ঢাকা: বিএনপিকে পুনারায় আন্দোলন দাঁড় করানোর কোনো সুযোগ দিতে চায় না সরকার ও আওয়ামী লীগ। এ জন্য এখন থেকেই বিএনপির গতিবিধির উপর সংশ্লিষ্টদের সতর্ক দৃষ্টি রয়েছে।
গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি ও দলটির জোট সঙ্গীরা ওই নির্বাচন ঠেকানোর চেষ্টাও করে দলটি। নির্বাচনের আগে বিভিন্ন সহিংস ও নাশকতার ঘটনার প্রেক্ষিতে বিএনপির অনেক নেতা গ্রেফতার হন। সম্প্রতি বিএনপির প্রথম সারির কয়েক জন নেতা জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর পুনরায় সরকার বিরোধী আন্দোলন সংগঠিত করার কথা বলছেন তাদের কেউ কেউ। এই প্রেক্ষাপটে সরকার বিরোধী আন্দোলনের বিষয়টি রাজনীতিতে নতুন করে আলোচনায় এসেছে।
আওয়ামী লীগ ও সরকারের একাধিক সূত্র থেকে জানা যায়, বিএনপি যে আন্দোলনের কথা বলছে সেটা আওয়ামী লীগের নেতা ও মন্ত্রীরা প্রকাশ্যে গুরুত্ব না দিলেও সরকার এবং দলের নীতিনির্ধারকরা বিষয়টির উপর সতর্ক দৃষ্টি রেখেছেন। আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি রাজনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
নির্বাচন ঠেকানোর আন্দোলনে জনসমর্থন পেয়ে সহিংসতা, নাশকতা, অগ্নিসন্ত্রাসের পথে গেছে তারপরও নির্বাচন ঠেকাতে পারেনি। এতে দলটির কর্মীরা হতাশ হয়েছে এবং তাদের মনোবল ভেঙে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে সহসাই আন্দোলন দাঁড় করানো দলটির পক্ষে সম্ভব হবে না। এখন হতাশাগ্রস্ত কর্মীদের চাঙা করতে আন্দোলনের কথা বলছে। তারপরও বিএনপির গতিবিধির উপর সতর্ক দৃষ্টি রাখছে সরকার ও আওয়ামী লীগ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, এখন বিএনপি যে আন্দোলনের কথা বলে সেটা কর্মীদের মনে শক্তি জোগানোর জন্য। তারা কি আন্দোলন করতে পারে সেটা আমরা তো অতীতে দেখেছি। বিএনপির আন্দোলনের হুমকি নিয়ে আমরা কিছু ভাবছি না কারণ তারা আন্দোলন দাঁড় করাতে পারবে না। আর তাদের আন্দোলন বলতে যেটা বোঝা সেটা হচ্ছে আগুন দিয়ে জ্বালাও-পোড়াও, সন্ত্রাস, নাশকতা, মানুষ খুন করা। এ ধরণের পরিস্থিতির ব্যাপারে সরকার সতর্ক।
এদিকে আওয়ামী লীগ ও সরকারের ওই সূত্রগুলো আরও জানায়, আগামীতে বিএনপি কী করবে, কোন ধরনের কর্মসূচি দিতে পারে সে সব বিষয়ে সরকার ও আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা সতর্ক দৃষ্টি রাখছেন। কারণ সদ্য অনুষ্ঠিত নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সরকারের যাত্রা শুরু হয়েছে। এই নির্বাচন অনুষ্ঠান করা ছিলো আওয়ামী লীগ ও সরকারের জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জ।
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বাধা অতিক্রম করে সরকার নির্বাচন সম্পন্ন করতে পেরেছে এবং পুনরায় আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করেছে। এই প্রেক্ষাপটে নতুন করে আবার যাতে আন্দোলনের নামে বিএনপি এখনই কোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে না পারে সে বিষয়টিকে সরকার শুরু থেকেই গুরুত্ব দিয়ে আসছে। এ ব্যাপারে সরকার কঠোর অবস্থানে রয়েছে।
আন্দোলনের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি যাতে অন্য দিকে যেতে না পারে বা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে না যায় সে জন্য শুরু থেকেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে সরকার। সহসাই আন্দোলন বা আন্দোলনকে কেন্দ্র অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির কোনো সুযোগ দেবে না। সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে আন্দোলনের কর্মসূচির নামে আবারও সহিংসতার পথে যেতে পারে বিএনপি। তাই শুরু থেকেই তা দমন করার প্রস্তুতি রয়েছে বলেও ওই সূত্রগুলো জানায়।
মঙ্গলবার(২০ ফেব্রুয়ারি) সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিএনপির আন্দোলন প্রসঙ্গে বলেন, বাধা দেওয়ার মত সহিংস তৎপরতা, সন্ত্রাস, অগ্নি সন্ত্রাস এসব উপাদান যদি আন্দোলনে যুক্ত হয় তাহলে বাধা আসবে। তারা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি দিলে আমরা বাধা দিব কেন?
বাংলাদেশ সময় ১১৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২৪
এসকে/এমএম