ঢাকা, শনিবার, ২৭ পৌষ ১৪৩১, ১১ জানুয়ারি ২০২৫, ১০ রজব ১৪৪৬

রাজনীতি

‘আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী দেশ চালালে লড়াই বাঁধবে’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০২৫
‘আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী দেশ চালালে লড়াই বাঁধবে’ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নাগরিক ঐক্যের মানববন্ধন কর্মসূচিতে সভাপতির বক্তব্য দেন মাহমুদুর রহমান মান্না | ছবি: ডিএইচ বাদল

ঢাকা: আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী দেশ চালানোর কথা ভাবলে লড়াই বাঁধবে বলে মন্তব্য করে গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম শীর্ষ নেতা ও নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, যদি এমন সিদ্ধান্ত হয়, যা জনগণের ওপর চাপ সৃষ্টি করবে, আমরা সেটা সাপোর্ট করব না, আমরা সেটা মানব না। মানুষের পেটে যদি ক্ষুধার আগুন থাকে, তাহলে তারা সংস্কারের কথা শুনবে না।

টিসিবির ট্রাক সেল বন্ধ, ৪৩ লাখ পরিবারের কার্ড বাতিল এবং শতাধিক পণ্যে শুল্ককর বাড়ানোর সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে শনিবার (১১ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।

মানববন্ধনে সভাপতির বক্তব্যে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আইএমএফ বাংলাদেশকে ৬৪০ কোটি ডলার বা ৬৭০ কোটি ডলার দেবে। টাকা দেবার বদলে তারা ১০০টা দ্রব্যের ওপরে ভ্যাট ট্যাক্স বাড়াতে বলেছে। আপনি ভালো লোক। আপনি আরও ভালো থাকেন। আমরা আপনাকে তো অসম্মান করছি না। কিন্তু, আমার পেটে যদি ক্ষুদায় আগুন জ্বলে তাহলে আমি বলব, আপনি এসমস্ত ট্যাক্স কেন তুলে দিয়েছেন? কাজের কাজ এখনো কী করতে পেরেছেন? ব্যাংকগুলো সব ঠিকমতো চলে? যেরকম চেক দেয়, সেরকম টাকা দিতে পারে? এখন পর্যন্ত ব্যাংকগুলো তার নিয়ম অনুযায়ী চলে? সবগুলো ব্যাংকে যথাযথ তারল্য আছে? আমরা সেজন্য ড. ইউনূসকে কাঠগড়ায় তুলছি না। অন্তর্বর্তী সরকারকে কাঠগড়ায় তুলছি না। কিন্তু, আমরা যে শুনলাম ড. ইউনূস আসলে দেশের চেহারা বদলে যাবে, সারা দুনিয়ায় তার এত বন্ধুবান্ধব, এত ভক্ত; ওরা সবাই টাকা দেবে আর আমাদের সংকট কেটে যাবে। এরকমভাবে এখনো পর্যন্ত বিদেশ থেকে আমাদের তো কোনো টাকা-পয়সা দেয়নি।  

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি আরও বলেন, সরকার এতই যোগ্য যে, থানা থেকে ওসি পালিয়ে যায় কিন্তু টেরই পায় না। আগের দিনে দেখেছি চোর পালাতে পারে না। আর এখন চোরের সরদার যারা, তারা পালিয়ে যায়। যারা লুটপাট করেছে, তাদের কাউকে ধরবার মতো বাস্তব কাজ সরকার করতে পারেনি। আপনি সেদিন বললেন, আমাদের প্রতিবেশীর সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক হয়ে আসছে। কিন্তু, আমরা সম্পর্ক স্বাভাবিক হতে দেখছি না। আপনি নতুন কোনো বন্ধু বানাতে পেরেছেন তাও দেখছি না। পৃথিবীর বুকে ড. ইউনূসের নাম অনেক বেশি। কিন্তু, বাংলাদেশের নাম অনেক বেড়েছে, তা তো দেখছি না।

গণতন্ত্র মঞ্চের এই নেতা বলেন, আমরা সংস্কারের কথা বলেছি এবং আমরা সংস্কার চাই। এই সরকার সংস্কারের কথা বলেছে। একটা অনির্বাচিত সরকার, বিশেষ একটা পরিস্থিতিতে গড়ে তোলা সরকার, একটা সরকার থেকে আরেকটা সরকার বানাতে যে সময় লাগে, সেই মধ্যবর্তী সময়ের জন্য তারা সরকার। এ সময়ের মধ্যে যতখানি যা করা দরকার, তারা সেটা করবে। কিন্তু, তারা গরিব মানুষের কল্যাণে আজ পর্যন্ত একটা কাজও করেনি।

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আমার দল ক্ষমতায় যাবে না। কিন্তু, তারপরও ভোট চাই। গণতন্ত্রের জন্য ভোট চাই। বিএনপি বড় দল, তারা তো কষ্ট স্বীকার করেছে। বিএনপি যদি রোডম্যাপের কথা বলে, তাহলে রোডম্যাপ দেবেন। ড. ইউনূস জাতির উদ্দেশ্যে যে ভাষণ দিয়েছেন, সেটাকে যদি পরিপূর্ণ রোডম্যাপ নাও বলা হয়, কিন্তু একটা পথনির্দেশিকা বলতে পারবেন। ড. ইউনূস বলেছেন, হয় ডিসেম্বর না হলে জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। এই কথা যেন ঠিক থাকে। আপনি (ড. ইউনূস) সব হিসাবনিকাশ করে বলেছেন। জনদুর্ভোগ বাড়ানোর কোনো পদক্ষেপ আর গ্রহণ করবেন না।

গণতন্ত্র মঞ্চের পক্ষ থেকে দেশের সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে তিনি বলেন, ড. ইউনূস এখন দেশ গঠনের দায়িত্ব নিয়েছেন। কিন্তু উনি একা পারবেন না। দেশ গঠন করার দায়িত্ব রাজনৈতিক দলগুলোকে নিতে হবে। যখন ভোট হবে, যে দল ক্ষমতায় যাবে তাদেরই তো; যেটুকু কাজ ড. ইউনূস করতে পারবেন না, সে কাজগুলো তাদের করতে হবে। সেই দলগুলো যদি অন্যান্য ধান্দায় লেগে যায়, তাহলে তো ভালো কোনো কাজই হবে না। ভালো দল, যারা জনগণের পক্ষে থেকে ভোট পেয়ে সরকার গঠন করতে পারবে, তারা দেশ বদলাতে পারবে। আর যে দল আগে থাকতে বদলাবার কর্মসূচি দিতে না পারবে, যে দলের ওপরে মানুষের ভরসা হবে না, তারা এখন কথা ভালো বলছে, কিন্তু ক্ষমতায় গেলে মানবে না। সে সমস্ত দলকে আপনারা (সাধারণ মানুষ) ভোট দেবেন না।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০২৫
জিসিজি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।