্টা করে তবে জাতি তাকে আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ করবে ইনশাআল্লাহ। ২৪ এর অভ্যুত্থান হাজারও ছাত্র জনতার ত্যাগের ফসল। বহু ছাত্রজনতা মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছে ও পঙ্গুত্ব বরণ করেছে। এ রক্ত আমরা বৃথা যেতে দিতে পারি না। আমরা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ২৪ এর অভ্যুত্থানে রাজপথে থাকা একটি দল হিসেবে বলছি দেশের স্বার্থ ব্যতিরেকে ভবিষ্যতেও যদি কেউ ভিন্ন পথে চলে আমরা তার বিষদাঁত উপড়ে ফেলবো।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বরিশাল মহানগরের সেক্রেটারি মাওলানা আবুল খায়েরের সঞ্চলনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় সভাপতি ইউসুফ আহমাদ মানসুর, জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ বরিশাল মহানগরের সভাপতি মাওলানা ওবায়দুর রহমান মাহাবুব, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বরিশাল মহানগরে সহ-সভাপতি মাওলানা সৈয়দ নাসির আহমেদ কাওসার, মাওলানা মুহাম্মাদ জাকারিয়া হামিদী ও মাওলানা মুহাম্মাদ লুৎফুর রহমান।
সম্মেলন শেষে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বরিশাল মহানগর কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে সভাপতি পদে প্রফেসর মো. লোকমান হাকীম, সহ-সভাপতি পদে মাওলানা নাছির আহমাদ কাওছার ও মাওলানা জাকারিয়া হামিদী এবং সেক্রেটারি পদে মাওলানা আবুল খায়েরকে নির্বাচিত করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১ ২০২৫
এমএস/জেএইচ