ঢাকা, বুধবার, ২৪ আশ্বিন ১৪৩১, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৫ রবিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

রাজশাহী-১ ও ৬ আসনে পুনর্নির্বাচনের দাবি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০২৪
রাজশাহী-১ ও ৬ আসনে পুনর্নির্বাচনের দাবি

রাজশাহী: ভোট কারচুপির অভিযোগ এনে নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে নতুন করে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন, রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) ও রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনের দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী।

বুধবার (১০ জানুয়ারি) দুপুরে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি জানান পরাজিত এই দুই প্রার্থী।

তারা হলেন, রাজশাহী-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম রাব্বানী ও রাজশাহী-৬ আসনের রাহেনুল হক।

সংবাদ সম্মেলনে গোলাম রাব্বানী দাবি করে বলেন, প্রকৃতপক্ষে আমিই ভোটে জয়যুক্ত হয়েছি। কিন্তু ভোটের ফলাফল পরিবর্তন করে আমাকে পরাজিত দেখানো হয়েছে। যার যথেষ্ট তথ্য-উপাত্ত আমার কাছে আছে। ভোটের দিন বাইরের পরিবেশ স্বাভাবিক থাকলেও গোদাগাড়ী-তানোরের বিভিন্ন ইউনিয়নে অদৃশ্য শক্তির ইশারায় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের সহযোগিতায় প্রিসাইডিং অফিসাররা ভোটের ফলাফল পরিবর্তন করেছেন। আমি এই ফলাফল প্রত্যাখ্যান করছি এবং পুনঃনির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি।

প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে রাব্বানী বলেন, কৌশলে প্রিসাইডিং অফিসাররা ভোটের ফলাফল পরিবর্তন করেছেন। তারা আমার এজেন্টদের কাছ থেকে ফলাফলের পূর্বেই ফলাফল শিটে স্বাক্ষর নিয়ে তাদের ভোট গণনার সময় কেন্দ্র থেকে বের করে দেন। ফলাফল স্থগিত করার জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর ভোটের দিনই একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করলেও রিটার্নিং কর্মকর্তা কোনো ব্যবস্থা নেননি।

তিনি আরও বলেন, কারচুপির মাধ্যমে নির্বাচিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরীর কর্মী-সমর্থকরা আমার কর্মী-সমর্থকদের ওপর নির্যাতন শুরু করেছেন। প্রকাশ্য দিবালোকে লাঞ্ছিত করছেন। মিথ্যা মামলা দিচ্ছেন, মুক্তিযোদ্ধা অফিসে নৌকার সমর্থকরা হামলা করে বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ আমার বেশ কিছু নেতাকর্মীকে আঘাত করেছেন এবং ওই অফিসের চেয়ার, টেবিল পুড়িয়ে দিয়েছেন। আমি এসব বন্ধের দাবি জানাচ্ছি।

রাজশাহী-৬ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক সংসদ সদস্য রাহেনুল হক রায়হান বলেন, ভোটে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। আমি সন্তুষ্ট নই, আমি মনে করি নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী কালো টাকা ব্যবহার করেছেন। নির্বাচনের পরও আমাদের কর্মীদের একের পর এক মারধরসহ বাড়িঘর পোড়ানো হচ্ছে। আমার কর্মীরা অনেকে এখন মেডিকেলে ভর্তি আছেন। যারা ভোটের কাজে নিয়োজিত ছিলেন পোলিং অফিসার থেকে শুরু করে প্রিজাইডিং অফিসার সবার আচরণ পক্ষপাতমূলক ছিল। আমি বিভিন্ন কেন্দ্রে দেখেছি কক্ষ বন্ধ রেখে তারা কাজ করছিলেন। আমি তাদের প্রশ্ন করলে তারা কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। তাই আমি এই আসনের ঘোষিত ফল প্রত্যাখ্যান করছি এবং নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি।

রাজশাহী-১ আসনে গোলাম রাব্বানী আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। তবে আসনটিতে মনোনয়ন পান বর্তমান এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী। তিনি ১ লাখ ৩৫ হাজার ৯২ ভোট পেয়ে টানা চতুর্থবারের মতো নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম রাব্বানী (কাঁচি) পেয়েছেন ৯২ হাজার ৪১৯ ভোট।

অন্যদিকে রাহেনুল হক রায়হানও আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। তবে আসনটিতে মনোনয়ন পান বর্তমান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে কাঁচি প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেন রায়হান। বেসরকারি ফলাফলে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম নৌকা প্রতীক নিয়ে ১ লাখ ১৫ হাজার ৯৯ ভোট পেয়ে টানা চতুর্থবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ নেতা রাহেনুল হক (কাঁচি) পেয়েছেন ৭৪ হাজার ২৭৮ ভোট।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০২৪
এসএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।