ঢাকা: আওয়ামী লীগ এখন শূন্য মুড়ির টিন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব আ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
সোমবার (৬ মে) বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, জাতীয় নির্বাহী কমিটির যুগ্ম মহাসচিব হাবীব-উন-নবী খান সোহেল ও সহ-স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূইয়া জুয়েলসহ সব রাজবন্দির ফরমায়েশি সাজা বাতিল, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করে।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধনের আয়োজন করে হাবিব-উন-নবী খান সোহেল মুক্তি পরিষদ।
মানববন্ধনে রুহুল কবির রিজভী বলেন, বারবার জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা, জনগণের মালিকানা ছিনিয়ে নেওয়ার কারণে তাদের (আওয়ামী লীগ) জনসমর্থন নেই। কয়েকজন সুবিধাবাদী লোক, কয়েকজন ঋণখেলাপি মানুষ, কয়েকজন বাজার সিন্ডিকেটের লোকজন আওয়ামী লীগকে ঘিরে আছে। এরা তো গণশত্রু। যারা বাজার সিন্ডিকেট করে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বৃদ্ধি করেছে, যারা ব্যাংকের টাকা লুট করে, নিয়মবির্হিভূতভাবে ঋণ নিয়ে বিদেশে টাকা পাচার করেছে, যারা সন্ত্রাসী করে অন্য জমি-জায়গা দখল করে এদের তো জনগণ পছন্দ করে না। আর এ লোকগুলোই যদি আওয়ামী লীগের পাশে থাকে, প্রধানমন্ত্রীর পাশে থাকে, সরকারের পাশে থাকে তাহলে তো জনগণ থাকবে না। আওয়ামী লীগ এখন শূন্য মুড়ির টিন। এ কারণে আওয়ামী লীগের নেতারা ঝনঝন করে কথা বলছে।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের একজন সাধারণ সম্পাদক আছেন, প্রায় সময়ই তিনি বকবক করেন, খুব কথা বলেন। বিএনপির জন্য ওনার খুব মায়া কান্না। বিএনপির ভাবনায় উনি ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। ওবায়দুল সাহেবের বক্তব্যে এটা মনে হয়। মুরগির ছানার নিরাপত্তার জন্য যেমন চিল মায়াকান্না করে, কুমির যেমন কান্নাকাটি করে তেমন কুম্ভিরাশ্রু ওবায়দুল কাদেরের চোখ দিয়ে ক্রমাগত পড়ছে। বিএনপি নাকি দুর্বল হয়ে গেছে, এমন আওয়াজ তিনি মাঝে মাঝে দেন। আরো অনেক কথা বলেন, বিএনপি ক্লান্ত, বিএনপি হতাশ, বিএনপির নেতারা বিদেশ চলে যাচ্ছে। তারা (আওয়ামী লীগ) যে ভেতর থেকে ধ্বসে গেছে, ভেঙে গেছে এটা চাপা দেওয়ার জন্যই তিনি এ কথাগুলো বলেন।
উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপির আত্মীয়-স্বজনকে না দাঁড়াতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্র থেকে নিষেধ করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, কিন্তু একজনও কথা শুনেনি। সবাই দাঁড়িয়েছে। তারা বলছে, প্রধানমন্ত্রীরই ২০-২৫ জন আত্মীয়-স্বজন উপজেলা নির্বাচনে দাঁড়িয়েছে। তাহলে আমরা বাদ যাবো কেন? ওবায়দুল কাদের সাহেব, আপনার দল যে শূন্য টিনের বাক্স হয়ে গেছে, সেটা আগে ভরুন, তারপর বিএনপির কথা বলুন। বিএনপি দুর্বল হয়েছে না সবল আছে এটা তো টের পান প্রতি মুহূর্তে। আপনার আওয়ামী লীগ ভাঙা কলসি। তাই আপনাদের আওয়াজ বেশি হচ্ছে।
বিএনপির এ নেতা আরও বলেন, আজকে গণতান্ত্রিক শাসন নেই বলেই, বৈধ সংসদ নেই বলেই শেখ হাসিনা মানুষের গলায় পা দিয়ে, টুটি টিপে ধরে বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি থেকে ট্যাক্স নিচ্ছেন। অনেকে কষ্টের মধ্যে দিন যাপন করছেন। আর নিম্ন আয়ের মানুষ তিনবেলা কেউ খেতে পারছেন না। একদিকে মূল্যস্ফীতির চাপ, আরেকদিকে ক্রমাগতভাবে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছেই হু হু করে।
মিথ্যা সাক্ষী দিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের জেলে রাখা হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, একেবারে সাজানো মামলা দিয়ে গণতন্ত্রের মা আমাদের অসুস্থ নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দি করে রাখা হয়েছে। যে মামলার সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই। এমনকি তার উন্নত চিকিৎসার সুযোগও দেওয়া হচ্ছে না। আজকে সাজা দিয়ে দেশনায়ক তারেক রহমানকে দেশের বাইরে রাখা হয়েছে।
হাবিব-উন-নবী খান সোহেল মুক্তি পরিষদের আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম নোমানের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল ও সহ-অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৩ ঘণ্টা, মে ৬, ২০২৪
এসসি/জেএইচ