সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার পাঁচলিয়া হাট-বাজারের ইজারা না পেয়েও জোরপূর্বক টোল আদায় ও খাজনার টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আরাফাত রহমান নামে এক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় ইজারাদার মো. আব্দুল মান্নান বাদী হয়ে সলঙ্গা থানায় আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরাফাত রহমানসহ ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ১৫/২০ জনের বিরুদ্ধে সিরাজগঞ্জ দ্রুত বিচার আদালতে মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুর রহমান দুলাল বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গত বুধবার দ্রুত বিচার আদালতে মামলাটি দায়ের হয়। বিচারক মোছা. নাহিদ রহমান শরীফ মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে তদন্তের নির্দেশ দেন।
এদিকে বেপরোয়া আরাফাত রহমানের নেতৃত্বে তার সহযোগীরা প্রকৃত ইজারাদারের প্রতিনিধি থানা স্বেচ্ছাসেবকলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাফিজুল ইসলামকে বেধড়ক পিটিয়েছে। আহত হাফিজুল সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ১৪৩১ বাংলা সনে দ্বিতীয় বারের মতো পাঁচলিয়া হাট-বাজারের ইজারা পান আব্দুল মান্নান। মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সকালে হাটে অবস্থান করছিলেন ইজারাদার ও তার প্রতিনিধিরা। এ সময় আরাফাত রহমানের নেতৃত্বে প্রায় ৩০/৩৫ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এসে ইজারাদার আব্দুল মান্নানের কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে টোল আদায়কারীদের কাছ থেকে জোর করে ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। এরপর হাটের দোকানিদের কাছ থেকে খাজনা আদায় করে। বিষয়টি উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ফোনে জানালে তিনি হাটে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেন।
ইজারাদার আব্দুল মান্নান বলেন, আরাফাত রহমান নিজেকে এলাকার সর্বেসর্বা বলে ঘোষণা করেন। হাটের ইজারা না পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে আমার কাছ থেকে চাঁদা দাবি করেন। পুলিশের কাছে সবকিছু বলে দেওয়ায় ঘটনার দিন রাতে জিল্লার নামে একজনকে চড় থাপ্পড় মারেন আরাফাত। বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বিকেলে হাটের স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা হাফিজুলকে বেধড়ক পিটিয়ে জখম করেন।
সলঙ্গা থানার ওসি মো. এনামুল হক জানান, ১৬ এপ্রিল পাঁচলিয়া হাটে ইজারা নিয়ে ঝামেলা হয়েছিল। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এ বিষয়ে আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে। তিনি আরও বলেন, হাফিজুল ইসলামকে মারধর করা হয়েছে শুনেছি। তবে এখন পর্যন্ত তিনি থানায় কোনো অভিযোগ দেননি। অভিযোগ দিলে পরবর্তীতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আরাফাত রহমান বলেন, হাটে চাঁদা দাবির অভিযোগটি মিথ্যা। এ বিষয়ে থানায় মামলা হয়েছে শুনেছি। ইজারাদার বাইরের গ্রাম থেকে লোক এনে টোল আদায় করে, পাঁচলিয়া গ্রামের লোকজন এটার প্রতিবাদ করতে গেলে ঝামেলা হয়। হাফিজুল ইসলামকে মারধরের বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, হালকা-পাতলা মারধর করা হয়েছে তবে সেটা আমার নেতৃত্বে নয়।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০২৪
আরএ